Image description

শ্রেণিকক্ষে তালা ঝুলিয়ে দাবি আদায়ের আন্দোলনে যখন শিক্ষকরা ব্যস্ত, তখন বাইরে পরীক্ষা দেওয়ার জন্য অপেক্ষায় ছিল শিক্ষার্থীরা। এমন পরিস্থিতিতে শ্রেণিকক্ষের তালা ভেঙে সরাসরি পরীক্ষা শুরু করান শ্রীবরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মনীষা আহমেদ।

বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) বেলা ১১টার দিকে শ্রীবরদী উপজেলার শ্রীবরদী মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে তিনি পরীক্ষা শুরু করেন। এ সময় তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নুরন নবী।

জানা গেছে, শেরপুর জেলার ৭৪১টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বুধবার থেকে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি পালন শুরু করেছেন। বৃহস্পতিবারও সেই কর্মসূচি অব্যাহত ছিল। এছাড়া, ১ ডিসেম্বর থেকে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা চার দফা দাবিতে লাগাতার কর্মবিরতিতে রয়েছেন। তাদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে সহকারী শিক্ষক পদকে বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) ক্যাডারভুক্ত করা, শূন্যপদে নিয়োগ, দ্রুত পদোন্নতি ও পদায়ন কার্যকর করা, টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেডের বকেয়া পরিশোধ এবং আগের মতো সহকারী শিক্ষকদের অগ্রিম বেতন সুবিধা বহাল রাখা। এসব দাবিতে অনেক বিদ্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করছেন শিক্ষকরা।

এ পরিস্থিতিতে পরীক্ষা চলাকালীন হঠাৎ শ্রেণিকক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অভিভাবকরাও।

শ্রীবরদী মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আসা অভিভাবক মিজান উদ্দিন বলেন, হঠাৎ করে পরীক্ষা বন্ধ হওয়ায় শিশুরা মানসিক চাপে আছে। এতদিন তাদের দাবির কথা মনে থাকলো না, এখন আমাদের বাচ্চাদের পড়াশোনার ক্ষতি করে কিসের আন্দোলন? সরকারকে বেকায়দায় ফেলতেই এই কর্মসূচি।

আরেক অভিভাবক আফজাল মিয়া বলেন, কোমলমতি শিশুদের জিম্মি করে শিক্ষকরা আন্দোলনে নেমেছেন। সরকারকে কঠোর হতে হবে। বাচ্চাদের ভবিষ্যৎ নষ্ট হতে দেওয়া যায় না। প্রয়োজনে এসব শিক্ষকদের বাদ দিয়ে নতুন শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হোক।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মনীষা আহমেদ বলেন, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় গতকাল একটি জরুরি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে শিক্ষকদের অবিলম্বে পরীক্ষায় ফেরার চূড়ান্ত নির্দেশ দিয়েছে। একইসঙ্গে কর্মবিরতি বা শাটডাউন অব্যাহত থাকলে সরকারি চাকরি আইন, আচরণবিধি এবং ফৌজদারি আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানানো হয়েছে।

শিক্ষকদের আন্দোলনের কারণে শিক্ষাবর্ষের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা ও পড়াশোনা ব্যাহত হওয়ায় উদ্বেগ বাড়ছে অভিভাবক ও সচেতন মহলে। তারা অবিলম্বে সংকট নিরসন এবং শিক্ষার্থীদের স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম চালুর দাবি জানান।

শীর্ষনিউজ