
২৭ বছরের হতাশার গ্লানিময় অধ্যায় শেষে অবশেষে ইতিহাস গড়ল দক্ষিণ আফ্রিকা। বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ (ডব্লিউটিসি) ২০২৩–২৫ চক্রের ফাইনালে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো দীর্ঘ ফরম্যাটের রাজত্ব নিজেদের করে নিয়েছে প্রোটিয়ারা। শুধু ট্রফিই নয়, দক্ষিণ আফ্রিকা জিতেছে এক রেকর্ড অঙ্কের প্রাইজমানিও—বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ ৪৩ কোটি ৬৫ লাখ টাকার বেশি!
লর্ডসের ঐতিহাসিক মঞ্চে টেস্ট ক্রিকেটের শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে অস্ট্রেলিয়ার দেওয়া ২৮২ রানের লক্ষ্য তাড়া করে ৫ উইকেটের জয় তুলে নেয় টেম্বা বাভুমার দল। তৃতীয় দিনে ২১৩/২ স্কোর নিয়ে চতুর্থ দিনের শুরুতেই ম্যাচ শেষ করে দেয় তারা। এ জয়ে কেবল “চোকার্স” তকমা ঘোচানো নয়, প্রোটিয়াদের জন্য এটি একটি অর্থনৈতিক বিজয়ও বটে।
কে পেল কত?
এবারের ডব্লিউটিসির জন্য আইসিসি মোট ৫.৭৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৬৯৯ কোটি টাকা) প্রাইজমানি ঘোষণা করে, যা গত আসরগুলোর তুলনায় দ্বিগুণ। অংশগ্রহণকারী ৯টি দলের জন্যই ছিল পুরস্কারের নিশ্চয়তা। এবার দেখে নেওয়া যাক, কে কোন অবস্থানে থেকে কত অর্থ পেল:
অবস্থান | দল | ডলার (USD) | বাংলাদেশি টাকা (প্রায়) |
---|---|---|---|
১ম | দক্ষিণ আফ্রিকা | ৩.৬ মিলিয়ন | ৪৩,৬৫,৫৬,০০০ টাকা |
২য় | অস্ট্রেলিয়া | ২.১৬ মিলিয়ন | ২৬,২৭,২৫,০০০ টাকা |
৩য় | ভারত | ১.৪৪ মিলিয়ন | ১৭,৫১,২০,০০০ টাকা |
৪র্থ | নিউজিল্যান্ড | ১.২ মিলিয়ন | ১৪,৬০,০০,০০০ টাকা |
৫ম | ইংল্যান্ড | ৯.৬০ লাখ | ১১,৬৮,০০,০০০ টাকা |
৬ষ্ঠ | শ্রীলঙ্কা | ৮.৪০ লাখ | ১০,২২,০০,০০০ টাকা |
৭ম | বাংলাদেশ | ৭.২০ লাখ | ৮,৭৫,৭৫,০০০ টাকা |
৮ম | ওয়েস্ট ইন্ডিজ | ৬.০০ লাখ | ৭,৩০,০০,০০০ টাকা |
৯ম | পাকিস্তান | ৪.৮০ লাখ | ৫,৮৪,০০,০০০ টাকা |
অতীতের চেয়ে অনেক বেশি
প্রথম দুই আসরে বিজয়ী দলগুলো পেয়েছিল ১.৬ মিলিয়ন ডলার করে, যার চেয়ে এবার প্রায় দ্বিগুণ পরিমাণ অর্থ পেল দক্ষিণ আফ্রিকা। শুধু চ্যাম্পিয়ন নয়, বাকিরাও আগের তুলনায় অনেক বেশি পেয়েছে। এই উদ্যোগ বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের মর্যাদা ও জনপ্রিয়তা বাড়াতেই স্পষ্ট ইঙ্গিত।
বাংলাদেশের প্রাপ্তি
বাংলাদেশ এবারের আসরে সপ্তম অবস্থানে থেকে শেষ করেছে। তাতে তারা পেয়েছে ৭.২০ লাখ মার্কিন ডলার, বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ৮.৭৫ কোটি টাকা। যদিও এটি মাঠের পারফরম্যান্স অনুযায়ী হতাশাজনক, তবে আর্থিক দিক থেকে এটি এক বড় প্রাপ্তি।
দক্ষিণ আফ্রিকার হাতে উঠেছে বহু কাঙ্ক্ষিত টেস্ট মেস ও কোটি টাকার চেক, আর অন্যান্য দলও শূন্য হাতে ফিরেনি। দীর্ঘ সময় পর প্রোটিয়াদের উত্থান কেবল এক শিরোপা জয় নয়, এটি গোটা ক্রিকেট বিশ্বের জন্য একটি আবেগঘন গল্পও বটে—চোকার্স থেকে চ্যাম্পিয়ন!