আসন্ন আয়ারল্যান্ড সিরিজে বাংলাদেশ দলের ব্যাটিং কোচ হিসেবে দায়িত্ব নিচ্ছেন মোহাম্মদ আশরাফুল। এছাড়া দলের টিম ডিরেক্টর হিসেবে সাবেক ক্রিকেটার আবদুর রাজ্জাক রাজ থাকবেন।
মূলত খেলা ছাড়ার পর কোচিং পেশায় যুক্ত হন আশরাফুল এবং লেভেল থ্রি কোচিং কোর্স সম্পন্ন করেন। তিনি বিপিএলে রংপুর রাইডার্সের সহকারী কোচ, এনসিএলে বরিশাল দলের প্রধান কোচ এবং নারীদের ডিপিএলে গুলশান ইয়ুথ ক্লাবের কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়া বেশ কিছুদিন ধরেই বিসিবির কোচিং প্যানেলে তার অন্তর্ভুক্তি নিয়ে আলোচনা চলছিল। অবশেষে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা এলো আয়ারল্যান্ড সিরিজে ব্যাটিং কোচের ভূমিকায় দেখা যাবে তাকে। অ্যাশকে এই দায়িত্ব দেওয়ার ব্যাখ্যাও দিয়েছেন বিসিবির পরিচালকরা।
এ নিয়ে বিসিবি পরিচালক খালেদ মাসুদ পাইলট বলেছেন, ‘আশরাফুল কিন্তু বাংলাদেশ ক্রিকেটে, ৯৭ এর পর শুরু হয়। আশরাফুলের (টেস্ট অভিষেকে) সেঞ্চুরি, কিন্তু দেখিয়ে দিয়েছে যে বাংলাদেশের একটা প্লেয়ার এসেছে। লেভেল থ্রি কোচিং কোর্স করা। সুপার একটা অভিজ্ঞতা আছে। এত সুন্দর একটা ক্যারিয়ার। হয়ত বোর্ড সেভাবে চিন্তা করেছে। আশরাফুলকে রেখে যদি তার খেলার অভিজ্ঞতাটা কাজে লাগানো যায়। আমাদের প্লেয়াররা ট্যাক্টিক্যাল জায়গাগুলোতে অনেক ভুল করেছে। আশরাফুলের অন্তর্ভুক্তি বড় একটা সাপোর্ট হতে পারে। সে অনেক বড় বড় ইনিংস খেলেছে, যখন খেলেছে আমরা আন্ডারডগ দল ছিলাম। ওই সময়ে ভারত, শ্রীলঙ্কার সাথে কীভাবে বড় বড় সেঞ্চুরি করেছে।’
আরেক বোর্ড পরিচালক আমজাদ হোসেন বলেছেন, ‘এখন খোঁজা হয়েছে কোথায় বাড়তি সাপোর্ট দরকার। সেখানে মনে হয়েছে বিশেষজ্ঞ একজন ব্যাটিং কোচ দরকার। আপাতত আয়ারল্যান্ড সিরিজ পর্যন্ত এই সিদ্ধান্ত (আশরাফুলের নিয়োগ) এসেছে, পরে আবার নেক্সট বিশ্বকাপের আগে আমরা সিদ্ধান্ত নেব।’
নিজের টিম ডিরেক্টর হওয়া প্রসঙ্গে রাজ্জাক বলেন, ‘জিনিসটা হস্তক্ষেপ হিসেবে নেবেন না। যেহেতু আমার পাইলট ভাইয়ের ব্যাকগ্রাউন্ড ক্রিকেট। ক্রিকেট রিলেটেড কোনো ব্যাপার হলে, যেহেতু আমরা এখানে ইনভলভ আছি, পরামর্শ নেওয়া হতে পারে। আমাদেরও ইনপুট দেওয়া দরকার হলে দিতে পারি। এটা কারও কাজে হস্তক্ষেপ করা না। এর আগে যখন নির্বাচক ছিলাম তখনও এসব করেছি। আমার কোনো আইডিয়া থাকলে শেয়ার করা, পাইলট ভাইয়ের আইডিয়া থাকলে শেয়ার করবে। এটা হস্তক্ষেপ করা না।’
আশরাফুলকে নিয়ে রাজ্জাক বলেন, ‘আসলে এরকম একজন নিতে চাইলে কী মান, এটা কিন্তু জাস্টিফাই করতে পারবেন না হেড কোচ হিসেবে কাজ করলে সেটাকে মানদণ্ড হিসেবে নিতে পারবেন না। এখানে (আশরাফুল) আসছে কিন্তু বিশেষজ্ঞ ব্যাটিং কোচ হিসেবে, দেখতে হবে সে এখানে কী করে। আগে শুরু করছে করুক, এখানে চুক্তির ব্যাপার। একটা সিরিজের জন্য করা হয়েছে। এখনই (বাড়তি) কমেন্ট করা কঠিন।’
নিজের ভূমিকা প্রসঙ্গে রাজ্জাক জানান, ‘আসলে সাহায্য করা, ইনপুট দেওয়া। ক্রাইসিস মোমেন্ট হিসেব করে এই পদ না। যা ছিল আগে, এখনও তাই আছে। দল সমস্যায় পড়ে গেছে সাথে সাথে একজন টিম ডিরেক্টর দিয়ে দাও এটা না। আশরাফুল বিশেষজ্ঞ ব্যাটিং কোচ, লেভেল থ্রি কোর্স করেছে। আমাদের প্রিমিয়ার লিগে, বিপিএলে সব জায়গায় কোচিং করাচ্ছে। তার যে অনেক অভিজ্ঞতা আছে তা যেন শেয়ার করতে পারে প্লেয়ারদের সাথে।’
অন্যদিকে মোহাম্মদ সালাউদ্দিনের ভূমিকা প্রসঙ্গে রাজ্জাক বলেন, ‘সালাউদ্দিন ভাই সিনিয়র সহকারী কোচ, কাউকে সরানো হয়নি। কোচিং প্যানেলে বাড়তি একজনকে নেওয়া হয়েছে।’
রাজ্জাক আরও জানান, ‘(আশরাফুলের ব্যাপারে) পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তার জন্য নতুন জায়গা সে আসুক, দেখুক, কীভাবে কাজ করে। পারফরম্যান্সের উপরও সব নির্ভর করে। (টিম ডিরেক্টর হিসেবে) আমি ইনপুট দেবই এমন না। যদি প্রয়োজন পড়ে আমি সেখানে থাকব। ক্রিকেট বোর্ড মনে করেছে একজন টিম ডিরেক্টর দরকার দলে। আগে থেকেই এই পোস্ট ছিল, এখন নতুন সৃষ্টি করা পোস্ট না। মাঝে ডিরেক্টর সংখ্যা কম ছিল দেখে হয়ত যেতে পারতেন না।’