
মিরপুরে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের আজকের ম্যাচটা ছিল শুধু শুধু ম্যাচ নয়—ছিল মর্যাদার লড়াই। আবাহনী বনাম মোহামেডান, ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের (ডিপিএল) দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর লড়াই, আর সেটাই পরিণত হয়েছিল অঘোষিত ফাইনালে। কারণ যে জিতবে তার হাতেই উঠবে শিরোপা। কিন্তু মাঠের লড়াই শেষে আলোচনায় উঠে এল ভিন্ন একটি ঘটনা—মোহামেডানের অভিজ্ঞ ক্রিকেটার মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের আচরণ।
৬ উইকেটে হারের পর মাঠ থেকে ড্রেসিংরুমে ফেরার সময় মাহমুদউল্লাহ আচমকাই নিয়ন্ত্রণ হারান। হঠাৎ করেই তিনি তেড়ে যান গ্র্যান্ড স্ট্যান্ডের দিকে। রেলিং টপকে গ্যালারিতে ওঠার চেষ্টা করেন, উদ্দেশ্য ছিল সরাসরি এক দর্শকের কাছে যাওয়া। ধারণা করা হচ্ছে, সেই দর্শকের মন্তব্যেই চটে যান সাবেক এই জাতীয় দলের অধিনায়ক। তবে ঠিক কী মন্তব্য করা হয়েছিল, তা জানা যায়নি।
ঘটনাটি মুহূর্তেই সবার নজরে আসে। সতীর্থরা তৎপর হয়ে তাকে শান্ত করেন এবং মাঠে ফিরিয়ে আনেন। এর মধ্যেই গ্যালারিতে শুরু হয় হট্টগোল। কয়েক মিনিট ধরে চলা বিশৃঙ্খলার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
দুঃখজনক হলেও সত্য, ম্যাচে ফিফটি করেও পুরস্কার বিতরণীতে দেখা যায়নি মাহমুদউল্লাহকে। মাঠের বাইরের এই বিতর্ক যেন ঢেকে দিল তার পারফরম্যান্সকে।
ম্যাচের প্রসঙ্গে ফিরলে, মোহামেডান আগে ব্যাট করে আরিফুল ইসলাম ও মাহমুদউল্লাহর ফিফটিতে তোলে ২৪০ রান। আবাহনী শুরুটা নড়বড়ে করলেও মোহাম্মদ মিঠুনের (৬৬*) ও অধিনায়ক মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের (৭৮*) ব্যাটে সহজেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায়। ৯ ওভার ২ বল বাকি থাকতেই তারা তুলে নেয় কাঙ্ক্ষিত জয়।
গ্যালারিতে আজ প্রায় তিন শতাধিক দর্শক উপস্থিত ছিলেন। লিগের অন্যান্য ম্যাচে দর্শক-উপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও আজকের উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচে মাঠে দর্শকদের সরব উপস্থিতি ছিল লক্ষণীয়—আর সেই আবহেই ঘটেছে এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা।
দর্শকের সঙ্গে খেলোয়াড়ের সম্পর্ক সব সময়ই সংবেদনশীল। আজ মাহমুদউল্লাহর প্রতিক্রিয়া যেন সেই সম্পর্কেরই এক চরম বাস্তবতা তুলে ধরল—যেখানে আবেগ কখনও কখনও পেশাদারিত্বকে ছাপিয়ে যায়।
বোর্ড বা লিগ কর্তৃপক্ষ তার আচরণ নিয়ে কী ব্যবস্থা নেয়, সেটিই এখন দেখার বিষয়।