
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) দিয়ে মানসিক স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া সম্ভব—এমনটাই মনে করছেন যুক্তরাষ্ট্রের ডার্টমাউথ কলেজের গবেষকেরা। তাদের তৈরি এআই-ভিত্তিক অ্যাপ্লিকেশন ‘থেরাবট’ এরইমধ্যে মানসিক স্বাস্থ্য পেশাদারদের একটি কার্যকর সহায়ক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
ডার্টমাউথের সহকারী অধ্যাপক ও গবেষক নিক জ্যাকবসন বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের সংখ্যা ১০ গুণ বাড়ালেও চাহিদা পূরণ করা সম্ভব নয়। আমাদের নতুন কোনো পথ খুঁজতে হবে।’
সম্প্রতি তাদের গবেষণায় দেখা গেছে, উদ্বেগ, বিষণ্নতা ও খাওয়ার সমস্যায় ভুগতে থাকা ব্যক্তিদের জন্য থেরাবট কার্যকরভাবে কাজ করছে। শিগগিরই এটি প্রচলিত থেরাপির সঙ্গে তুলনামূলকভাবে পরীক্ষা করা হবে।
‘থেরাবট’-এর মতো আরও কিছু এআই থেরাপিস্ট অ্যাপ তৈরি করছে বিভিন্ন স্টার্টআপ। ‘ইয়ারকিক’ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী হারবার্ট বেয় জানান, তাদের তৈরি এআই থেরাপিস্ট ‘পান্ডা’ যেকোনো সময় ব্যবহারযোগ্য এবং আত্মহত্যাপ্রবণ আচরণ শনাক্ত করে দ্রুত সহায়তা পাঠাতে পারে।
একজন ব্যবহারকারী ‘দারেন’ জানান, ব্যক্তিগত মানসিক ট্রমা কাটিয়ে উঠতে তিনি চ্যাটজিপিটি ব্যবহার করেছেন, যা সরাসরি থেরাপি না হলেও অনেক সহায়ক প্রমাণিত হয়েছে।
‘আমেরিকান সাইকোলজিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন’ (এপিএ)-এর কর্মকর্তা ভাইল রাইট বলছেন, ‘ভবিষ্যতে বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত ও বিশেষজ্ঞদের তত্ত্বাবধানে তৈরি এআই থেরাপিস্ট ব্যবহারের সুযোগ তৈরি হচ্ছে।’ তবে শিশু-কিশোরদের জন্য এর নিরাপত্তা নিয়ে কিছু উদ্বেগ রয়েছে।
তিনি আরও সতর্ক করেন, বাজারের অনেক অ্যাপ কেবল লাভের উদ্দেশ্যে তৈরি এবং এগুলো ব্যবহারকারীদের ভুল তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করছে। তাই বিশ্বাসযোগ্য, নিরাপদ ও গবেষণানির্ভর অ্যাপগুলোর উন্নয়ন জরুরি।
ডার্টমাউথের গবেষক দল এরইমধ্যে ভাবছে থেরাবটকে একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরের, যাতে দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষও সহজে মানসিক স্বাস্থ্যসেবা পেতে পারেন।
তবে এখনও মার্কিন এফডিএ থেরাবটের মতো অ্যাপকে ‘চিকিৎসা যন্ত্র’ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি। অনুমোদনের আগে প্রয়োজনীয় নথিপত্র পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।