
মাগুরার মহম্মদপুরে পুলিশের ওপর হামলায় জড়িত আকাশ নামে এক দলীয় কর্মীকে আটকের পর স্থানীয় ছাত্রদল কর্মীরা পুলিশ ভ্যানে হামলা চালিয়ে তাকে ছিনিয়ে নিয়েছে বলে জানা গেছে।
রোববার দুপুরে সড়কে আগুন ধরিয়ে আকাশকে পুলিশ ভ্যান থেকে ছিনিয়ে নেয়। ৩ ঘণ্টা পর পুলিশ স্থানীয় বিএনপি নেতাদের সহায়তায় তাকে আবার আটক করতে সক্ষম হয়েছে বলে জানা গেছে।
নির্ভরযোগ্য একাধিক সূত্র জানায়, মহম্মদপুর উপজেলার সিন্দাইন গ্রামে বিরোধপূর্ণ একটি জমির উপর দিয়ে যাওয়া রাস্তা নিয়ে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান নূর আলির পরিবারের সঙ্গে প্রতিবেশী আমিনুর রহমান সোহেলের পরিবারের বিরোধ চলে আসছিল। এ বিরোধের জের ধরে গত ১১ জুন সাবেক চেয়ারম্যান নূর আলীর ছেলে শিবলী এবং শিপলুর নেতৃত্বে আমিনুর রহমান সোহেলের ওপর হামলা চালানো হয়। এ ঘটনা নিয়ে আমিনুর রহমান সোহেলের পরিবারের পক্ষ থেকে শিবলী-শিপলুকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করা হয়।
ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে শনিবার (১৪ জুন) দুপুরে শিবলী-শিপলুর পক্ষ নিয়ে মহম্মদপুর উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আবু ইউসুফ এবং আমিনুর রহমান ডিগ্রি কলেজ ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক ইবরাহিম সরদার শাকিলের নেতৃত্বে ২০ থেকে ৩০টি মোটরসাইকেলে করে একটি সংঘবদ্ধ দল সিন্দাইন গ্রামে আমিনুর রহমান সোহেলের বাড়িতে হামলা চালায়। তারা ওই বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে।
এ সময় খবর পেয়ে মহম্মদপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছলে হামলাকারীরা এসআই সোহাগের ওপর চড়াও হয় এবং কিলঘুসি মারে। এ অবস্থায় পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ফিরে এলেও হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে আকাশ ব্যাপারী নামে একজনকে রোববার ভোরে আটক করে। পরে দুপুর ১২টার দিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে মাগুরা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়ার পথে মহম্মদপুর উপজেলা ছাত্রদল নেতা আবু ইউসুফের নেতৃত্বে পুলিশ ভ্যানে হামলা চালানো হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আকাশকে বহনকারী পুলিশ ভ্যানটি মহম্মদপুর-মাগুরা সড়কের শ্যামনগর এলাকায় ফিলিং স্টেশনের সামনে পৌঁছলে তারা সড়কে আগুন ধরিয়ে পুলিশ ভ্যানটির গতিরোধ করে। পরে তারা পুলিশ ভ্যান থেকে জোরপূর্বক আকাশকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
আকাশ মহম্মদপুর সদরের ব্যাপারী পাড়ার মোখলেসুর রহমানের ছেলে। গত বছরের ৪ আগস্ট স্থানীয় ছাত্রলীগ কর্মীদের সঙ্গে সে ছাত্র আন্দোলনের বিপক্ষে ধাওয়া পালটা ধাওয়ায় অংশ নেয়। কিন্তু ৫ আগস্টে সরকার পতনের পর আকাশ মহম্মদপুর উপজেলা জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক আবু ইউসুফের সঙ্গে বিএনপির রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশ নিচ্ছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
এদিকে পুলিশ ভ্যান থেকে ছিনতাইয়ের বিষয়ে জানতে মহম্মদপুর থানা এবং মাগুরা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তারা ফোন ধরেননি। তবে ছিনতাইয়ের পর প্রায় ৩ ঘণ্টা অভিযান চালিয়ে মহম্মদপুর থানা পুলিশ তাকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে মাগুরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এএসএম মুক্তারুজ্জামান বলেন, বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। পরবর্তীতে বিস্তারিত জানানো সম্ভব হবে।