Image description

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে বাংলাদেশের ব্যাটারদের প্রায় সবাই ব্যর্থতার পরিচয় দিলেন। ইনিংসের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত তানজিদ হাসান তামিম, সাইফ হাসান, লিটন দাস, শামীম হোসেন পাটোয়ারি ও নুরুল হাসান সোহান—কেউই দলকে ভরসা দিতে পারেননি। মাঝে তাওহীদ হৃদয় কিছুটা প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করলেও তা দলকে বিপদমুক্ত করতে যথেষ্ট হয়নি। অবশ্য, ৭৭ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকা দলকে কিছুটা লড়াইয়ে ফেরানোর চেষ্টা করেন তানজিম সাকিব ও নাসুম আহমেদ। তাদের দুজনের ২৩ বলে ৪০ রানের ঝোড়ো জুটিতে জয়ের ক্ষীণ আশা দেখা দিয়েছিল, তবে শেষ পর্যন্ত পরাজয় এড়ানো যায়নি।

সোমবার (২৭ অক্টোবর) চট্টগ্রামের বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে ১৬৫ রানের সংগ্রহ পায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। জবাবে ১৪৯ রানেই গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ। ১৬ রানের এই জয়ে তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল সফরকারীরা।

লক্ষ্য তাড়ায় নেমে ঝোড়ো শুরু করেছিলেন তানজিদ তামিম। তবে রোমারিও শেফার্ডের দুর্দান্ত এক ক্যাচে থামতে হয় তাকে। জেডেন সিলসের বলে ফেরার আগে ২ চার ও ১ ছক্কায় ৫ বলে ১৫ রান করেছিলেন এই ওপেনার।

চোট থেকে ফেরার ম্যাচে লিটনও আস্থার নাম হয়ে উঠতে পারেননি। আকিল হোসেনের বলে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে ফেরেন টাইগার অধিনায়ক (৮ বলে ৫)।

তামিম-লিটনের পর সাইফও আজ উইকেটে থিতু হতে পারেননি। আকিলের ফুল লেংথে সুইপ করেছিলেন। কিন্তু টাইমিংয়ে গড়বড় করে প্যাভিলিয়নে ফেরেন এই ওপেনার। শর্ট ফাইন লেগে শেফার্ডের মুঠোবন্দি হওয়ার আগে ৭ বলে ৮ রান আসে তার ব্যাটে।

পাওয়ারপ্লের শেষ ওভারে শামীমের উইকেটও হারায় বাংলাদেশ। হোল্ডারের বলে বোল্ড হয়ে ৪ বল মোকাবিলায় মাত্র এক রানে ফেরেন মিডল-অর্ডার এই ব্যাটার।

নুরুল হাসানও আজ নিজেকে মেলে ধরতে ব্যর্থ হন। মন্থর গতির এক ইনিংস খেলে ১০ বলে ৫ রানে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন উইকেটকিপার এই ব্যাটার।

পরে তাওহীদ হৃদয়ের উইকেট হারিয়ে আরও বিপদে পড়ে স্বাগতিকরা। সিলসের শর্ট ডেলিভারি ফাইন লেগে খেলতে চেয়েছিলেন হৃদয়। তবে টাইমিং না হওয়ায় আকিলের হাতে ক্যাচ দিয়ে ২৫ বলে ২৮ রান করে ফিরতে হয় তাকে।

অবশ্য, দারুণ জুটি গড়ে আশা জাগিয়েছিলেন তানজিম ও নাসুম। তবে তানজিমকে ফিরিয়ে ভাঙলেন সেই জুটি (২৩ বলে ৪০ রান) অভিজ্ঞ জেসন হোল্ডার। ২৭ বলে ৩৩ রান করেন ডানহাতি এই ব্যাটার। নাসুমও (১৩ বলে ২০ রান) কিছুক্ষণ পরই ফেরেন। এরপর লেজের সারির ব্যাটাররা কেবলই ব্যবধান কমান।

এর আগে, ব্যাটিংয়ে নেমে শুরু থেকেই দেখেশুনে ইনিংস শুরু করেন ক্যারিবীয় দুই ওপেনার অ্যালিক আথানেজ ও ব্র্যান্ডন কিং। তাদের দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে কোনো উইকেট না হারিয়েই পাওয়ার প্লেতে ৩৫ রান তুলে ফেলে সফরকারীরা।

পাওয়ার প্লের পর আক্রমণে আসেন রিশাদ হোসেন। এ যাত্রায় চার-ছক্কায় তার ওপর তাণ্ডব চালান কিং-আথানেজ। এতে ইনিংসের অষ্টম ওভারে দলীয় পঞ্চাশ পেরিয়ে যায় সফরকারীরা। এরপরই ক্যারিবিয়ান শিবিরে আঘাত হানেন রিশাদ। আথানেজকে ব্যক্তিগত ৩৪ রানে বোল্ড করেন এই লেগি।

দ্বিতীয় উইকেটে অধিনায়ক শাই হোপের সঙ্গে জুটি বেঁধেছিলেন ব্র্যান্ডন কিং। তবে ৩৬ বলে ৩৩ রান করা কিংকে ফিরিয়ে এই জুটি ভাঙেন তাসকিন। এই পেসারের ডেলিভারিতে ব্যাকওয়ার্ড স্কোয়ার লেগ দিয়ে উড়িয়ে মারতে গিয়ে সাকিবের হাতে ক্যাচ তুলে দেন কিং। পরের বলেই তাসকিনের আগুনে বোলিংয়ে ধরাশায়ী রাদারফোর্ড। তাসকিনের বল রাদারফোর্ডের ব্যাটের কানায় লেগে টপ-এজ হয়, আর সেই ক্যাচ অনায়াসে লুফে নেন লিটন। রানের খাতাই খুলতে পারেননি শেরফান রাদারফোর্ড।

দলীয় ৮২ রানে ৩ উইকেট হারানো দলটিকে বাকিটা সময় পথ দেখান শাই হোপ ও রোভম্যান পাওয়েল। তাদের দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে দেড় শ ছাড়িয়ে চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্য দাঁড় করায় সফরকারীরা। শেষমেশ পাওয়েল ৪৪ এবং হোপ ৪৬ রানে অপরাজিত থাকেন।