Image description

বগুড়া-৪ (নন্দীগ্রাম-কাহালু) আসনের বিএনপি দলীয় সাবেক এমপি ও আগামী নির্বাচনে বিএনপির প্রাথমিক মনোনয়নপ্রাপ্ত মোশাররফ হোসেনের বিরুদ্ধে নাটোরের সিংড়া আমলি আদালতে জালিয়াতির মামলা দায়ের করা হয়েছে।

ব্যাচেলর অব সোশ্যাল সায়েন্সের (বিএসএস) সনদ জালিয়াতি করে ভুয়া সনদ তৈরি ও ব্যবহারের মাধ্যমে কাহালু উপজেলার আজিজুল হক মেমোরিয়াল ডিগ্রি কলেজের সভাপতি হওয়ায় এ মামলা করা হয়।

সনদের প্রকৃত মালিক দাবিদার নাটোরের সিংড়া উপজেলার মো. মাসুদ আলী বাদী হয়ে নিজেই এ মামলা দায়ের করেন।

আদালতের বিচারক সারোয়ার জাহান বৃহস্পতিবার বিকালে মামলাটি আমলে নিয়ে নাটোরের পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন বাদীপক্ষের আইনজীবী মো. মাসুদ রানা।

শুক্রবার সন্ধ্যায় নাটোর পিবিআই পুলিশ সুপার আল আসাদ মো. মাহফুজুল ইসলাম যুগান্তরকে বলেছেন, এখনো আদালতের নির্দেশনার কপি তারা হাতে পাননি। নির্দেশনার কপি হাতে পেলে দ্রুত তদন্ত করে আদালতে যথাসময়ে প্রতিবেদন দাখিল করবেন।

শুক্রবার সন্ধ্যায় এ ব্যাপারে জানতে চাইলে আজিজুল হক মেমোরিয়াল ডিগ্রি কলেজের সভাপতি সাবেক এমপি মোশাররফ হোসেন যুগান্তরকে বলেছেন, এটা মিথ্যা ও ভিত্তিহীন মামলা। গত ২৮ মে তিনি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রি পাশের মূল সনদ উত্তোলন করেছেন। তার বিরোধী ও দলের মনোনয়নবঞ্চিতরা তার সুনাম ক্ষুণ্ণ করার জন্য কাউকে দিয়ে পরিকল্পিতভাবে এ মিথ্যা মামলা দায়ের করিয়েছেন।

অভিযুক্ত মো. মোশারফ হোসেন (৫১) বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলার বুড়ইল এলাকার মৃত হামির উদ্দিন সরকারের ছেলে। বিএনপির সাবেক এই সংসদ সদস্য বর্তমানে বগুড়া জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এবং আগামী নির্বাচনে দল থেকে প্রাথমিক মনোনয়ন পেয়েছেন। এছাড়া বর্তমানে তিনি কেন্দ্রীয় কৃষক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন।

আদালত ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, নাটোরের সিংড়ার থাওইল গ্রামের মো. মাসুদ আলী জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় গাজীপুরে ১৯৯৩-৯৪ শিক্ষাবর্ষে বিএসএস বিভাগের ছাত্র ছিলেন। তার রেজিস্ট্রেশন নম্বর ২১২৪৯৩ ও পরীক্ষার রোল ১৩৬৮৬৯। সেই বছর মাসুদ আলী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে অকৃতকার্য হলে পরে আর কোনো পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেননি। আসামি মোশারফ হোসেন চতুরতার মাধ্যমে বাদীর রেজিস্ট্রেশন নম্বর ব্যবহার করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় গাজীপুরে ১৯৯৩-৯৪ সেশনে বিএসএসে দ্বিতীয় শ্রেণিতে জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে পাশ দেখিয়ে জাল সনদ সংগ্রহ করেছেন।

২০২৪ সালের ২৪ ডিসেম্বরে সেই সনদ দেখিয়ে বগুড়া আজিজুল হক মেমোরিয়াল ডিগ্রি কলেজের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হিসেবেও নিয়োগ পেয়েছেন।

মামলায় বলা হয়েছে- ওই প্রতিষ্ঠানে সাবেক সভাপতি আসামির সেই সনদ চ্যালেঞ্জ করলে দেখা যায় অভিযুক্ত সাবেক এমপি বাদীর রেজিস্ট্রেশন নম্বর ও সেশন ব্যবহার করে জালিয়াতির মাধ্যমে বিএসএস সনদ তৈরি করেছেন।

মামলার বাদী মাসুদ আলী আশঙ্কা করছেন, আসামি তার (বাদীর) রেজিস্ট্রেশন নাম্বার ব্যবহার করে বড় ধরনের কোনো কর্মকাণ্ড ঘটাতে পারে। যাতে বাদীর চরম ও অপূরণীয় ক্ষতির আশঙ্কা থেকেই তিনি এ মামলা দায়ের করেছেন।

মামলার বাদী মাসুদ রানা বলেন, আমি কৃষক মানুষ। আমার রোল, রেজিস্ট্রেশন নাম্বার জালিয়াতি করে উনি জাল সনদ তৈরি করেছেন, তাই আমি মামলা করেছি। উনি কে বা কী করেন এটা আমার জানার বিষয় না।