১৩ জানুয়ারি রাত ছিল ২০-দলীয় বিরোধী জোটপ্রধান ও বিএনপি সভানেত্রী খালেদা জিয়ার নিজ কার্যালয়ে অবরুদ্ধ অবস্থার দশম দিবস। ওইদিন ছিল তাকে আটকে রেখে ঢাকায় জনসভা করতে না দেওয়ার প্রতিবাদে খালেদা ঘোষিত অনির্দিষ্টকালের জন্য দেশব্যাপী অবরোধ কর্মসূচির সপ্তম দিবস। সপ্তাহজুড়ে চলতে থাকা অবরোধ কর্মসূচি ঘিরে যতই দিন যাচ্ছে, ততই বাড়ছে হতাহতের সংখ্যা। ৬ জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া অবরোধ কর্মসূচিতে ইতিমধ্যে প্রাণহানি ঘটেছে ১৩ জনের, আহত হয়েছে ৯ শতাধিক। অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে প্রায় ৫০০টি। সারা দেশে এ পর্যন্ত মামলা করা হয়েছে ২৮০টির বেশি। আসামি করা হয়েছে কমপক্ষে ২০ হাজার জ্ঞাত-অজ্ঞাত ব্যক্তিকে। গ্রেফতার করা হয়েছে প্রায় দুই হাজার। আরও ২০০ নেতাকে ধরতে শুরু হয়েছে সাঁড়াশি অভিযান। সপ্তাহজুড়ে অবরোধ কর্মসূচি চলাকালে অগ্নিসংযোগ, ককটেল-বোমা বিস্ফোরণ, রেলে নাশকতা, মামলা-হামলা ও গ্রেপ্তার, হয়রানির সংখ্যা বাড়ছে পাল্লা দিয়ে। রাজধানীসহ সারা দেশের মানুষ এখন পেট্রোলবোমার আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। রেললাইনের ফিশপ্লেট খুলে বিচ্ছিন্ন বা বিলম্বিত হচ্ছে ট্রেন যাতায়াত। এক সপ্তাহে এ ধরনের নাশকতার ঘটনা ঘটেছে কমপক্ষে ১০টি। স্পর্শকাতর ২২ জেলায় মোতায়েন করা হয়েছে ৫৯ প্লাটুন বিজিবি।
অবরোধ চলাকালীন বিভিন্ন মামলায় এ পর্যন্ত বিএনপি ও জামায়াত জোটের নেতাকর্মী-সমর্থকসহ নামজারি করে যাদের আসামি করা হয়েছে, তাদের মধ্যে গ্রেপ্তার হয়েছেন বিএনপির মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলাম, ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরীসহ ২ হাজারের বেশি নেতাকর্মী। অবরোধের অছিলায় পুলিশ সাধারণ মানুষকে গ্রেপ্তার ও হয়রানি করছে। চলছে পুলিশের গ্রেপ্তারবাণিজ্য।
একের পর এক জাতীয় পর্যায়ের বিএনপি নেতাদের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে জেলাওয়ারি ওই নেতাদের এলাকায় সকাল-সন্ধ্যা হরতাল পালিত হয়েছে। সর্বশেষ ১২ জানুয়ারি ঢাকার আশপাশের ১৫ জেলায় হরতাল পালিত হয়েছে। পুলিশি দমনব্যবস্থায় সরকার ৫ জানুয়ারি বিরোধী জোটের ঘোষণা মোতাবেক ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ পালন বানচাল করতে সক্ষম হয়েছে বটে কিন্তু কার্যত ‘গণতন্ত্র হত্যা’র সহিংস প্রতিরোধ ও সরব প্রতিবাদ ছড়িয়ে পড়েছে সারা দেশে। দাবি, ‘অবৈধ’ সরকার হটিয়ে অবিলম্বে নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধানে আরেকটা ‘সাচ্চা’ নির্বাচন।
অন্যদিকে ৫ জানুয়ারি ঢাকায় জারি করা ১৪৪ ধারার তোয়াক্কা না করেই ক্ষমতাসীন দল ও অঙ্গদল মিছিল করে উদযাপন করেছে ‘গণতন্ত্রের বিজয় দিবস’। দেশব্যাপী অবরোধ ও ঢাকাসহ আশপাশের জেলাগুলোয় হরতালের মধ্যে ঢাকায় ১২ জানুয়ারি পুলিশের ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার করিয়ে জনসভা করেছেন আওয়ামি লীগ ও সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা। খালেদা জিয়াকে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের নেত্রী আখ্যা দিয়ে এবং ঘরে ফেরার পরামর্শ দিয়ে কটাক্ষ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জনসভায় বলেছেন, ‘ঘর থুইয়া অফিসে কেন? পুরনো অভ্যাস। ঘর ছেড়ে পালানো ওনার পুরনো অভ্যাস। স্কুলে পড়া অবস্থায় উনি সিনেমা করার জন্য বাড়িছাড়া হয়েছিলেন। এরপর জিয়ার সঙ্গে পালিয়ে চলে যান ময়মনসিংহে। মুক্তিযুদ্ধের সময় চলে গেলেন পাকিস্তানি সেনা কর্মকর্তা আসলাম বেগের সঙ্গে। ১৯৮৫ সালে পালালেন পূর্বাণী হোটেলে। ’৮৬ সালে সিপাহি-জনতার বিপ্লবের কথা বলে ৩ দিন নিরুদ্দেশ। বিডিআরের ঘটনার ২ ঘণ্টা আগেই উনি সেনানিবাসের বাড়ি ছেড়ে চলে গেলেন আত্মগোপনে। এর ধারাবাহিকতায় এবার উনি খাট, সোফা, গদি নিয়ে উঠলেন গুলশান কার্যালয়ে। পত্রিকায় বেরিয়েছে, কয়েক দফা উনি খাট পরিবর্তন করেছেন। নিজে পালাবেন আর বলবেন অবরুদ্ধ! দেশ এখন এগিয়ে যাচ্ছে। কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারি অ্যাসোসিয়েশন (সিপিএ) ও ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়নে (আইপিইউ) জয়ী হয়েছি। এ নির্বাচন যদি বৈধ না হতো, তাহলে এত দেশের ভোট বাংলাদেশ পেত না। মন্দা মোকাবিলা করে অর্থনৈতিক গতি ঠিক রাখতে পেরেছে বিশ্বের এমন ৫টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। আমাদের প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ২ শতাংশ। মুদ্রাস্ফীতি ১২-১৩ থেকে নামিয়ে ৬ দশমিক ১ শতাংশে নিয়ে এসেছি। দ্রব্যমূল্য ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখতে পেরেছি। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতুর কাজ শুরু করেছি। সরকার যখন সফলতার সঙ্গে দেশ পরিচালনা করছেÑ এমন সময় বিএনপি নেত্রীর মাথায় ভূত চাপল, ৫ জানুয়ারি থেকে আন্দোলন। কিসের আন্দোলন? জামায়াতকে সঙ্গে নিয়ে জঙ্গিবাদীদের নিয়ে জঙ্গির নেত্রী ও সন্ত্রাসের নেত্রী মানুষ খুন করেন। বিএনপি নেত্রীর আগুনে মানুষ পুড়ছে।’
দেশের জনগণকে বিএনপির ‘অবৈধ’ অবরোধ প্রতিরোধে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘পাড়ায়, মহল্লায় কারা বোমা বানায় আর কারা বোমা মারেÑ তাদের ধরে পুলিশে দেবেন। শান্তি বিনষ্ট হতে দেবেন না। আমাদের যা যা করা দরকার, আমরা তা করব।’
সহিংস রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ছে দেশের অর্থনীতি। বিরাজমান এ সংকট সমাধানে সরকার ও বিরোধীপক্ষের মধ্যে সমঝোতার আহ্বান জানিয়েছেন দেশের শীর্ষস্থানীয় অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীরা। তারা সরকার ও বিরোধীপক্ষÑ উভয়কে ছাড় দিয়ে সংলাপের মাধ্যমে রাজনৈতিক সমস্যার সমাধানে আসারও অনুরোধ জানিয়েছেন। বলেছেন, মন্দা অর্থনীতিকে বাঁচাতে রাজনৈতিক দলগুলোকে বিনাশী কর্মকা- বন্ধ করতে হবে এবং সরকারের পক্ষ থেকে বিরোধী দলকে রাজনীতি ও গণতন্ত্র চর্চার অধিকার দিতে হবে। না হলে দীর্ঘমেয়াদে সংকটময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন তারা। এছাড়া উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন ও কূটনৈতিক মহল। বিবৃতির মাধ্যমে তারা বিএনপি চেয়ারপারসনকে গুলশানের কার্যালয়ের অবরুদ্ধে করে রাখা এবং বিএনপির সিনিয়র নেতাদের গ্রেপ্তারে সরকারি সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। একই সঙ্গে হরতাল-অবরোধের নামে হত্যা, জ্বালাওপোড়াও, ভাংচুরের ঘটনারও নিন্দা জানিয়েছেন।
৯ জানুয়ারি নিউইয়র্কভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক ব্রাড আডামস এক বিবৃতিতে বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকারের শক্তির অপপ্রয়োগ, বিরোধী দল দমনে গ্রেপ্তার, গণমাধ্যমের ওপর অবৈধ নিয়ন্ত্রণ আরোপ ও সেন্সরশিপ, জনগণের মত দমনের বিষয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। অনাকাক্সিক্ষত এসব ঘটনায় মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে এবং আইনের সঠিক প্রয়োগ হচ্ছে না।’ আর্থিক খাত ও অর্থনীতি নিয়ে কাজ করা প্যারিসভিত্তিক ফিমালাক এসএ এবং নিউইয়র্কভিত্তিক হার্টস করপোরেশনের যৌথ মালিকানায় পরিচালিত শতবর্ষের পুরনো আন্তর্জাতিক সংস্থা ‘ফিচ রেটিং’ও এক বিবৃতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছে, জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে বাংলাদেশে সংঘটিত কর্মকা- দেশটির অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। বিদেশি বিনিয়োগ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়ন কর্মকা-ে প্রভাবিত হবে। এর পাশাপাশি বাংলাদেশের বিদেশি মুদ্রা অর্জনের অন্যতম তৈরি পোশাক খাতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।’ সংস্থাটি বলছে, ‘বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক অচলাবস্থা আগের বছরের জাতীয় সংসদ নির্বাচন কেন্দ্র করেই হচ্ছে। ওই বছর রাজনৈতিক সহিংসতায় ৩০০ জনের বেশি মানুষ প্রাণ হারায়। ২০১৫ সালে আবার একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তা খুবই উদ্বেগের। কেননা এতে বাংলাদেশ বিদেশি বিনিয়োগ হারাবে, অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক নেতাদের উচিত দেশের স্বার্থে, ইতিবাচক অর্থনীতির স্বার্থে সহিংসতা বন্ধ এবং রাজনৈতিক অচলাবস্থার নিরসন করা।’
একই দিনে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এক বিবৃতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে গত কয়েকদিনে বাংলাদেশে নিহত ৬ জনের পূর্ণাঙ্গ তদন্ত প্রতিবেদন চেয়েছে। বলেছে, বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের প্রতি তাদের প্রদত্ত প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে হবে। ন্যায্য অধিকার চর্চার কারণে কাউকে স্বেচ্ছাচারী গ্রেপ্তার বা হয়রানি করা কিংবা হুমকি-ধমকি দেওয়া হবে না, তা বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষকে নিশ্চিত করতে হবে।
এর আগে ৮ জানুয়ারি ঢাকায় নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট গিবসন বলেছেন, সম্প্রতি বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক ঘটনায় আমি উদ্বিগ্ন, মর্মাহত, ব্যথিত ও চিন্তিত। চলমান ঘটনা মানবাধিকার ও গণতন্ত্রের জন্য ইতিবাচক নয়। বাংলাদেশের রাজনীতিবিদদের উচিত অবিলম্বে নিজেদের মধ্যে ইতিবাচক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করা।
ঢাকার দূতাবাস মহলে অন্যরাও তৎপর। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক কর্মকা- সম্পর্কে আগাম তথ্য সংগ্রহে ব্যস্ত সময় কাটছে বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের। এ কারণে বড়দিন উপলক্ষ করে যারা নিজেদের দেশে গিয়েছিলেন, তারাও ফিরে এসেছেন ছুটি সংক্ষিপ্ত করে। বিএনপির মতো বড় দলের প্রধানকে অবরুদ্ধ করে রাখা ও সংবাদ প্রচারে গণমাধ্যমের ওপর বিধি-নিষেধ আরোপ পরিস্থিতিকে জটিল করেছে বলে মনে করছেন কূটনীতিক মহল। সরেজমিন বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে প্রতিনিয়ত ঢাকার মিশনগুলো তথ্য সংগ্রহ করে নিজ দেশের পররাষ্ট্র দপ্তরকে অবহিত করছে। কূটনীতিকরা এ তথ্য সংগ্রহের জন্য সরকার ও বিএনপি দু’পক্ষের সঙ্গেই যোগাযোগ রক্ষা করে চলছেন।
পশ্চিমা কূটনীতিকরা বরাবর বলে আসছিলেন, ৫ জানুয়ারির নির্বাচন নিয়ে তাদের দেশের প্রশ্ন আছে। এতে ক্ষমতা হস্তান্তর পর্ব প্রতিনিধিত্বমূলক হয়নি বলে মনে করা হয়। তাদের ওই অবস্থান গত এক বছরে বদলায়নি। পরবর্তী নির্বাচন নিয়ে বাংলাদেশের জনগণ সিদ্ধান্ত নেবে বলে বিভিন্ন সময় মন্তব্য করেন তারা। তাদের মধ্যে অনেক কূটনীতিকের মতে, গত বছর ৫ জানুয়ারি সংবিধান রক্ষার নির্বাচন ছিল বলে আরেকটা নির্বাচনের কথা দিয়ে নির্বাচন-পরবর্তী সমাধানের পথ খোলা রাখার বিষয়ে শেখ হাসিনার সরকারই তার আগের অবস্থান থেকে সরে এসেছে। এটি বাংলাদেশের টেকসই গণতান্ত্রিক ধারার পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এছাড়া বর্তমান বিশ্বায়নের যুগে প্রতিটি দেশই একে অন্যের সঙ্গে সংযুক্ত। ফলে বাংলাদেশের সঙ্গে অন্য দেশগুলোর নানা স্বার্থের সম্পর্ক রয়েছে। বাংলাদেশ ভৌগোলিকভাবে এমন অবস্থানে রয়েছেÑ যা অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক দৃষ্টিকোণের বাইরেও ভূরাজনৈতিক ভারসাম্যের একটি নিয়ামক। তাই দ্বিপক্ষীয় ও বহুপক্ষীয়Ñ উভয় তাগিদে অবরোধের শুরুতে ৬ জানুয়ারি দুপুরেই বাংলাদেশে উদ্ভূত রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও পরবর্তী নির্বাচন নিয়ে অস্ট্রেলীয় হাইকমিশনারের বাসভবনে পশ্চিমা একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাপান, ডেনমার্ক, কানাডা, নেদারল্যান্ডস, নরওয়ে, জার্মানি, দক্ষিণ কোরিয়া ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনাররা অংশ নেন। এছাড়া জাতিসংঘ উন্নয়ন প্রকল্প বাংলাদেশের প্রধানও এতে উপস্থিত ছিলেন। এর আগে ৫ জানুয়ারি ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলো বৈঠকে মিলিত হয়। এরই মধ্যে কেউ কেউ নিজ দেশের নাগরিকদের বাংলাদেশ সফরের ক্ষেত্রে সতর্কবার্তা দিয়েছেন। বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও চলমান সহিংসতা কারও কাম্য নয় এবং নিজ নিজ দেশের বাণিজ্যিক স্বার্থেই আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও উদ্ভূত পরিস্থিতির একটি টেকসই সমাধান প্রয়োজন বলে মনে করছেন রাষ্ট্রদূতরা। তারা দেশের সব রাজনৈতিক দলগুলোকে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধানে উৎসাহিত করে প্রতি পাঁচ বছর পর নির্বাচনকেন্দ্রিক ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ ও সহিংসতার চক্র থেকে বেরিয়ে আসতে সহযোগিতাদানে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন বলে জানা যায়।
বুদ্ধিজীবীদের বিলাপ, ক্ষমতার দ্বৈরথ যুদ্ধে কৃত নিশ্চয় উভয়পক্ষ। আপসের সম্ভাবনা নেই, এসপার-ওসপার করে ফেলতে বদ্ধপরিকর তারা। কিন্তু কোনো পক্ষকেই নির্মূল করা সম্ভব নয়। ফল হবে দুর্বলতর পক্ষকে বাস্তবিক জঙ্গিবাদের পথে ঠেলে দেওয়া। টেলিভিশন টক শোতে কেউ কেউ সম্ভাব্য সামরিক হস্তক্ষেপের কথাও তুলেছেন। গণতন্ত্রের তাত্ত্বিকদের আক্ষেপ, দেশে গণ আছে, তন্ত্র নেই। বিশ্ব ইজতেমা ফেরত গণমানুষের কথাÑ বিলাপে কী ফল? খোদাতাআলার যেমন ইচ্ছা, তেমন হবে। ধর্ম নিরপেক্ষতাবাদীরা বলছেন, দলে-বলে তারাই ভারী, তাদের ইচ্ছাতেই দেশ চলবে। তবে সবারই সংশয়, সহজে সংকট কাটবে না।
লেখক : সিনিয়র সাংবাদিক, কলামনিস্ট
উৎসঃ আমাদের সময়
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন