Image description
 

পরিচালকদের শূন্যস্থান পূরণে নির্বাচনের পথে হাঁটতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। বিসিবির বর্তমান কমিটির মেয়াদকাল চলতি বছরের অক্টোবর পর্যন্ত। মেয়াদ শেষ হতে যদিও ৯ মাস বাকি। এ সময় বিসিবির কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করতে ক্যাটাগরি-১’র ৭ পরিচালক, ক্যাটাগরি-২’র ৭ পরিচালক এবং ক্যাটাগরি-৩’র একজন পরিচালকের শূন্যস্থান পূরণে বিসিবিতে অন্তর্বর্তীকালীন নির্বাচন হতে পারে যে কোনো সময়। বোর্ড পরিচালকদের অনেকেই মনে করেন, ক্রিকেটের কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করতে অন্তর্বর্তীকালীন নির্বাচনের পথে হাঁটা উচিত বিসিবির। বোর্ড যাতে নির্বিঘ্নে ও সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত হয়, সেজন্য বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদের উচিত নির্বাচনের পরামর্শ দেওয়া। বোর্ডের অন্তর্বর্তীকালীন নির্বাচন প্রসঙ্গে ২৬ জানুয়ারি বিসিবির পরিচালক মাহাবুব আনাম বলেন, ‘পরিচালকদের শূন্যস্থান পূরণে আলোচনা হয়েছে। সবার সঙ্গে আলোচনা করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে। আমরা ইতোমধ্যে আমাদের আইনি বিভাগকে জানিয়েছি কীভাবে নির্বাচনের পথে এগিয়ে যাওয়া যায়।’ গঠনতন্ত্রের ১৪.১ ধারায় উল্লেখ আছে, ‘পরিচালনা পরিষদের কোনো পদ শূন্য হলে অন্তর্বর্তী সময়ের জন্য সেই শূন্য পদ সংশ্লিষ্ট ক্যাটাগরি থেকে পূরণের লক্ষ্যে নির্বাচন আয়োজনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ।’

জেলা ও বিভাগের গঠনতন্ত্রের ক্যাটাগরি-১’র পরিচালক ১০ জন। ক্লাবগুলো নিয়ে ক্যাটাগরি-২’র পরিচালক ১২ এবং ক্যাটাগরি-৩’র পরিচালক সংখ্যা তিনজন। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর বিসিবির পরিচালনা পর্ষদে নেই ১৫ পরিচালক। এসব শূন্যস্থান পূরণ জরুরি হয়ে পড়েছে। গঠনতন্ত্রের ১৩.৪ ধারাও বলছে শূন্যস্থান পূরণের কথা। ধারায় উল্লেখ আছে, ‘নির্বাচন পরবর্তীকালে কোনো পরিচালকের পদ কোনো কারণে শূন্য হইলে সাধারণ পরিষদের সংশ্লিষ্ট ক্যাটাগরির পদ উপ-অনুচ্ছেদ ১৩.২(গ) অনুযায়ী পূরণ করিবে।’ বিসিবির উচিত, জরুরি ভিত্তিতে ক্যাটাগরি-২’র ৭ পরিচালক ও ক্যাটাগরি-১’র একজন পরিচালকের পদে নির্বাচন দেওয়া। জেলা ও বিভাগের কাউন্সিলরদের অনেকেই না থাকায় ক্যাটাগরি-১’র পদগুলো পূরণে সমস্যা রয়েছে।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর পরিবর্তন আসে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) কার্যক্রমে। আগের সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন দায়িত্ব ছেড়ে দেন। ২১ আগস্ট সভাপতির শূন্যস্থান পূরণ করেন বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক ফারুক আহমেদ। সাবেক অধিনায়ক বিসিবির সভাপতি হয়ে নানামুখী সমস্যার মুখোমুখি হন। যার অন্যতম অধিকাংশ পরিচালকের অনুপস্থিতি। পট পরিবর্তনে বর্তমান কমিটির ২৫ পরিচালকের ১৫টি শূন্য হয়ে আছে। এত সংখ্যক পরিচালক না থাকার পরও বিসিবির নতুন সভাপতি ক্রিকেট বোর্ডের কার্যক্রম পরিচালনা করছেন দূরদর্শিতার সঙ্গে। কিন্তু কত দিন? নির্বিঘ্নে বিসিবির কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কয়েকদিন আগে স্ট্যান্ডিং কমিটি ঘোষণা করে। বর্তমান পরিচালকদের অধিকাংশই দুই বা তিনটি করে স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান হয়েছেন। এত সব দায়িত্ব পালনে পরিচালকদের হিমশিম খেতে হবে কোনো সন্দেহ নেই। এ অবস্থার পরিবর্তনে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী জরুরি হয়ে পড়েছে পরিচালকদের শূন্যস্থান পূরণের নির্বাচন।

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের পর সরকারের পরিবর্তন হয়। ফারুক আহমেদ দায়িত্ব নেওয়ার পর গত পাঁচ মাসে ১২-১৪ টুর্নামেন্ট, সিরিজ সফলভাবে আয়োজন করেছে বিসিবি। তাঁর সময়কালে ভারত, পাকিস্তান, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ খেলা ছাড়াও এশিয়া কাপ, নারী বিশ্বকাপ, অনূর্ধ্ব-১৯ নারী টি-২০ বিশ্বকাপ, বিপিএল, ঢাকার ঘরোয়া ক্রিকেট, জাতীয় ক্রিকেট, টি-২০ টুর্নামেন্ট আয়োজন করেছে। টাইট শিডিউলে কাজগুলো করতে হয়েছে এবং হচ্ছে বোর্ড সভাপতি ও পরিচালকদের।

বিসিবির সর্বশেষ সভায় স্ট্যান্ডিং কমিটি গঠন করা হয়। নাজমুল আবেদীন ফাহিমকে চেয়ারম্যান বানানো হয় ক্রিকেট অপারেশন্স ও ওমেন্স উইংয়ের। ফাহিম সিনহা দায়িত্ব পেয়েছেন ফিন্যান্স, গেম ডেভেলপমেন্ট এবং লজিস্টিক ও প্রটোকল বিভাগের। মাহাবুব আনাম চেয়ারম্যান বিসিবি গ্রাউন্ডস কমিটি, এইচপি ও পারচেজ কমিটির। শফিউল আলম চেয়ারম্যান ডিসিপ্লিনারি কমিটি ও টুর্নামেন্ট কমিটি, আকরাম খান চেয়ারম্যান টুর্নামেন্ট কমিটি ও ফিজিক্যাল চ্যালেঞ্জড কমিটির। মঞ্জুর আলম মেডিকেল কমিটি ও ওয়েলফেয়ার কমিটির, মোহাম্মদ সালাউদ্দিন চৌধুরী সিসিডিএম ও অডিট কমিটি, ইফতেখার আহমেদ মিঠু আম্পায়ার্স কমিটি ও মিডিয়ার কমিটির চেয়ারম্যান। বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ ও কাজী এনাম দায়িত্ব পালন করবেন বাংলাদেশ টাইগার্স ও মার্কেটিং কমিটির।