বাংলাদেশের মৌলভীবাজার দিয়ে প্রবাহিত মনু নদীর বাঁধ সংস্কারের কাজ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য। এ বিষয়ে শুক্রবার সীমান্তবর্তী বাঁধ এলাকা পরিদর্শন করেছেন ত্রিপুরার উনাকোটি জেলার জেলাশাসক দিলীপ কুমার চাকমা।
বাংলাদেশের বাঁধ উঁচু করার অভিযোগ
জেলাশাসক চাকমা জানান, বাংলাদেশ তাদের অংশে বাঁধের উচ্চতা বৃদ্ধি করেছে এবং এটি শূন্য-রেখার খুব কাছে নির্মিত। তার ভাষায়, "বাঁধটি পুরনো অবস্থার চেয়ে অনেক উঁচু করা হয়েছে, যা আমাদের এলাকায় পানির প্রবাহ বাড়াতে পারে।"
চাকমা আরও বলেন, "আমাদের অংশের বাঁধ মজবুত করা অত্যন্ত প্রয়োজন। বিষয়টি উচ্চ পর্যায়ে আলোচনা হওয়া উচিত, কারণ বাংলাদেশের কাজ শূন্য-রেখার খুব কাছাকাছি হয়েছে।"
ত্রিপুরার বিধায়কের উদ্বেগ
কৈলাশহরের বিধায়ক বীরজিত সিনহা মনু নদীর বাঁধ নিয়ে ত্রিপুরা বিধানসভায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি অভিযোগ করেন, "বাংলাদেশ তাদের অংশে বাঁধ উঁচু করছে, অথচ আমাদের ৪০ বছরের পুরনো বাঁধ জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে। বর্ষায় আমার নির্বাচনী এলাকা ডুবে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।"
সিনহার বক্তব্যকে সমর্থন করে পার্শ্ববর্তী ফটিকরায় কেন্দ্রের মন্ত্রী সুধাংশু দাসও জানান, দ্রুত সমাধান প্রয়োজন।
ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিক্রিয়া
ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা জানান, "এই বিষয়টি আন্তর্জাতিক, এবং আমি ইতোমধ্যেই বিস্তারিত প্রতিবেদন দিল্লিতে পাঠিয়েছি। কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে আলোচনা অব্যাহত থাকবে।"
বাংলাদেশের প্রতিক্রিয়া
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের মৌলভীবাজার বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মুহম্মদ খালেদ বিন অলীদ জানান, "আমাদের অংশে বাঁধ সংস্কারের কাজ করা হচ্ছে, যা শুধুমাত্র নদীভাঙন রোধের জন্য। কৈলাশহর ডুবে যাওয়ার আশঙ্কা অমূলক।"
তিনি আরও বলেন, "সীমান্ত এলাকায় বিএসএফের আপত্তির কারণে কিছু অংশে কাজ বন্ধ রয়েছে। তবে সংস্কারের কাজ আমাদের ভূখণ্ডেই সীমাবদ্ধ।"
বাঁধের প্রকৃতি
মি. অলীদ ব্যাখ্যা করেন, "এটি কোনো ব্যারাজ বা ড্যাম নয়, বরং নদীর পাশ দিয়ে দেওয়া বাঁধ, যা শহর বা বসতিকে রক্ষা করে। বরং আমাদের অংশই বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে।"
পরবর্তী পদক্ষেপ
ত্রিপুরার জেলাশাসকের পরিদর্শন এবং বিধায়কদের উদ্বেগের পর বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রীয় পর্যায়ে আলোচনা হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে নদীর দু’পাশের এই বাঁধ নিয়ে উভয় দেশের স্থানীয় প্রশাসন ও বাসিন্দারা দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। সূত্র: বিবিসি