Image description

বাংলাদেশের বিপক্ষে ধবলধোলাই এড়ালেও পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটাররা সিরিজ হারটা যেন হজম করতে পারছেন না। কামরান আকমল, বাসিত আলীদের দাবি, পাকিস্তান শেষ ম্যাচটা হেসেখেলে জিতেছে বাংলাদেশের সৌজন্যেই। যাঁদের মধ্যে আকমলের ধারণা, পাকিস্তানকে এবার অনেক হালকাভাবে নিয়েছে বাংলাদেশ।

আকমল প্রশ্নটা তুলেছেন তাসকিন আহমেদকে নিয়ে। যেখানে বিশ্রামনীতি মেনে তাসকিন এক ম্যাচ খেলছেন তো অপর ম্যাচে সুযোগ পাচ্ছেন না। ছন্দে থাকা এই পেসার পাকিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে ৮ ইকোনমিতে নিয়েছেন ৬ উইকেট। তাসকিন খেলেছেন সিরিজের প্রথম ও তৃতীয় টি-টোয়েন্টি। বাংলাদেশের বিপক্ষে গতকাল মিরপুরে তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে পাকিস্তান ৭৪ রানে জয়ের পর নিজের ইউটিউব চ্যানেলে কথা বলেছেন আকমল। পাকিস্তানের ২০০৯ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপজয়ী ক্রিকেটার বলেন, ‘বাংলাদেশ আমাদের চোখে আয়না ধরেছে। তাসকিনকে বিশ্রামনীতি মেনে খেলিয়েছে আমাদের বিপক্ষে। নেদারল্যান্ডস কিংবা আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে না! তারা (বাংলাদেশ) বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে বিশ্রামনীতি অনুসরণ করে খেলাচ্ছে। তাতেই বোঝা যাচ্ছে আমাদের দলের অবস্থা কোথায় গিয়ে ঠেকেছে।’

বাংলাদেশকে পেলেই জ্বলে ওঠেন সাহিবজাদা ফারহান। সেই ফারহানকে বাংলাদেশ সিরিজের প্রথম দুই টি-টোয়েন্টিতে খেলায়নি পাকিস্তান। মিরপুরে গতকাল তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে ফারহান খেলেছেন ফখর জামানের পরিবর্তে। এসেই ৪১ বলে ৬ চার ও ৫ ছক্কায় ৬৩ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলে ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার পেয়েছেন। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে তাঁর দুই ফিফটির দুটিই এখন বাংলাদেশের বিপক্ষে।

ফারহানকে নিয়ে কথা বলতে গিয়ে আকমল কথা বলেছেন এবার বাংলাদেশ সিরিজে থাকা অন্যান্য ক্রিকেটারদের নিয়েও। আকমল বলেন, ‘সাহিবজাদা ফারহানকে এই ম্যাচে সুযোগ দিয়েছে পাকিস্তান। যাতে করে তাদের অফস্পিনাররা আমাদের পেয়ে না বসতে পারে। দারুণ ইনিংস খেলেছে ফারহান। এই সুযোগটা তো আগেও দিতে পারত। সাইম আইয়ুব এখনো ধুঁকছে। সেট হওয়ার পর ফিফটি করে তার উচিত দলে জায়গাটা পাকা করা। এভাবে ২০-২১ রান করে দলে টিকে যাওয়া পাকিস্তানে প্রায়ই হচ্ছে। আর হারিস দুইবার জীবন পেয়ে করল ৫ রান (তৃতীয় টি-টোয়েন্টি)।’

শেষ টি-টোয়েন্টির একাদশে বাংলাদেশ এনেছে পাঁচ পরিবর্তন। পারভেজ হোসেন ইমন, তাওহীদ হৃদয়, রিশাদ হোসেন, মোস্তাফিজুর রহমান, তানজিম হাসান সাকিব—স্বাগতিকেরা এই পাঁচ ক্রিকেটারকে দেয় বিশ্রাম। তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে একাদশে আসেন তানজিদ হাসান তামিম, নাসুম আহমেদ, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, তাসকিন আহমেদ ও মেহেদী হাসান মিরাজ। যেখানে মিরাজ-তানজিদ তামিম ছাড়া বাকি তিনজনের টুকটাক অবদান ছিল এই ম্যাচে। তাসকিন ও নাসুম নিয়েছেন ৩ ও ২ উইকেট। যেখানে নাসুম নিয়েছেন ২ উইকেট।

শেষ ম্যাচে বাংলাদেশের একাদশে পাঁচ পরিবর্তন দেখে অবাক হয়েছেন রমিজ রাজা। নিজের ইউটিউব চ্যানেলে রমিজ বলেন, ‘দলে এত পরিবর্তন করতে চাইলে একটা নিয়ম আছে। দলে সাধারণত ম্যাচ উইনার থাকে ২-৩ জন। তাদের সরানো যাবে না। বাকি জায়গাগুলোতে নতুন ক্রিকেটার খেলানো যেতে পারে।’

মোস্তাফিজ পাকিস্তান সিরিজে ২ ম্যাচে ২.৮৬ ইকোনমিতে বোলিং করে নিয়েছেন ৩ উইকেট। যার মধ্যে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ৪ ওভারে ৬ রান দিয়ে বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে পুরো ওভার বোলিং করে সবচেয়ে কিপটে বোলিংয়ের কীর্তি গড়েছেন। এই ম্যাচেই ফিফটি করে ম্যাচসেরার পুরস্কার পান পারভেজ হোসেন ইমন। রমিজ বলেন, ‘আমার মনে হয়, মোস্তাফিজ বা ইমন খেললে এই ম্যাচে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হওয়ার সুযোগ ছিল। যদিও পাকিস্তান অনেক বেশি রান করেছে, তবু এই দুই ক্রিকেটার থাকলে অধিনায়কের কাছে সুযোগ থাকত।’

শেষ ম্যাচ ৭৪ রানে হারলেও বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতেছে ২-১ ব্যবধানে। সিরিজে সর্বোচ্চ ৭১ রান করে সিরিজসেরা হয়েছেন জাকের আলী অনিক। গড় ৩৫.৫ ও স্ট্রাইকরেট ১১৮.৩৩। যেখানে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে ৫৫ রানের একটা কার্যকরী ইনিংস খেলেছিলেন তিনি।