Image description

রিও ডি জেনিরোর তরঙ্গের নীচে ৮০ বছরেরও বেশি সময় লুকিয়ে থাকার পরে, নাৎসি জার্মানিদের টর্পেডোর আঘাতে বিধস্ত একটি ব্রাজিলিয়ান সৈন্য পরিবহন জাহাজের সন্ধান পেয়েছেন ব্রাজিলের নৌবাহিনী। ভাইটাল ডি অলিভেইরার ধ্বংসাবশেষ প্রাথমিকভাবে ২০১১ সালে আবিষ্কৃত হয়েছিল। এটি প্রথম নজরে আসে দুই ভাই জোসে লুইজ এবং এভারালডো পোপারমেয়ার মেরিগুয়ের।

সম্প্রতি জুলাইয়ে ব্রাজিলের নৌবাহিনী ব্রাজিলের ও গ্লোবো সংবাদপত্রকে বলেছিল যে উপকূল থেকে ৪৫ কিলোমিটার দূরে থাকা জাহাজের ধ্বংসাবশেষটি আসলে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়কার কিনা তা প্রথমে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। ধ্বংসাবশেষের সঠিক অবস্থান জানার পর একটি বৈজ্ঞানিক অভিযানের অংশ হিসাবে, নৌবাহিনী আনুষ্ঠানিকভাবে সোনার ইমেজিং ব্যবহার করে ২০১১ সালে জোসে এবং এভারালডোর আবিষ্কারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

একজন ব্রাজিলিয়ান ডকুমেন্টারি চলচ্চিত্র নির্মাতা রোডলফো সিলোট যিনি প্রাথমিক আবিষ্কারটি সম্পর্কে বলার চেষ্টা করেছিলেন তিনি সিএনএনকে একটি ইমেইলে বলেছেন যে, ‘এক দশক ধরে আমি এই গল্পটি বলার চেষ্টা করেছি এবং এখনও পর্যন্ত কেউ আগ্রহ দেখায়নি।’

ভাইটাল ডি অলিভেরা ছিল একটি বেসামরিক জাহাজ, যা ১৯১০ সালে নির্মিত হয়। ব্রাজিল যখন মিত্রশক্তির পাশে দাঁড়িয়ে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে প্রবেশ করেছিল তখন এটি একটি সহায়ক নৌ নৌযান হিসাবে সজ্জিত হয়েছিল। এটি ব্রাজিলের উপকূল বরাবর সরবরাহ, নাবিক এবং সৈন্য পরিবহন করছিল যখন ১৯৪৪ সালের ১৯ জুন মধ্যরাতের ঠিক আগে একটি জার্মান ইউ-বোট টর্পেডো দিয়ে এতে আঘাত হানে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ব্রাজিলই একমাত্র দক্ষিণ আমেরিকার দেশ যারা বিদেশে সৈন্য পাঠায়। আটলান্টিকের যুদ্ধ জুড়ে, জার্মান ইউ-বোটগুলো ব্রাজিলের উপকূলে টহল দিয়েছিল। প্রায় ৩৪টি জাহাজকে তারা ধ্বংস করে এবং ১০৮১ জনকে হত্যা করে।  

নৌ ইতিহাসবিদ রবার্তো স্যান্ডারের মতে, যিনি লিখেছেন যে ভাইটাল ডি অলিভেরা ডুবে যাওয়া ছিল নৌবাহিনীর ‘সবচেয়ে বড় ক্ষতি’। স্যান্ডার ২০০৭  সালে লিখেছিলেন, ‘ব্রাজিলের বেশিরভাগ জাহাজ সমুদ্রের তলদেশে আজো রহস্য হিসেবেই রয়ে গেছে।’

নৌবাহিনী তার প্রেস বিবৃতিতে বলেছে যে ধ্বংসাবশেষটি ‘মাল্টি-বিম এবং সাইড-স্ক্যানিং সোনার ব্যবহার করে’ পাওয়া গেছে। নৌবাহিনীর প্রেস স্টেটমেন্টের পাশাপাশি প্রকাশিত সাইড-স্ক্যানিং সোনার ছবিতে, ভাইটাল ডি অলিভেইরার অবয়ব স্পষ্টভাবে দেখতে পাওয়া যায়।

সূত্র: সিএনএন