
শহীদ জিয়ার শাহাদাতের এই দিনটি আমাদের জাতীয় জীবনের সবচেয়ে বেদনার এবং গভীর শিক্ষাগ্রহণের দিন।
.
একটা আশ্রিত রাজ্যসম তলাহীন ঝুড়িকে তিনি মাত্র কয়েক বছরে আত্মমর্যাদাসম্পন্ন স্বাধীন রাষ্ট্রে পরিণত করেছিলেন, দেশকে তুলে দিয়েছিলেন সমৃদ্ধির পথে। প্রেসিডেন্ট জিয়া দায়িত্ব গ্রহণের পর মানুষ অবাক হয়ে দেখলো দব্যমূল্য কমে গেছে, খাদ্য সংকট দূর হয়েছে, কর্ম সংস্থান বৃদ্ধি পেয়েছে। আপাদমস্তক দুর্নীতিতে নিমজ্জিত মুজিবের পরিবর্তে আমরা পেলাম এমন এক নেতাকে যার আত্মীয়-স্বজন পর্যন্ত তাঁর সাথে সাক্ষাত করতে পারতো না। কঠোরভাবে দুর্নীতিমুক্ত এই মানুষটি ব্যক্তিগত জীবনে সুফিদের মতই কৃচ্ছতাসাধন করতেন।
তিনি কৃষিতে বিপ্লব এনেছিলেন, শিল্পে গতি এনেছিলেন। ফরেন রেমিটেন্স আনার পথ তিনিই সুগম করেছিলেন। তাঁর আমলেই ১৯৭৮ সালে শুরু হয়েছিল গার্মেন্টস সেক্টরে বাংলাদেশের যাত্রা।
আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে জিয়া বাংলাদেশকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছিলেন। প্রতিবেশীর দয়ায় টিকে থাকা একটি আশ্রিত রাজ্যসম রাষ্ট্র হঠাৎ করে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এক গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছিল। ওআইসির তিনি ছিলেন অতি গুরুত্বপূর্ণ নেতা। তিনি সার্ক গঠন করে দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের বার্গেনিং পাওয়ার অনেকগুণ বৃদ্ধি করেছিলেন।
একদলীয় শাসন থেকে জাতিকে মুক্ত করে তিনি চালু করেছিলেন বহুদলীয় গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা।
কিন্তু, বাংলাকে কখনোই বেশিদিন স্বাধীন থাকতে দেয়া হয়নি। এই দেশকে স্বাধীনতা, গণতন্ত্র এবং সমৃদ্ধির পথে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি আঞ্চলিক শক্তি সহ্য করেনি। পরিণামে তাঁকে শাহাদত বরণ করতে হয়।
আমাদের এই শ্রেষ্ঠ ভূমিপুত্রকে যে শক্তির কারণে জীবন দিতে হয়েছে, তা এখনো একইভাবে সক্রিয় রয়েছে। জিয়ার জীবন থেকে আমরা শিক্ষা না নিলে আবারো আমাদের নিক্ষিপ্ত হতে হবে দাসত্ব ও স্বৈরাচারী শাসনের গভীর খাদে।
আমিনুল মোহায়মেন