যশোরের ছয়টি সংসদীয় আসনের মধ্যে তিনটিতে প্রার্থী পরিবর্তন করেছে বিএনপি। বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) দিনভর ও রাতে এসব আসনে নতুন করে চূড়ান্ত মনোনয়ন দেওয়া হয়।
যশোর-৬ (কেশবপুর) আসনে বিএনপির চূড়ান্ত প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পেয়েছেন- দলের কেন্দ্রীয় সদস্য ও কেশবপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবুল হোসেন আজাদ।
ফলে প্রাথমিকভাবে মনোনয়ন পাওয়া বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও ছাত্রদলের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ শেষ পর্যন্ত বাদ পড়েছেন। বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) রাতে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে আবুল হোসেন আজাদের হাতে মনোনয়নের টিকিট তুলে দেওয়া হয়।
যশোর-১ (শার্শা) আসনে বিএনপির চূড়ান্ত মনোনয়ন পেয়েছেন শার্শা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামান লিটন। এতে প্রাথমিক মনোনয়নপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় বিএনপির সাবেক দপ্তর সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য মফিকুল হাসান তৃপ্তি মনোনয়ন থেকে বাদ পড়েন।
দলীয় সূত্র জানায়, শার্শা আসনে দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় নেতাকর্মীদের একটি অংশ তৃণমূল নেতৃত্বকে গুরুত্ব না দেওয়ার অভিযোগ তুলে প্রার্থী পরিবর্তনের দাবি জানিয়ে আসছিল। শেষ পর্যন্ত কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তে নুরুজ্জামান লিটনকে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়।
এর আগে বুধবার দুপুরে যশোর-৫ (মণিরামপুর) আসনেও বিএনপি প্রার্থী পরিবর্তন করে। এই আসনে প্রাথমিক মনোনয়ন পাওয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও কেন্দ্রীয় নেতা অ্যাডভোকেট শহীদ মোহাম্মদ ইকবালের পরিবর্তে ধানের শীষ প্রতীকে মনোনয়ন দেওয়া হয় বিএনপির যুগপৎ আন্দোলনের শরিক দল জমিয়তে ওলামায়ে ইসলাম (একাংশ)-এর সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মুফতি রশীদ বিন ওয়াক্কাসকে। রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি জানান দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বিএনপি সূত্র জানায়, ১২ দলীয় জোটের শরিক হিসেবে মুফতি রশীদ বিন ওয়াক্কাস দীর্ঘদিন ধরে বিএনপির আন্দোলন-সংগ্রামে সক্রিয় ভূমিকা রেখে আসছেন। সে বিবেচনায় তাকে যশোর-৫ আসনে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।
এদিকে প্রার্থী পরিবর্তনের খবরে যশোর-৬ আসনে শ্রাবণপন্থীদের মধ্যে হতাশা দেখা দিলেও আজাদপন্থীদের মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনা লক্ষ করা গেছে। কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টে দলের সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে ধানের শীষের পক্ষে কাজ করার ঘোষণা দিয়েছেন।
অন্যদিকে যশোর-৫ আসনে প্রার্থী পরিবর্তনে স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের একটি অংশ হতাশা প্রকাশ করেছেন। তাদের মতে, প্রাথমিকভাবে প্রার্থী ঘোষণা করার পর শেষ মুহূর্তে পরিবর্তনের ফলে মাঠপর্যায়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার দাবিও জানিয়েছেন কেউ কেউ।
তবে নতুন মনোনীত প্রার্থী মুফতি রশীদ বিন ওয়াক্কাস বলেন, ‘প্রার্থী পরিবর্তনের কারণে কিছুটা হতাশা থাকলেও বিএনপির নেতাকর্মীরা দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে তাঁর সঙ্গে নির্বাচনি মাঠে থাকবেন বলে তিনি আশাবাদী।’