Image description
 

দেশের চাহিদা মেটাতে চীন থেকে আমদানি করা হয় রসুন। ডলারে কেনা সেই রসুন সিলেটের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে চোরাচালানের মাধ্যমে চলে যাচ্ছে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে। প্রায় প্রতিদিনই পাচারকালে সিলেট ও সুনামগঞ্জের বিভিন্ন সীমান্ত থেকে বিপুল পরিমাণ রসুন জব্দ করছে বিজিবি। জব্দকৃত রসুনের চেয়ে কয়েক গুণ বেশি পাচার হচ্ছে বলে দাবি স্থানীয়দের। আর ব্যবসায়ীরা বলছেন, পাচাররোধ করা না গেলে আমদানির পরও দেশের বাজারে রসুনের সংকট থাকবে, বাড়বে দামও। এ ছাড়া এলসির মাধ্যমে আনা রসুন পাচার হওয়ায় ডলারসংকটও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

সূত্র জানায়, চীন থেকে আমদানিকৃত রসুন প্রতিদিন ট্রাকে করে সিলেট আসে। দক্ষিণ সুরমার কদমতলী আসার পর চোরাকারবারিরা বড় অংশ নিয়ে যায় সীমান্ত এলাকায়। পরে দুর্গম সীমান্ত এলাকা দিয়ে রসুন পাচার করে দেওয়া হয় ভারতে। এ ক্ষেত্রে তারা সিলেটের গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর, কোম্পানীগঞ্জ, কানাইঘাট ও সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারের বিভিন্ন সীমান্ত এলাকা ব্যবহার করে থাকে। বাংলাদেশ থেকে যাওয়া রসুন ও শিং মাছের বিপরীতে ভারত থেকে চোরাকারবারিরা নিয়ে আসে চিনি, কাপড়, কসমেটিকস, গরু-মহিষ ও মাদক। চলতি মাসের ১৬ দিনে সিলেট ও সুনামগঞ্জের বিভিন্ন সীমান্ত এলাকা থেকে বিজিবি-৪৮ ব্যাটালিয়নের বিভিন্ন বিওপির টহল দল ১০টির বেশি রসুনের চালান জব্দ করেছে।

এর মধ্যে সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার বিছনাকান্দি বিওপির টহল দল ১, ৪, ৬, ১০, ১১ ও ১৬ জানুয়ারি সাতটি চালান জব্দ করে। এ ছাড়া ১০ জানুয়ারি সুনামগঞ্জের বাংলাবাজার বিওপি এবং ১০ ও ১১ জানুয়ারি সিলেটের সোনারহাট বিওপি রসুনের তিনটি চালান জব্দ করে। সূত্র আরও জানায়, চীন থেকে আমদানি করা রসুনের বড় অংশ ভারতে পাচার হয়ে যাওয়ায় স্থানীয় বাজারে সংকট তৈরি হয়েছে। সিলেটের সবচেয়ে বড় পাইকারি আড়ত কালীঘাটের ব্যবসায়ীরা জানান, প্রায় তিন সপ্তাহ আগেও চীনা রসুন আড়তে ১৬০-১৭০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এখন বিক্রি হচ্ছে ২০৫ টাকায়। আমদানিকারক ও ব্যবসায়ী নেতারা বলছেন, নিত্যপণ্য হিসেবে রসুন চীন থেকে আমদানি হয়ে থাকে। আমদানিকারকরা এলসি খুলে ডলারের বিনিময়ে রসুন কিনে আনেন। এতে দেশে ডলারের রিজার্ভ কমে।

কিন্তু ডলারে কেনা রসুন পাচার হয়ে যাওয়ায় দেশের ক্রেতারা আমদানির সুফল পুরোপুরি পাচ্ছেন না। দেশের বাজারে সংকট সৃষ্টি করে রসুন পাচার হয়ে যাচ্ছে ভারতে। এতে লাভবান হচ্ছে ভারত। বাংলাদেশের ডলার দিয়ে কেনা রসুন চোরাই পথে নিয়ে যাচ্ছে তারা। ভারত বৈধপথে রসুন নিতে চাইলে বাংলাদেশ রপ্তানি করতে পারত। এতে সরকার রাজস্ব আদায়ের পাশাপাশি রেমিট্যান্সও পেত।  এ বিষয়ে সিলেট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সাবেক সহসভাপতি এমদাদ হোসেন বলেন, রসুন পাচার হওয়ার অর্থ হচ্ছে আমাদের ডলার দিয়ে কেনা পণ্য কোনো ধরনের রাজস্ব আদায় ছাড়াই চলে যাচ্ছে ভারতে। এতে দেশীয় বাজারে রসুনের দাম বাড়বে। আমদানিকৃত পণ্য পাচার হলে দেশে ডলারসংকট বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই এ পাচার ঠেকাতে হবে।