ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুতে রাজনৈতিক অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। পৃথকভাবে শোক প্রকাশ করেছে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। দলগুলোর পক্ষ থেকে উল্লেখ করা হয়, হাদি ছিলেন আধিপত্যবাদবিরোধী আন্দোলনের অগ্রনায়ক। তাকে হারিয়ে জাতি একজন প্রতিবাদী কণ্ঠকে হারালো। তারা তার খুনিদের গ্রেফতার ও উপযুক্ত বিচার দাবি করেন।
বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাতে হাদির মৃত্যুর সংবাদ প্রচারের পর থেকেই দলগুলো তার জন্য শোক প্রকাশ করে।
শোকবার্তায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, ‘আমরা উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, কিছু দুর্বৃত্ত চক্র পরিকল্পিতভাবে দেশব্যাপী খুন, জখম চালাচ্ছে। কোনও সুদুরপ্রসারী নীলনকশা বাস্তবায়নের জন্যই এই রক্তপাত। গণতন্ত্র ও দেশের যারা শত্রু তারাই শরিফ ওসমান হাদিকে গুলি করে। গুরুতর আহত করার পর আজ সিঙ্গাপুরে তার মৃত্যু হয়। এটি একটি চক্রান্তমূলক রাজনৈতিক হত্যা।’
তিনি মনে করেন, ‘ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী স্বৈরাচারী শাসকগোষ্ঠীর পতনের পর ষড়যন্ত্রকারী দুবৃত্তরা আবারও দেশে দুঃশাসন কায়েমের জন্য রক্ত ঝরাচ্ছে। ষড়যন্ত্রকারী দুস্কৃতকারীরা দেশকে অস্থিতিশীল করার অপতৎপরতায় লিপ্ত হয়েছে।’
তারেক রহমান বলেন, ‘গণতন্ত্রকে ধ্বংস এবং ভোট ও নির্বাচনকে বানচাল করতেই শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলা করা হয়েছে। এসব দুস্কৃতকারীদের কঠোর হস্তে দমন করতে না পারলে দেশের মানুষের জানমালের নিরাপত্তা চরম হুমকির মুখোমুখি দাঁড়াবে। ষড়যন্ত্রকারীরা ওঁত পেতে বসে রয়েছে দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির মাধ্যমে ফায়দা লুটতে। সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে এই রক্তপিপাসু সন্ত্রাসীদের প্রতিরোধ করতে হবে।’
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘গণতন্ত্র, ভোট ও নির্বাচনের শত্রুরাই হাদিকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা চালিয়ে গুরুতর আহত করে, আজ সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু খুবই বেদনার। দেশ ও জাতিকে ভয়াবহ সংকটে ফেলতেই এ ধরনের লোমহর্ষক ঘটনার বারবার পুনরাবৃত্তি ঘটানো হচ্ছে। তাই এসব দুস্কৃতকারী সন্ত্রাসীদের কঠোর হস্তে দমনের বিকল্প নেই।’
তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্র ও মানুষের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠাসহ দেশের মানুষের জানমাল রক্ষায় দল, মত নির্বিশেষে সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। নইলে ষড়যন্ত্রকারী দুশমনরা দেশের অস্তিত্ব বিপন্ন করতে মরিয়া হয়ে উঠবে।’
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বিবৃতিতে বলেন, ‘শরীফ ওসমান হাদি ছিলেন একজন সাহসী জুলাইযোদ্ধা ও সাচ্চা দেশপ্রেমিক। তিনি অন্যায়ের কাছে কখনও মাথা নত করেননি। তিনি ছিলেন আপসহীন এক যোদ্ধা।’
এছাড়াও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ওসমান হাদির আত্মার মাগফিরাত কামনা ও শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছে।