Image description

পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের বিশেষ সুবিধায় দেশের ব্যাংক খাত থেকে লক্ষাধিক কোটি টাকা ঋণ নিয়ে বিদেশে পাচারে অভিযুক্ত এস আলম গ্রুপের তিন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। পৃথক তিন মামলায় ঋণের নামে প্রায় সোয়া ছয় হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের প্রমাণ পেয়েছে দুদক।

আজ রবিবার (২১ ডিসেম্বর) দুদক চট্টগ্রাম-১ সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে এসব মামলা করা হয়েছে বলে কালের কণ্ঠকে নিশ্চিত করেন দুদক চট্টগ্রাম-১ কার্যালয়ের উপপরিচালক সুবেল আহমেদ। মামলাগুলোতে এস আলম গ্রুপের কর্ণধার সাইফুল আলম মাসুদ, তাঁর স্ত্রী ফারজানা পারভীনসহ জনতা ব্যাংক ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের আসামি করা হয়েছে।

এস আলম ভেজিটেবল অয়েল লিমিটেডের ঋণ জালিয়াতির ঘটনায় দুদকের উপসহকারী পরিচালক আপেল মাহমুদ বিপ্লব, এস আলম কোল্ড রোল্ড স্টিল মিলের অর্থ কেলেঙ্কারির ঘটনায় দুদকের উপসহকারী পরিচালক কমল চক্রবর্ত্তী এবং এস আলম ট্রেডিং কম্পানি লিমিটেডের অর্থ কেলেঙ্কারির ঘটনায় দুদকের উপসহকারী পরিচালক সবুজ হোসেন বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। এস আলম গ্রুপের তিনটি প্রতিষ্ঠান জনতা ব্যাংক থেকে বিভিন্ন সময়ে ঋণ নিয়ে সুদে-আসলে মোট ছয় হাজার ২৪৩ কোটি ৭৮ লাখ তিন হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে।

মামলার এজাহার অনুযায়ী, ২০০৫ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে চলতি বছরের ৬ মার্চ পর্যন্ত এস আলম ভেজিটেবল অয়েল লিমিটেডের নামে জনতা ব্যাংক থেকে বিভিন্ন পদ্ধতিতে ঋণ নিয়ে সুদসহ মোট দুই হাজার তিন কোটি ৪৮ লাখ ১৪ হাজার ৩০৮ টাকা ২৩ পয়সা আত্মসাৎ করা হয়েছে। এ মামলায় প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক হিসেবে দেখানো সাইফুল আলমের স্ত্রী ফারজানা পারভীনকে প্রধান আসামি করা হয়েছে।

ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইফুল আলমকে করা হয়েছে দ্বিতীয় আসামি। এছাড়া জনতা ব্যাংকের ২৮ জন কর্মকর্তার নাম রয়েছে আসামির তালিকায়।
এস আলম কোল্ড রোল্ড স্টিল মিলস লিমিটেডের নামে ২০১০ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি থেকে চলতি বছরের ৬ এপ্রিল পর্যন্ত বিভিন্নভাবে ঋণ নিয়ে সুদে-আসলে দুই হাজার ২৯৭ কোটি ৭৪ লাখ ৭১ টাকা ৫ পয়সা আত্মসাৎ করা হয়েছে। এই মামলায় প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক সাইফুল আলমকে প্রধান আসামি করা হয়েছে।

পাশাপাশি জনতা ব্যাংকের ২৫ জন কর্মকর্তাকেও আসামি করা হয়েছে।
এস আলম ট্রেডিং কম্পানি প্রাইভেট লিমিটেডের নামে ২০০৫ সালের ১০ মে থেকে চলতি বছরের ৬ এপ্রিল পর্যন্ত সময়ে ঋণ নিয়ে সুদে-আসলে ১ হাজার ৯৪২ কোটি ৫৫ লাখ ৮৯ হাজার ৫৯৩ টাকা ৬১ পয়সা আত্মসাৎ করা হয়েছে। মামলায় সাইফুল আলম ছাড়াও ৩০ জনকে আসামি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে জনতা ব্যাংকের একাধিক কর্মকর্তা রয়েছেন।