
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলায় দোকানঘরের ভাড়া চাওয়ায় দলীয় নেতাকর্মীদের মারধরে মৎস্যজীবী দলের এক নেতার মৃত্যু হয়েছে। নিহত মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের (৫৭) বাড়ি উপজেলার সালমদী নয়াপাড়া গ্রামে। তিনি মাহমুদপুর ইউনিয়ন মৎস্যজীবী দলের সহসাধারণ সম্পাদক ছিলেন। বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার মাহমুদপুর ইউনিয়নের সালমদী বাজারে স্থানীয় বিএনপির কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত জাহাঙ্গীরের ছেলে মো. রাসেল জানান, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের কয়েক দিন পর পাশাপাশি তিনটি দোকানঘর একত্র করে ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির কার্যালয় করা হয়। কার্যালয়টি করেছেন ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মো. জাহাঙ্গীর ও তাঁর চাচা মাহমুদপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি তোতা মিয়া প্রধান। তোতা মিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য।
তিনি বলেন, তিনটি দোকানঘরের মধ্যে দুটি তাঁর চাচার এবং একটি তাঁর বাবার। দলীয় কার্যালয় করার পর দুটি দোকানঘরের ভাড়া নিয়মিত পরিশোধ করা হলেও তাঁদের ঘরের ভাড়া দেওয়া হচ্ছিল না। আজ তাঁর বাবা ভাড়ার জন্য গেলে দলীয় কার্যালয়ে এ নিয়ে বৈঠক হয়। বৈঠকের একপর্যায়ে দুই পক্ষ উত্তেজিত হলে তোতা মিয়া তাঁর বাবাকে থাপ্পড় দেন। তখন তাঁর বাবাও তোতা মিয়ার গায়ে হাত তোলেন। পরে তোতা মিয়ার ছেলে, ভাতিজাসহ অনুসারীরা এসে তাঁর বাবাকে মারধর করেন।
বিএনপির স্থানীয় দুজন নেতা বলেন, তোতা মিয়া জাহাঙ্গীরের গায়ে হাত তোলার পর তিনিও পাল্টা হাত তোলেন। হাতাহাতির বিষয়টি জানতে পেরে তোতা মিয়ার ছেলে খোকন প্রধান, ভাতিজা মো. জাহাঙ্গীরসহ তাঁদের অনুসারীরা এসে তাঁকে (জাহাঙ্গীর) মারধর করেন। একপর্যায়ে জাহাঙ্গীর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনার পর বিএনপি নেতা তোতা মিয়া ও মো. জাহাঙ্গীর এলাকা থেকে পালিয়ে গেছেন।
আড়াইহাজার থানার ওসি নাসির উদ্দিন বলেন, দোকানঘরের ভাড়া চাওয়াকে কেন্দ্র করেই তর্কবিতর্ক হয়। একপর্যায়ে কার্যালয়ের ভেতরেই দোকানমালিককে মারধর করা হয়। এ ঘটনায় স্থানীয় বিএনপি নেতা তোতা মিয়া প্রধান, তাঁর ভাতিজা মো. জাহাঙ্গীর ও অনুসারী নেতা-কর্মীদের জড়িত থাকার অভিযোগ পুলিশ পেয়েছে। বিষয়টি নিয়ে পুলিশ তদন্ত করছে। পুলিশ জানায়, জাহাঙ্গীরের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয় বিএনপি নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আড়াইহাজার উপজেলা বিএনপিতে চারটি ভাগ রয়েছে। একটি অংশের নেতৃত্ব দেন মাহমুদুর রহমান সুমন। নিহত জাহাঙ্গীর হলেন মাহমুদুর রহমান সুমনের অনুসারী।