বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের স্কুল ও কলেজ জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা চূড়ান্তকরণ সংক্রান্ত সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় অনার্স-মাস্টার্স কলেজ, বিএড স্কেলসহ নানা বিষয়ে সিদ্ধান্ত-আলোচনা হলেও শিক্ষকদের বদলি নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। ফলে বদলির বিষয়টি অমীমাংসিতই রয়ে গেল।
মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের স্কুল ও কলেজ জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা চূড়ান্তকরণ সংক্রান্ত সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব রেহেনা পারভীন উক্ত সভায় সভাপতিত্ব করেন।
সভায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ. এস. এম আমানুল্লাহ, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মিজানুর রহমান, মাউশির মহাপরিচালক অধ্যাপক আব্দুল হান্নান, যুগ্ম সচিব হেলালুজ্জামান, উপসচিব সায়েদ এ. জেড মোরশেদ সহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় উপস্থিত মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের এক কর্মকর্তা দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘আজকের সভায় বদলি নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। বদলির সফটওয়্যার তৈরি না হওয়ায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করার সুযোগও নেই।’
এদিকে বদলির সফটওয়্যার তৈরির জন্য টেলিটক বাংলাদেশকে চিঠি দেওয়া হলেও এখনো তারা কোনো সদুত্তর দেয়নি। ফলে কবে নাগাদ বদলির সফটওয়্যার তৈরি হবে তা নিশ্চিত করতে পারেনি মন্ত্রণালয়।
এ বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (মাধ্যমিক-২) মো. মিজানুর রহমান দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘টেলিটক এখনো কিছু জানায়নি। তাদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ করা হচ্ছে।’
এদিকে দ্রুত বদলি কার্যকর করার লক্ষ্যে একযোগে আন্দোলনে নামার ঘোষণা দিয়েছেন বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) সুপারিশে নিয়োগ পাওয়া শিক্ষকতের বিভিন্ন সংগঠন একত্রিত হয়ে আন্দোলনে নামছেন। আগামী ১০ নভেম্বর বাংলাদেশ বদলি-প্রত্যাশী শিক্ষক ঐক্যজোট ব্যানারে আন্দোলনে নামবেন তারা।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বাংলাদেশ শিক্ষক ঐক্য পরিষদের সভাপতি প্রভাষক মো. সরোয়ার বলেন, ‘আমাদের সংগঠনের আহবানে এনটিআরসিএর সুপারিশপ্রাপ্ত শিক্ষকদের বদলি চালুর দাবিতে বিভিন্ন সংগঠনের সমন্বয়ে সভা করা হয়েছে। সভায় সবাই একত্রিতভাবে আন্দোলনে নামার ঘোষণা দিয়েছেন। আগামী ১০ নভেম্বর এ কর্মসূচি পালিত হবে।’
জানা গেছে, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত শিক্ষকদের বদলির কোনো সুযোগ নেই। এনটিআরসিএ কর্তৃক প্রকাশিত গণবিজ্ঞপ্তিতে আবেদনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠান পরিবর্তনের সুযোগ পেতেন তারা। তবে ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের গণবিজ্ঞপ্তিতে আবেদনের সুযোগ বন্ধ করে দেয় সরকার। এ অবস্থায় বিপাকে পড়েন নিজ বাড়ি থেকে শত শত কিলোমিটার দূরে চাকরি করা শিক্ষকরা। একইসঙ্গে নারী শিক্ষকদের ভোগান্তি বেড়ে যায় কয়েকগুণ।
ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের গণবিজ্ঞপ্তিতে আবেদনের সুযোগ বন্ধ হওয়ার পর বদলি চালুর দাবিতে আন্দোলনে নামেন শিক্ষকদের একাধিক সংগঠন। দীর্ঘ আন্দোলনের পর সাবেক শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বদলি চালুর উদ্যোগ নেন। প্রাথমিকভাবে এনটিআরসিএর সুপারিশপ্রাপ্ত শিক্ষকদের নানা শর্তে বদলি চালুর জন্য একটি নীতিমালা তৈরি করে সরকার। এ সংক্রান্ত পরিপত্র জারির পর মাউশির এক পরিচালকের মাধ্যমে একটি সফটওয়্যার তৈরি করা হয়। তবে এর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দ্বন্দ্ব দেখা দেওয়ায় নতুন করে সফটওয়্যার তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়। এ অবস্থায় দ্রুত বদলি কার্যকর করার দাবিতে আবারও আন্দোলনে নামার ঘোষণা দিলি এনটিআরসিএর সুপারিশপ্রাপ্ত বিভিন্ন সংগঠন।