Image description

সিরিজ শুরুর আগে মিরপুরে হোম অব ক্রিকেটের উইকেটের রং নিয়ে বেশ আলোচনা ছড়ায়। এখানকার উইকেটের রং বরাবরই কালো ছিল। তবে এবার সেই কালো একটু বেশিই চকচক করছিল! রং যেমনই হোক মিরপুরের এই উইকেট নতুন কোনো রহস্য ছড়ায়নি। স্পিনবান্ধব তো বটেই, যাকে বলে পুরোপুরি র‌্যাংক টার্নার, তেমন পিচই পেল উভয় দল সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে।

যে পিচে বাংলাদেশের কষ্টকর ২০৭ রানের জবাবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ আরো ত্রাহি ১৩৩ অলআউট! গোটা ম্যাচে স্পিনাররা যে বাড়তি টার্ন পান তাতে ব্যাটারদের জন্য ব্যাটিং করাটাই দুরূহ হয়ে পড়ল। স্বভাবজাত উইকেটে স্পিন দাপট দেখিয়ে ৭৪ রানের বড় জয় নিশ্চিত করে বাংলাদেশ। লেগ স্পিনার রিশাদ হোসেন ৩৫ রানে নেন ৬ উইকেট। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে অলআউট করার পথে প্রতিপক্ষের ৮ উইকেটই শিকার করেন স্পিনাররা।

এমন উইকেটে খেলে প্রতিপক্ষকে ধসিয়ে দেওয়ার রেকর্ড বাংলাদেশের জন্য নতুন কিছু নয়। ২০২১ সালে অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডকে ঘরের মাঠে হারিয়ে সিরিজ জিতেছিল বাংলাদেশ। এছাড়া অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট জয়ের সময়ও এমন র‍্যাংক টার্নার উইকেটে খেলেছিল। সেই সাফল্যগুলো অবশ্য কখনোই লম্বা হয়নি। প্রতিবারই হোম কন্ডিশনের শতভাগ সাহায্য নিয়ে সিরিজ জয়ের পরেই ব্যর্থতার পুরোনো রূপ দেখায় বাংলাদেশ। এবারও তেমন হবে কি না সেই উত্তর দেবে সময়। কিন্তু এমন উইকেটে যে বাংলাদেশের ওয়ানডে প্রস্তুতি ‘সঠিক’ হচ্ছে না তা চোখবন্ধ করেই বলে দেওয়া যায়। কারণ, বিশ্বমঞ্চে যে থাকে স্পোর্টিং উইকেট।

২০০৬ সালে এই মাঠের জন্মলগ্নে ছিল কালো। পরবর্তী সময়ে কিউরেটর গামিনি ডি সিলভার সময়ে কাটগ্রাস ব্যবহার করায় কালো বর্ণের দেখা মিলত না। এবার কিউরেটর টনি হেমিংয়ের অধীনে কাটগ্রাস ব্যবহার না করায় উইকেটের রং কালো সেটা ফের স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। কিন্তু উইকেটের রঙের পরিবর্তনে যে রহস্য ছড়িয়েছিল মিরপুর- সেটা অবশ্য স্থায়ী হয়নি। পুরোনো রূপই দেখা যাচ্ছে। র‍্যাংক টার্নার উইকেটে স্পিনাররা পাচ্ছেন বাড়তি টার্ন, ব্যাটারদের জন্য রান করাটা কঠিন। এমন উইকেট তৈরির জন্য দায়ী যে কিউরেটর নয়- সেটাও স্পষ্ট হয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজের প্রথম ওয়ানডে দেখে। দলের চাওয়া যেমন থাকে, সেই অনুযায়ীই হয় উইকেট।

তবে সবচেয়ে বেশি শোনা যাচ্ছে, মিরপুরের উইকেট পরিবর্তন অসম্ভব! হ্যাঁ, উইকেট পরিবর্তন করা অসম্ভব- এটা সত্য। তবে উইকেটের চরিত্র পরিবর্তন কঠিন নয়। এর প্রমাণ গত বিপিএল। এই আসরে নিয়মিত ১৭০-১৮০ রানের ম্যাচ দেখা গেছে। এমনকি বড় লক্ষ্য তাড়া করতেও দেখা গেছে এই মিরপুরেই। তখন হুট করে মিরপুরের এই চরিত্র বদল সম্ভব হলেও, এখন তা আর হয়নি। এর দায় অবশ্য টিম ম্যানেজমেন্টের, কারণ তাদের চাওয়াটাই ছিল এমন স্পিনস্বর্গ হোক মিরপুরের উইকেট। তবে এই স্পিন স্বর্গে পাওয়া সাফল্য যে দীর্ঘস্থায়ী হবে না সেটাও চোখবন্ধ করে বলে দেওয়া যায়। কারণ, আগেও মিরপুরে এমন উইকেটে সাফল্য পেয়ে, পরের সিরিজগুলোতে ব্যর্থতা উপহার দিয়েছে বাংলাদেশ।