বেফাঁস কথার ফুলকি
20 November 2014, Thursday
সংবাদ ভাষ্যকার জাহাঙ্গীর আলম আনসারী ঢাকা থেকে একটি অনলাইন প্রতিবেদনে (শীর্ষ নিউজ, ১৫ নভেম্বর) মন্তব্য করেছেন, সরকারের ভেতর থেকে একের পর এক বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে চলছে। ওই মন্তব্য প্রতিবেদনের সার কথা, মন্ত্রী-উপদেষ্টাদের বেফাঁস টীকাটিপ্পনির বিস্ফোরণ সরকার কোনোভাবেই থামাতে পারছে না। মুক্তিযুদ্ধকালীন সরকারপ্রধান তাজউদ্দীন আহমদের মেয়ে শারমিন আহমদ আর মুক্তিযুদ্ধের সামরিক উপপ্রধান এ কে খন্দকার বইবোমা ফাটিয়েছেন। সাবেক মন্ত্রী লতিফ সিদ্দিকী মার্কিন মুল্লুকে বসে ধর্মবিদ্বেষী মন্তব্য করে মোমিন মুসলমানদের ক্ষেপিয়েছেন অবশ্য সে কারণেই প্রতীচ্যে রাজনৈতিক আশ্রয় লাভের অসিলায় ডবল মার্ক পেয়েছেন। তারপর এবার ৫ জানুয়ারির নির্বাচন নিয়ে মহাবিস্ফোরণ ঘটালেন প্রধানমন্ত্রীর রাজনীতিবিষয়ক উপদেষ্টা এইচটি ইমাম। ১২ নভেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র টিএসসিতে ছাত্রলীগের এক সমাবেশে ৫ জানুয়ারির নির্বাচন প্রসঙ্গে এইচটি ইমাম বলেছেন, 'আমি প্রত্যেকটি উপজেলায় কথা বলেছি, সব জায়গায় আমাদের রিক্রুটদের সঙ্গে কথা বলে তাদের দিয়ে মোবাইলকোর্ট বসিয়ে আমরা নির্বাচন করেছি। তারা আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছে, বুক পেতে দিয়েছে।'
তার এ বক্তব্যের পর ৫ জানুয়ারির নির্বাচন ও সরকারের বৈধতার বিষয়টি আরও বেশি প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে। আর এ নিয়ে আবারও বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছে সরকার। জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী তার এ বক্তব্যে প্রচন্ড ক্ষুব্ধ হয়েছেন। আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত ১৪ নভেম্বর এক অনুষ্ঠানে এইচটি ইমামকে কথাবার্তায় সতর্ক হতে বলেছেন।
গুজব রয়েছে নির্বাচনের বৈধতা নিয়ে আবারও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমালোচনার মুখে পড়তে পারেন এমন আশঙ্কা থেকে প্রধানমন্ত্রী তার যুক্তরাজ্য ও ইতালি সফর বাতিল করেছেন। যদিও সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর অসুস্থতার কারণে সফর বাতিল হয়েছে। ওদিকে এইচটি ইমামের বড়াইয়ের একদিন আগে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতও ঘুষকে বৈধ বলে আরেক বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন। কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও বিজিএমইএ'র সমঝোতা স্মারক সই উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী বলেছেন, আগে ঋণ পেতে অনেক টাকা খরচ করতে হতো। আমাদের দেশে এখন ড্রাইভিং লাইসেন্স করতেও অতিরিক্ত টাকা খরচ করতে হয়। আমি ৪০ বছর আগে ড্রাইভিং লাইসেন্স করেছি। সে সময় আমাকেও অতিরিক্ত টাকা দিতে হয়েছে। তবে এটাকে আমি অবৈধ বলতে রাজি না। আমি মনে করি, কাজ দ্রুত করায় যদি কেউ কাউকে উপহার হিসেবে কিছু (ঘুষ) দেয়, তবে তা অবৈধ নয়। উন্নত দেশে এটার বৈধতা দেয়া হয়েছে ভিন্ন নামে। তারা এটার নাম দিয়েছে পড মানি।
অর্থমন্ত্রীর এ বক্তব্যের পর অন্যদের সঙ্গে সরকারপন্থী ইসলামী সংগঠনগুলোও অর্থমন্ত্রীকে মন্ত্রিসভা থেকে বহিষ্কার ও তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে গণমাধ্যমে বিবৃতি প্রদান করেছে। খেলাফত আন্দোলন নামে একটি সংগঠন অর্থমন্ত্রীকে গ্রেফতার ও তার শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে। অবশ্য একটি অনলাইন মিডিয়াকে দেয়া সাক্ষাৎকারে অর্থমন্ত্রী বলেছেন, তিনি ঘুষকে বৈধ বলেননি। কিন্তু পুঁজিবাজারে হাঙর, দখল-বাণিজ্যের ওস্তাদ আর দুর্নীতির শিরোমণিদের সঙ্গে অর্থমন্ত্রীর ওঠাবসা তো সাধারণের চোখের সামনেই ঘটছে। প্রতিবাদ নিয়ে বেফাঁস কথার প্রতিকার হবে কী করে? দলীয় কোন্দল, খুনখারাবি, লাগামহীন চাঁদাবাজি-টেন্ডারবাজি আর বেপরোয়া লুটপাট জবরদস্তি করে সরকারি দলের মাঠকর্মী ও পাতি নেতারা এখন গণধিকৃত; ডাকসাইটে নেতা যারা আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়েছেন, তাদের অনেকেই লতিফ সিদ্দিকীর মতো বিদেশে 'সেকেন্ড হোম' কিনে প্রয়োজনে পাড়ি দেয়ার ব্যবস্থা নিয়ে ত্রস্ত-ব্যস্ত। ক্ষমতাসীন মহলের এমন ছেঁড়াফাঁড়া অবস্থায় গোদের উপর বিষফোঁড়া হয়ে দেখা দিচ্ছে মন্ত্রী-উপদেষ্টাদের নানা বেফাঁস মন্তব্য। যেসব কুকীর্তি কিংবা কুমন্ত্রণার কথা চেপে যেতে সরকার শাক দিয়ে মাছ ঢাকার মতো ব্যবস্থা করেছিল- মন্ত্রী-উপদেষ্টারা তার সবই ফাঁস করে দিচ্ছেন। এভাবে সরকারের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব-সংঘাত আর অতি চালাকির গুরুভার এ স্বয়ংসিদ্ধ স্বৈরাচারী সরকারকে আপনা থেকেই ভেঙে পড়ার উপক্রম করেছে।
শুধু মন্ত্রী-উপদেষ্টারা নন, শেখ হাসিনার সরকারের বন্ধুপ্রতিম কূটনীতিকরাও গোল বাঁধাচ্ছেন। সম্প্রতি ভারত ও বাংলাদেশ- এ দুই দেশের সাবেক হাইকমিশনারদের নিয়ে একটা 'সামিট' বা শীর্ষ সম্মেলনের তামাশা ঢাকায় মঞ্চস্থ হয়েছে; উদ্যোগে অংশ নিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ। ব্রিটিশ কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোর দূতাবাসপ্রধান হাইকমিশনাররা অবশ্যই নিজ নিজ রাষ্ট্র মর্যাদার ক্ষমতাধর বা প্লেনিপোটেনশিয়ারি। তবে তারা কোনোক্রমেই নীতিনির্ধারক নন, নিজ নিজ সরকারের আজ্ঞাবহ হিসেবেই তারা দায়িত্ব পালন করেছেন মাত্র। হতে পারে তাদের মধ্যে অনেক প-িত ব্যক্তি, অনেক অভিজ্ঞ রাষ্ট্রনীতিজ্ঞ রয়েছেন। কিন্তু কোন সুবাদে তাদের কয়েকজনের বৈঠককে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ একটা শীর্ষ বৈঠক বা সামিট বলে সাব্যস্ত করল, সেটা বুঝে ওঠা ভার। পত্রপত্রিকার খবর থেকে মনে হয়, এটা ছিল দিলি্লর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পরামর্শক্রমে সংগঠিত একটা ট্র্যাক-টু বা বিকল্প ধারার কূটনৈতিক উদ্যোগ, বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জন্য আতিথেয়তার সহযোগী ভূমিকা ছাড়া বাংলাদেশ সরকারের 'রাজনৈতিক' সংস্রবমুক্তভাবেই এ বৈঠক ফাঁদা হয়েছে। অংশগ্রহণকারীদের আত্মশ্লাঘার প্রতিফলন ঘটেছে দুই দিনের সামিট সমাপ্ত করে উভয় দেশে 'গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও অধিকার সংরক্ষণ'-এর আহ্বানসহ ৯ দফা ঢাকা ঘোষণার মধ্য দিয়ে। ঘোষণায় বলা হয়, এই প্রথম দুই দেশের সাবেক হাইকমিশনাররা একসঙ্গে মিলিত হলেন। সেখানে দুই দেশ তো বটেই, তারা দক্ষিণ এশিয়ার অভিন্ন ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও দর্শনের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে আলোচনায় এনেছেন। বাংলাদেশ ও ভারতের বিদ্যমান বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করার যে আকাঙ্ক্ষা সেটিও তুলেছেন। দুই পক্ষই স্বীকার করেছে পরস্পরের প্রতি আস্থা, সদ্ভাব ও অংশীদারিত্ব-ই দীর্ঘদিনের ওই বন্ধুত্বের ভিত্তি হওয়া উচিত। উভয় দেশের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও অধিকার সংরক্ষণের আহ্বান জানিয়ে তারা বলেছেন, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের যে কোনো কাজের লক্ষ্য যেন হয় দেশ দুটির জনগণের সর্বোচ্চ কল্যাণ নিশ্চিত করা। সাম্য-সমতা-স্থিতিশীলতা-সামাজিক ন্যায়বিচার ও বৈচিত্র্যগত ভিন্নতার প্রতিও সম্মান প্রদর্শন করে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নয়নে দুই সরকারের নেয়া বহুমুখী উদ্যোগের বিষয়টি ওই বৈঠকে আমলে নেয়া হয়েছে বলে ঘোষণায় উল্লেখ করা হয়। দুই দেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট অমীমাংসিত ইস্যু ও বিরাজমান সমস্যাগুলোর সমাধানের তাগিদ দেয়া হয়। জনগণ পর্যায়ে যোগাযোগ বৃদ্ধি এবং সচেতনতা ও পারস্পরিক আস্থা বাড়াতে ছাত্র, শিক্ষাবিদ, প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া, করপোরেট সেক্টর, পরিবেশবিদ এবং অন্য স্টেকহোল্ডারদের মধ্যে তথ্য ও যোগাযোগ বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়। দ্বিপক্ষীয় ব্যবসা-বাণিজ্য উদারীকরণ এবং পণ্যের আদান-প্রদানের পথ উন্মুক্ত করার তাগিদ দেয়া হয়। নিরাপত্তা সহযোগিতা জোরদারে দুই সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। প্রাকৃতিক সম্পদের যথাযথ উত্তোলন ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে দুই দেশের পরস্পরের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়াদি বজায় রেখে সহযোগিতার ক্ষেত্র তৈরি করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়। সার্ক ও বিমসটেকের চেতনায় উপ-আঞ্চলিক ও আঞ্চলিক পর্যায়ে সহযোগিতা বৃদ্ধি এবং বিনিয়োগ ও আর্থিক সেবাসহ পণ্য এবং সেবার অবাধ প্রবাহসহ দুই দেশের মধ্যে ব্যাপকভিত্তিক অর্থনৈতিক সম্পৃক্ততা বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়। এছাড়া বাংলাদেশ ও ভারতের হাইকমিশনারদের একটি অ্যালামনাই বডি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। কমিটি নিয়মিতভাবে নিজেদের ও অন্য স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে অভিজ্ঞতা বিনিময় করবে। দ্বিবার্ষিক সম্মেলন করার মধ্য দিয়ে তাদের অভিজ্ঞতা বিনিময় করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সাবেক কূটনীতিকরা তাদের পরবর্তী সামিট ২০১৬ সালে ভারতে আয়োজনের বিষয়ে যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সেটি তুলে ধরা হয়।
এতদিন রাজনীতিবিদরাই এমন উপদেশ বার্তা জাহির করতেন, বড় বড় কথার দ্বিপাক্ষিক বা বহুপাক্ষিক 'ঘোষণা' দিতেন, আর বিশ্বায়ন প্রক্রিয়ায় অর্থনৈতিক কিংবা বাণিজ্যিক লক্ষ্য, মানবাধিকার রক্ষা কিংবা পরিবেশবাদী কর্মসূচির অ্যাক্টিভিট বা সমাজকর্মীদের আঞ্চলিক বা আন্তর্জাতিক সম্মেলন থেকে আসত এসব ঘোষণা। এখন কূটনীতিবিদরাও নেমে পড়েছেন 'ঘোষণা'-নির্ভর গলাবাজিতে। তাদের টার্গেট অডিয়েন্স বা শ্রোতৃপক্ষ যদি সরকারের নীতিনির্ধারক হয়ে থাকেন, তবে রাজনীতিবিদরা এ প্রক্রিয়াকে তাদের প্রতি উপহাস না হলেও নিদেনপক্ষে তামাশা বলে মনে করবেন, এটাই স্বাভাবিক।
অবশ্য ওই কূটনৈতিক 'শীর্ষ বৈঠকে'র উদ্বোধনী বৈঠকে সরকারের রাজনৈতিকভাবে নির্বাচিত পেশাদার কূটনীতিক পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী উপস্থিত ছিলেন। সেখানে তিনি বলেছেন, ভারতের বর্তমান মোদি সরকারের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের সম্পর্ক আরও দৃঢ় হয়েছে। বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কে বিভিন্ন সময়ে উত্থান-পতন ঘটেছে। জানুয়ারি ২০১০ সালে শেখ হাসিনার ভারত সফরে মনমোহন-হাসিনা সম্পর্ক বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমান মোদি সরকার এ সম্পর্ক আরও দৃঢ় করতে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। সমুদ্রসীমা বিরোধ মীমাংসার মাধ্যমে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের অমীমাংসিত বিষয়গুলো সমাধানের দ্বার খুলে গেছে। বাকি সমস্যাগুলো দুই দেশের মধ্যে আলচনার মাধ্যমে খুব তাড়াতাড়ি সমাধান করা সম্ভব হবে। বাংলাদেশ সরকারের প্রতি মোদি সরকারের ইতিবাচক মনোভাব রয়েছে।
অন্যদিকে সামিট-এর অন্যতম উদ্যোক্তা ঢাকায় ২০০৩ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালনকারী ভারতের রাষ্ট্রদূত বীণা সিক্রি বলেন, মোদি সরকার ক্ষমতায় আসার পর ভারতের পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে বাংলাদেশের মিডিয়ায় এক ধরনের বিভ্রান্তি কাজ করছে। যেটা ঠিক নয়। কারণ ভারতের সরকার পরিবর্তন হলেও দেশটির পররাষ্ট্রনীতিতে একটি ধারাবাহিকতা রয়েছে। এটার সঙ্গে ভারতের জাতীয় বিষয় সংশ্লিষ্ট, যা এতটা সহজে পরিবর্তনীয় নয়। প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে ভালো সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য শক্তিশালী অর্থনৈতিক ভিত থাকা প্রয়োজন, যার সঙ্গে বাংলাদেশের কানেক্টিভিটিসহ অন্য বিষয়গুলো জড়িত। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে মোদি সরকার সব সময় গণতান্ত্রিক পথ অনুসরণ করেন।
ওয়াকিবহাল মহলে অনেকেরই ধারণা, মোদি সরকার বিশ্বরাজনীতির মঞ্চে ভারতের উত্তরোত্তর প্রতিষ্ঠার জন্য দুনিয়া চষে বেড়াচ্ছেন, নাগালের মধ্যে অবস্থিত বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক ঝালানোর নয়া নীতিকৌশল তিনি বা তার দলের নীতিনির্ধারকরা এখনও পাকা করেননি; তাই পুরনো ধারাই চলছে। তবে মোদির সঙ্গে সাক্ষাৎকারে কিংবা ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতার লক্ষণে এ কথা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঠিকই বুঝতে পেরেছেন যে, মনমোহন সরকার আর মোদি সরকারের বৈদেশিক নীতি কিংবা প্রতিবেশী সম্পর্কের নীতির মধ্যে ভিন্নতার পূর্বলক্ষণ তার জন্য সুখকর নাও হতে পারে। শেখ হাসিনার জন্য একরকম সরাসরি বিব্রতকর হয়ে দাঁড়িয়েছে আলোচ্য হাইকমিশনার-সামিট বৈঠকে প্রদত্ত একজন সাবেক ভারতীয় হাইকমিশনারের বক্তব্য। বীণা সিক্রির পরে ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় সাবেক হাইকমিশনার পিনাক চক্রবর্তী বলেছেন, বিশ্বের একটি বৃহৎ গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে ভারত বাংলাদেশের গণতন্ত্রের পুনঃপ্রতিষ্ঠা চায়। আর আমি একজন কূটনীতিক হিসেবে বাংলাদেশে সবার অংশগ্রহণে স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কামনা করি। ভারতের প্রতিবেশী রাষ্ট্র হিসেবে এদেশে যে সরকার এসেছে আমরা তাদের সঙ্গে কাজ করেছি। বর্তমানেও যে সরকার রয়েছে আমরা তাদের সঙ্গে কাজ করে যাব। এর আগে সামরিক সরকারের সঙ্গেও আমরা কাজ করেছি। আমরা বাংলাদেশে একটি শক্তিশালী বিরোধী দল চাই। যেটি তাদের যেসব অধিকার আছে, তা তারা অর্জন করে নিতে পারবে।
উৎসঃ আলোকিত
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন