
আজকের দিনে আমরা অনেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় বুঁদ হয়ে আছি। ছবি, ভিডিও, রিলস, স্ট্যাটাস— যখন যা ইচ্ছা, পোস্ট করে ফেলছি। লাইক, কমেন্ট দেখা যেন রুটিনে পরিণত হয়েছে। কেউ কেউ আবার ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম থেকেই জামাকাপড়, গৃহসজ্জার জিনিসসহ নানা ধরনের পণ্য কেনাকাটা করছেন।
কিন্তু আপনি কি জানেন, সোশ্যাল মিডিয়া আপনার ব্যক্তিগত জীবনেও নজর রাখছে? অনেক সময় লক্ষ্য করে দেখবেন— আপনি কোনো বিষয় নিয়ে কারো সঙ্গে আলোচনা করলেন বা কিছু ভাবলেন, তার কিছুক্ষণ পরই ঠিক সেই বিষয়ের বিজ্ঞাপন বা পোস্ট এসে ভেসে উঠছে আপনার নিউজফিডে। এটিকে কেবল কাকতালীয় বলে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
ব্রিটেনের গবেষণা সংস্থা অ্যাপটেকো’র এক সাম্প্রতিক প্রতিবেদন জানাচ্ছে, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, ইউটিউবসহ জনপ্রিয় বহু অ্যাপ নীরবে ব্যবহারকারীর কার্যকলাপ পর্যবেক্ষণ করে। এসব অ্যাপ শুধু আপনার পোস্ট বা লাইক নয়, নজর রাখছে আপনার সার্চ হিস্ট্রি, লোকেশন, পছন্দের বিষয়, এমনকি কার সঙ্গে আপনি যোগাযোগ করছেন তার ওপরও।
শুধু সোশ্যাল মিডিয়া নয়, বিভিন্ন ই-কমার্স ও ফিনান্স অ্যাপ-ও আপনার ডিভাইস থেকে ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, থ্রেডস, লিঙ্কডইন, পিন্টারেস্ট, অ্যামাজন, অ্যালেক্সা, ইউটিউব, এক্স (সাবেক টুইটার), এমনকি পেপ্যালের মতো অ্যাপগুলো ব্যবহারকারীদের ডিজিটাল অভ্যাস বিশ্লেষণ করে তাদের একটি ডিজিটাল প্রোফাইল তৈরি করছে।
এই প্রোফাইলের ভিত্তিতে আপনার সামনে এমন কনটেন্ট পরিবেশন করা হয়, যা আপনার আচরণ বা মতামতকে প্রভাবিত করতে পারে— কিনতে, ভাবতে কিংবা মত গঠন করতে।
কীভাবে নিজেকে সুরক্ষিত রাখবেন?
সোশ্যাল মিডিয়ার এই নজরদারি থেকে নিজেকে রক্ষা করতে কিছু সহজ কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ নিয়ম মেনে চলা জরুরি:
> অ্যাপ ইনস্টল করার সময় সতর্ক থাকুন: প্রতিটি পারমিশন (অনুমতি) ভালোভাবে পড়ুন, যা প্রয়োজন নেই, তা অনুমোদন দেবেন না।
> সংবেদনশীল পারমিশনে সাবধান: ক্যামেরা, মাইক্রোফোন ও লোকেশন ব্যবহারের অনুমতি শুধুমাত্র প্রয়োজন হলে দিন।
> সেটিংসে সময় নিয়ে নজর দিন: ফোনের সেটিংসে গিয়ে সময় সময় অ্যাপগুলোর পারমিশন রিভিউ করুন এবং অপ্রয়োজনীয় অ্যাক্সেস বন্ধ করুন।
> বিশ্বস্ত প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করুন: অ্যাপ ডাউনলোড করবেন শুধুমাত্র অফিসিয়াল ও নিরাপদ প্ল্যাটফর্ম থেকে।
> ডেটা নীতি পড়ুন: অ্যাপ ডাউনলোডের আগে তাদের প্রাইভেসি পলিসি, রেটিং এবং ব্যবহারকারীদের রিভিউ অবশ্যই পড়ে নিন।