Image description

মিনার রশীদ

কেউ থুতু মেরে, আবার কেউ পেশাব করে প্রতিপক্ষকে ভাসিয়ে দিতে চান। সবসময় মানুষ এসব কথার আক্ষরিক অর্থ খুঁজে না। তবে মাঝেমধ্যে খোঁজে এবং তাতে হুমকিদাতার জীবন দুর্বিষহ করে তোলে।

বলতে গেলে আমাদের রাজনীতি শুরু হয়েছে ‘তোমাদের ভাতে মারব, পানিতে মারব’ এই হুমকিটির মাধ্যমে। ৭ মার্চের ভাষণটিতেও এই হুমকিটি ছিল। হুমকি ও চাপাবাজির রাজনীতি মূলত সেদিন থেকেই যাত্রা শুরু করেছে । ধারণা করা হয়েছিল, এই হুমকির চোটেই দেশ স্বাধীন হয়ে যাবে। কিন্তু সে রকম হয়নি। বরং রক্তাক্ত একটা যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করতে হয়েছে।

দেখা গেল, যিনি বা যারা হুমকি দিয়েছিলেন, মোক্ষম সময়ে তারা মাঠে নেই। মাঠে এসেছে অন্য কেউ। তখন থেকেই রাজনীতি দুটি ধারায় বয়ে গেছে। একটি চাপাবাজির রাজনীতি আর অন্যটি কাজের রাজনীতি। দুঃখজনক হলো, কাজের রাজনীতির ধারাটিতেও এখন চাপাবাজি ঢুকে গেছে বা যাচ্ছে!

যাদের হুমকি দিয়েছিল, তাদের নিজ হাতে তা করতে না পারলেও এদেশের মানুষকে ভাতে মারার ও পানিতে মারার কাজটি ঠিকঠাকমতোই আঞ্জাম দিয়েছিল। ১৯৭১ সালে যত লোক নিহত হয়েছে, তার চেয়েও বেশি মানুষ মারা গেছে ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষে! নতজানু পররাষ্ট্রনীতির কারণে পরীক্ষামূলকভাবে ফারাক্কা বাঁধ চালানোর অনুমতি দিয়ে দেশবাসীকে পানিতে মারার সুবন্দোবস্তটিও করে গেছেন।

বাংলাদেশের উত্তর ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে চরম খাদ্যসংকট দেখা দেয়। হাজার হাজার পরিবার আশ্রয় নেয় রেলস্টেশন, বাস টার্মিনাল, শহরের মোড়ে মোড়ে। ঢাকাসহ বিভিন্ন শহরের রাস্তায় হাড্ডি-কংকালসার মানুষের মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখা যেত ।

প্রখ্যাত ভারতীয় অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন এই দুর্ভিক্ষসহ অন্যান্য দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতির ওপর গবেষণা করে দেখান, দুর্ভিক্ষ শুধু খাদ্যের অভাবে ঘটে না—বরং এটি খাদ্যের বণ্টনব্যবস্থার ব্যর্থতা, রাষ্ট্রীয় উদাসীনতা এবং গরিব মানুষের ক্রয়ক্ষমতার অভাব থেকেই উদ্ভূত হয়।

তিনি তার গবেষণায় দেখিয়েছেন, ১৯৭৪ সালের বাংলাদেশ দুর্ভিক্ষের সময় খাদ্যের পরিমাণ যথেষ্ট ছিল, কিন্তু গরিব জনগোষ্ঠীর সেই খাদ্য কেনার মতো টাকা ছিল না। তার ‘Entitlement Theory’ থেকে বোঝা যায়, Famine occurs not because food is unavailable, but because certain people lose their ability to acquire food. অর্থাৎ শুধু খাদ্যের অভাবে দুর্ভিক্ষ শুরু হয় না, বরং তখন শুরু হয়, যখন কিছু মানুষ তাদের খাদ্য কেনার বা অর্জনের সামর্থ্য হারিয়ে ফেলে!

এই গবেষণার ফলাফল হিসেবে অমর্ত্য সেন ১৯৯৮ সালে অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। ড. ইউনূসকে কষ্ট দিতে বা অপমান করতে সেই অমর্ত্য সেনকে নিয়েই শেখ হাসিনা অনেক নাচানাচি করেছে! শেখ হাসিনা তথা আওয়ামী লীগের সাইকোলজিক্যাল প্যাটার্নটির মাধ্যমে স্পষ্ট হয়ে পড়ে।

পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে বিএনপির কিছু নেতানেত্রীও ড. ইউনূসকে নিয়ে সমালোচনামুখর হয়ে পড়ে। তখন ম্যাডাম খালেদা জিয়া ড. ইউনূসের ব্যাপারে বিএনপি নেতাদের মুখের লাগামটি টেনে ধরেছেন। তাতে দেশের পুরো রাজনীতির চেহারাটি বদলে গেছে! এর ফলে আমরা দেখতে পেলাম যে ইউনূস-তারেকের মধ্যকার শীর্ষপর্যায়ের মিটিংটি দেশের অধিকাংশ মানুষের প্রত্যাশা পূরণ করেছে।

এক-দেড় ঘণ্টার একান্ত মিটিংয়ে ড.ইউনূস উপলব্ধি করতে পেরেছেন তার প্রতি বেগম জিয়া এবং তারেক রহমানের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা কোনপর্যায়ে রয়েছে। অন্যকিছুর জন্য ড. ইউনূস লালায়িত নহেন। তার মতো একজন ব্যক্তিত্বকে যথাযথ মর্যাদায় রাখতে পারবে বিএনপি, এটা মনে হয় তিনি আঁচ করতে পেরেছেন! যদিও কিছু নেতা ভিন্ন ধারণা দিয়ে জল অনেক ঘোলা করে ফেলেছিলেন! এটা থেকে স্পষ্ট হয় যে তারেক রহমান জনগণের পালসটি ঠিকই ধরতে পারছেন। দেশে আসলে জনগণের প্রত্যাশার অনেক কিছুই ঘটবে বলে জোর অনুমিত হচ্ছে!

বিএনপির প্রতি আমার এই টানকে অনেক শুভাকাঙ্ক্ষী সহজভাবে নিতে পারছেন না! ওনারা হয়তো ভুলে গেছেন যে ২০০৫ সাল থেকেই আমি বিরাজনীতিকরণের বিরুদ্ধে লিখে আসছি এবং আমার রাজনৈতিক সমর্থনে একটুও পরিবর্তন হয়নি। বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে যতটুকু সম্পর্ক বা এক্সেস রয়েছে, সেটাকে নিজের ফায়দা নহে, বরং দেশ, ধর্ম ও গণতন্ত্রের কাজে লাগাতে চেষ্টা করছি এবং সামনের দিনগুলোতেও তা অব্যাহত রাখব ইনশাআল্লাহ! পার্টিপ্রধানের কাছে ইতোমধ্যে জোর পরামর্শ রেখেছি, রাষ্ট্রের ন্যায়পাল নিয়োগের আগে এখনই একজন পার্টির ‘ন্যায়পাল’ উপদেষ্টা নিয়োগ দেওয়ার জন্য। এই পদটি গোপন রাখলেও চলে, তবে ঘোষণা দিলে ফায়দা বেশি হবে। যত বড় নেতা হও না কেন, আমলনামা তথ্য-উপাত্তসহ মূল জায়গায় চলে যেতে পারে, এই ভয়ে সবাই সতর্ক থাকবেন ।

বিএনপিকে যেকোনো মূল্যে তার মূল শেকড়টি আঁকড়ে থাকতে হবে। আমাদের ইতিহাসের বাঁকগুলোয় বারবার চোখ বোলাতে হবে। মিশন চেইঞ্জ হতে পারে কিন্তু ভিশন নহে। ওপরে রাজনীতির যে কাজের ধারাটি উল্লেখ করেছি, সেটিই বিএনপির রাজনীতি।

৭ মার্চে যার হাতে যা কিছু আছে, তাই নিয়ে দাঁড়ানের হুঙ্কার দিলেও আওয়ামী লীগের টপ টু বটম টোপলা-টুপলিসহ কলকাতার শরণার্থী শিবিরের দিকে রওনা হয়েছিলেন। দেশের মধ্যে যে কজন আওয়ামী লীগ নেতা থেকে গিয়েছিলেন, তার অধিকাংশ পাকিস্তানের পক্ষ অবলম্বন করেছিলেন!

এমতাবস্থায় পাকিস্তান সেনাবাহিনীর তরুণ এক মেজর বলে বসলেন, উই রিভল্ট। শুধু তাই নয়, তিনি স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে বসলেন। প্রথমবার নিজেকে ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি হিসেবে এই ঘোষণাটি দিয়েছিলেন। পরে অন্যদের পরামর্শে আগের ঘোষণার সংশোধনী দিয়ে শেখ মুজিবের নামে এই ঘোষণাটি দিয়েছিলেন। তবে প্রথম ঘোষণাটিই সঠিক ছিল বলে আমার মনে হয়। কারণ ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ স্বাধীনতা ঘোষণা করা হলেও প্রবাসী সরকার গঠন করা হয় ১৭ এপ্রিল। ২৬ মার্চ আমরা যে পাকিস্তান রাষ্ট্রটিকে অস্বীকার করে বেরিয়ে এলাম, মাঝখানের এই ২০/২১ দিন তাহলে আমাদের ব্র্যাকওয়ে রাষ্ট্রটির রাষ্ট্রপ্রধান কে ছিলেন? আমাদের ইতিহাসের এই শ্লটটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ! কাজেই ইতিহাসের ধারাবাহিকতা রক্ষার স্বার্থেই অ্যাকটিং রাষ্ট্রপতি হিসেবে জিয়ার প্রথম ঘোষণাটিই সঠিক ছিল।

বিএনপির অ্যাকটিং চেয়ারম্যান বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। তখন নিজ দলের নেতা এবং বুদ্ধিজীবীরাই এ বিষয়টি ফুঁ মেরে উড়িয়ে দিয়েছিলেন। আরো যে বিষয়টি খুব উদ্বেগের তা হলো, বিএনপির কেউ কেউ ৭১-কে নিয়ে আওয়ামী নেরেটিভগুলোই ধরে রাখতে চাচ্ছেন। যেমনÑমুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সংখ্যা, ১৪ ডিসেম্বরের বুদ্ধিজীবী হত্যা। যে গয়েশ্বর দাদা ১৪ ডিসেম্বর নিয়ে প্রশ্ন করে সম্ভবত মামলা খেয়েছেন, তিনিও মনে হয় সেই জায়গা থেকে সরে যাচ্ছেন। অথচ এসব নিয়ে আওয়ামী নেরেটিভকে কবর দেওয়ার সময় এখন এসে গেছে। জামায়াতকে মোকাবিলায় অন্য কৌশল খুঁজতে হবে। ওই কাজে এটি খুব জুতসই কৌশল হবে না!

এর মধ্যেই চট্টগ্রামে ইতিহাসের অন্য এক নীরব উপাখ্যান রচিত হয়েছিল। ১৯৭১ সালের মার্চ মাসের শেষদিক। তদানীন্তন মেজর জিয়া তার অধীন প্লাটুনটি নিয়ে নিজের বাসার পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন! তখন এক সৈনিক বলেন, ‘স্যার আমরা আপনার বাসার পাশ দিয়ে যাচ্ছি। আপনি এক ফাঁকে ভাবি-বাচ্চাদের দেখে আসেন।’ জিয়া তখন উত্তর দিয়েছিলেন, ‘এখানে কেউ তাদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে পারছে না। কাজেই সবার অধিনায়ক হিসেবে স্বার্থপরের মতো এই কাজ করা আমার পক্ষেও ঠিক হবে না!’

তুলনা করুন এই দুটি ঘটনার মধ্যে। একজন ভিমরুলের চাকে ঢিল মেরে নিজে আলগোছে সরে পড়লেন, নিজের নিরাপত্তার কথা ভেবে গ্রেপ্তার বরণ করে নিলেন, পরিবারের জন্য ১ হাজার ৫০০ টাকার (বর্তমান বাজারে ৩-৪ লাখ টাকা) ভাতার ব্যবস্থা করলেন, যুদ্ধের মধ্যেও সিএমএইচে নিজের মেয়ের সন্তান প্রসবের সুব্যবস্থা করলেন। আরেকজন সামান্য স্বার্থপর হয়ে বাসার পাশ দিয়ে যাওয়ার পরও নিজের বাসায় একটু উঁকি মেরে গেলেন না!

এই লোকটি রাজনীতিতে নেমে বলেছিলেন, রাজনীতিবিদদের জন্য আমি রাজনীতি কঠিন করে তুলবÑ‘I will make the politics difficult for the politicians.’ আসলেই তিনি তা করেছিলেন, আমরা তা ধরে রাখতে পারিনি!

১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুর পর দীর্ঘ রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং সামরিক শাসনের প্রেক্ষাপটে জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রক্ষমতায় আসেন। তিনি বুঝেছিলেন, দেশের স্বাধীনতা তখনো অপূর্ণ, যদি জনগণের একটা বৃহৎ অংশকে ক্ষুধা পেটে নিয়ে ঘুমুতে যেতে হয়! তাই তিনি একে একে যেসব পদক্ষেপ গ্রহণ করেন, তা কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তায় এক বিপ্লব ঘটায়।

১৯৭৪ সালের ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ ও জাতীয় বিপর্যয়ের পর যে শূন্যতা, বিশৃঙ্খলা ও দারিদ্র্য বাংলাদেশকে গ্রাস করেছিল, সেখান থেকে দেশকে টেনে তুলে এক সুদৃঢ় ভিত্তির ওপর দাঁড় করান শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। তিনি শুধু একজন রাষ্ট্রনায়কই ছিলেন না—ছিলেন এক দূরদর্শী প্রশাসক, কর্মীবান্ধব সংগঠক এবং কৃষি ও অর্থনীতিকে কেন্দ্র করে জাতীয় পুনর্গঠনের রূপকার।

জিয়াউর রহমানের আমলে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে ধান উৎপাদনের পরিমাণ অভূতপূর্ব হারে বৃদ্ধি পায়। তার শাসনামলের শেষদিকে বাংলাদেশ খাদ্য ঘাটতির দেশ থেকে খাদ্য উদ্বৃত্তের দিকে যাত্রা করে।

নতুন প্রজন্মকে এ কথাগুলো তথ্য-উপাত্তসহ জানানোর কথা, তারা সেই হুমকি-ধমকির রাজনীতি শুরু করেছেন।

মাত্র ৪০ বছর বয়সে যিনি রাষ্ট্রপতির দায়িত্বভার গ্রহণ করেছেন, রাষ্ট্রের সর্বময় ক্ষমতা গ্রহণ করার পরও ক্ষমতা তাকে বেপরোয়া বানায়নি। বরং বিনয়ী করেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা তাকে প্রথমদিকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছিলেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে গেলে তাকে কালো পতাকা দেখিয়ে অপমান করেছিল, বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছিল। এ ধরনের সব অপমান সেই তরুণ রাষ্ট্রপতি অত্যন্ত ধৈর্যসহকারে হজম করেছেন। তার পূর্ববর্তী রাষ্ট্রপতির মতো লাল কিংবা অন্য কোনো রঙের ঘোড়া দাবড়ানোর হুমকি দেননি। ফৌজি মেজাজের একজন তরুণ জেনারেল এবং তরুণ রাষ্ট্রপতির পক্ষে এটা সম্পূর্ণ অপ্রত্যাশিত ছিল। এভাবেই মিলিটারি শাসকের প্রতি বৈরী ভাবাপন্ন লাখ লাখ ছাত্রছাত্রীকে কিছুদিনের মধ্যেই পরম ভক্ত বানিয়ে ফেলেন।

কিছু অদ্ভুত মানবিক বৈশিষ্ট্য ও নেতৃত্বের গুণাবলির সংমিশ্রণ তার মধ্যে দেখা গিয়েছিল। এ কারণেই প্রচলিত রাজনৈতিক সংস্কৃতির সম্পূর্ণ বিপরীতে অবস্থান নিয়েছিলেন শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। তিনি বহুদলীয় গণতন্ত্র চালু করেছিলেন, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দিয়েছিলেন, ভিন্নমতের রাজনীতিকদের জায়গা দিয়েছিলেন, যা ছিল গণতান্ত্রিক শাসনের ভিত্তি।

তার দলের নেতারা আজ পেশাব করে প্রতিপক্ষকে ভাসিয়ে দিতে চান। কেউবা প্রতিপক্ষকে ধাওয়া দিয়ে সমুদ্রে ফেলতে চান কিংবা পাহাড়ে ওঠাতে চান! এগুলো তো শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের রাজনীতি ছিল না।

শহীদ জিয়ার রাজনীতি যদি কেউ করতে চান, তাকে যোগ্যতা, কর্ম, জনসম্পৃক্ততা, ত্যাগ ও উন্নয়ন ভাবনার মধ্য দিয়েই করতে হবে। হুমকি, বুলি বা দলবাজি দিয়ে নয়। আজকের বাংলাদেশে সেই ধরনের দায়িত্বশীল, নীতিনিষ্ঠ ও জনমুখী রাজনীতির অভাব প্রকট।

রাজনীতিবিদরা জনগণের ভাষা ভুলে গিয়ে হুমকির ভাষায় কথা বলেন। অথচ জনগণ এখন কাজ দেখতে চায়, পরিকল্পনা শুনতে চায়।

ভাতে মারার হুমকি, পেশাবে ভাসানোর বক্তব্য, এসব দিয়ে ভবিষ্যৎ গড়া যায় না।

দরকার একটি নতুন রাজনৈতিক ভাষারÑযেখানে থাকবে দেশপ্রেম, জনসম্পৃক্ততা, উন্নয়ন পরিকল্পনা ও নৈতিক নেতৃত্ব।

দেশ এখন আর কোনো হুমকির রাজনীতি চায় না, চায় দায়িত্বশীল নেতৃত্ব। চায় একটি নতুন রাজনৈতিক সংস্কৃতিÑযেখানে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে উদারভাবে গ্রহণ করার মানসিকতা থাকবে এবং সব জায়গায় ন্যায়বিচার ও স্বচ্ছতা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে জনগণের আস্থা অর্জন করা হবে।

আর সেটাই শহীদ জিয়ার দেখানো পথ—চাপার রাজনীতি নয়, সেটা হলো কর্মের রাজনীতি।

লেখক : সিনিয়র সাংবাদিক ও কলামিস্ট