
চরম উত্তেজনার মধ্যেও নতুন আশার কথা শুনিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার দাবি, ইরান ও ইসরায়েল শিগগিরই একটি শান্তিচুক্তিতে পৌঁছাবে। যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় রোববার (১৫ জুন) সকালে নিজস্ব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প বলেন, ‘ইরান ও ইসরায়েল একটি চুক্তি করবে, এবং খুব শিগগিরই এটা করবে।’
ট্রাম্প জানান, সংঘাত বন্ধে ইতোমধ্যে বহু ফোনালাপ ও বৈঠক চলছে। তবে এসব আলোচনা কারা করছেন কিংবা কী পর্যায়ে রয়েছে, সে সম্পর্কে তিনি কোনো বিস্তারিত তথ্য দেননি। একসময় ইসরায়েলের সামরিক আক্রমণকে ‘চমৎকার’ ও ‘খুব সফল’ বলে প্রশংসা করলেও, এবার শান্তির পক্ষে সরাসরি অবস্থান নিয়েছেন এই মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
নিজের পোস্টে ট্রাম্প আরও লেখেন, ‘ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে একটি চুক্তি হওয়া উচিত—ঠিক যেমনটা আমি আমার সময়ে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে করতে চেয়েছিলাম।’ তিনি উল্লেখ করেন, প্রেসিডেন্ট হিসেবে তার প্রথম মেয়াদে তিনি সার্বিয়া ও কসোভো এবং মিসর ও ইথিওপিয়ার মতো অঞ্চলের মধ্যে উত্তেজনা প্রশমনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন। সেই অভিজ্ঞতার আলোকে এবার ইরান-ইসরায়েল সম্পর্কেও ইতিবাচক সমাধানের আশা করছেন তিনি।
পোস্টের শেষাংশে ট্রাম্প কিছুটা হতাশার সুরে লেখেন, ‘আমি অনেক কিছু করি, কিন্তু কখনো কৃতিত্ব পাই না—তবে ঠিক আছে, জনগণ বোঝে। মেক দ্য মিডল ইস্ট গ্রেট অ্যাগেইন!’
ওয়াশিংটন থেকে আল-জাজিরার প্রতিবেদক রোসিল্যান্ড জর্ডান জানিয়েছেন, ট্রাম্পের পোস্টে যে ‘অনেক কল ও বৈঠক’-এর কথা বলা হয়েছে, তা এই প্রথম জনসমক্ষে এসেছে। এর আগে মার্কিন প্রশাসনের পক্ষ থেকে এমন কোনো আলোচনার বিষয় প্রকাশ করা হয়নি।
অবশ্য, যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকায় একটি রহস্যময় দ্বৈত বার্তা লক্ষ্য করছেন বিশ্লেষকরা। একদিকে তারা ইসরায়েল-ইরান সংঘাতকে বাড়তে দিতে চায় না, অন্যদিকে মধ্যপ্রাচ্যে কূটনৈতিক উপস্থিতি আংশিকভাবে সীমিত করেছে। ধারণা করা হচ্ছে, ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলার ইঙ্গিত আগেই পেয়েছিল ওয়াশিংটন। সে কারণেই যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী কিছুটা প্রস্তুতিও বাড়িয়েছে—যদি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।
এমন প্রেক্ষাপটে, ওমানে নির্ধারিত এক কূটনৈতিক বৈঠক যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে বাতিল করা হলেও, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্র এখনো আগ্রহী রয়েছে বলে জানিয়েছে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এক মুখপাত্র।