মিরপুরে বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে খুলনাকে ২ উইকেটের ব্যবধানে হারিয়েছে চিটাগং। ১৬৪ রান তাড়া করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারের শেষ বলে চার হাঁকিয়ে জয় তুলে নেয় তারা।
১২তম ওভার পর্যন্ত ম্যাচটি পুরোপুরি চিটাগংয়ের নিয়ন্ত্রণে ছিল। ২ উইকেট হারিয়ে তাদের সংগ্রহ ছিল ১০৫ রান। হাতে ছিল ৮ উইকেট, শেষ ৪৮ বলে দরকার ছিল মাত্র ৫৯ রান। ক্রিজে ছিলেন দুই সেট ব্যাটার খাজা নাফায় ও হুসাইন তালাত। কিন্তু সেখান থেকে হঠাৎ ছন্দপতন হয় চিটাগংয়ের। খুলনার বোলারদের তোপে পরের চার ওভারে হারের শঙ্কায় পড়ে তারা। ১৭ ওভার শেষে ৭ উইকেট হারিয়ে তাদের রান তখন ১৩০।
ক্রিজে নেই কোনো জাত ব্যাটার। ছিলেন দুই বোলার আরাফাত সানি ও আল ইসলাম। ফলে ম্যাচে জয়ের পাল্লা ভারী হয়ে যায় খুলনার। কিন্তু ১৮তম ওভারের চতুর্থ বলে ছক্কা আর পঞ্চম বলে জেসন হোল্ডারকে চার হাঁকিয়ে আল ইসলাম লড়াই চালিয়ে যাওয়ার বার্তা দেন।
শেষ ১২ বলে তখন দরকার ছিল ২১ রানের। ১৯তম ওভারে এসে হাসান মাত্র ৬ রান দেন। শেষ ওভারে প্রয়োজন পড়ে ১৫ রান। মুশফিক হাসানের প্রথম বলেই চার হাঁকান আরাফাত। দ্বিতীয় বলে দুই রান নেয়ার পর তৃতীয় বলেও দুই রানের জন্য দৌড়াতে গিয়ে বাধে বিপত্তি। স্ট্রাইকপ্রান্তে পা পিছলে পড়ে যান আল ইসলাম। প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে খুড়িয়ে খুড়িয়ে মাঠ ছাড়েন তিনি। ক্রিজে নেমেই চার হাঁকান শরিফুল ইসলাম। তাতে শেষ দুই বলে দরকার পড়ে মাত্র ৪ রানের। কিন্তু পঞ্চম বলে ব্যর্থ হন শরিফুল, ক্যাচ তুলে দেন হোল্ডারের হাতে। আবার ক্রিজে নামেন আল ইসলাম। শরিফুল ব্যর্থ হলেও তিনি হননি। কাভারে থাকা ফিল্ডারের মাথার উপর দিয়ে তুলে মেরে আদায় করে নেন কাঙ্ক্ষিত চার রান। খুলনাকে কাঁদিয়ে ফাইনালে পৌঁছে যায় চিটাগং। আরাফাত সানি ১৩ বলে ১৮ আর আল ইসলাম ৭ বলে ১৭ রানে অপরাজিত থাকেন।
এর আগে চিটাগংকে জয়ের পথে এগিয়ে রেখেছিলেন খাজা নাফায় ও হুসাইন তালাত। এদিন রান তাড়ায় নেমে একপ্রান্তে খাজা নাফায় আলো ছড়ালেও অন্যপ্রান্তে ব্যর্থ হন পারভেজ হোসেন ইমন (৪) ও গ্রাহাম ক্লার্ক (৪)। দুজনকেই শিকার করেন পেসার হাসান মাহমুদ। তৃতীয় উইকেটে নাফায়ের সঙ্গে দারুণ জুটি গড়ে তোলেন হুসাইন তালাত। তাদের জুটিতে শতরান পার করে চিটাগং। ৩৬ বলে ৪ চার ও ৩ ছক্কার মারে ফিফটি তুলে নেন নাফায়। দলকে জয়ের ভিত গড়ে দিয়ে দলীয় ১০৫ রানে বিদায় নেন তালাত। ২৫ বলে ৫ চার ও ১ ছক্কায় ৪০ রান করেন পাকিস্তানি এ অলরাউন্ডার। এরপর ৭ বলে ৫ রান করে শামীম হোসেন আউট হলে কিছুটা চাপে পড়ে চিটাগং। দলীয় ১১৭ রানে নাফায়ও আউট হলে সে চাপ আরও বাড়ে। ৪৬ বলে ৫৭ রানে থামে তার ইনিংস।
এরপর মোহাম্মদ মিথুন (৭) ও খালেদ আহমেদের (০) উইকেট পড়লে হারের শঙ্কায় পড়ে চিটাগং। কিন্তু সে শঙ্কা উড়িয়ে দলকে অবিশ্বাস্য জয় এনে দেন আরাফাত ও আল ইসলাম। খুলনার পক্ষে ৩টি করে উইকেট তুলে নেন হাসান মাহমুদ ও মুশফিক হাসান।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৬৩ রান সংগ্রহ করেছিল খুলনা টাইগার্স। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৬৩ রানের ইনিংস খেলেছিলেন শিমরন হেটমায়ার। ৩৩ বলে তার ইনিংসটি সাজানো ছিল ৬ চার ও ৪ ছক্কার মারে। এছাড়া ৩২ বলে ৩ ছক্কা ও ১ চারের মারে ৩২ বলে ৪১ রান করেন মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন।
চিটাগংয়ের পক্ষে ২৭ রান খরচায় সর্বোচ্চ ২ উইকেট নেন বিনুরা ফার্নান্দো।
এদিকে এ জয়ে ২০২৫ আসরের ফাইনাল নিশ্চিত হলো চিটাগংয়ের। প্রথমবার শিরোপার স্বপ্ন পূরণে ফাইনালে শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় তারা মুখোমুখি হবে ফরচুন বরিশালের।