
সরকার কৌশলগত উদ্যোগ হিসেবে একটি বহুমুখী পরিবহণ পরিকল্পনা গ্রহণে কাজ করছে। এর লক্ষ্য সারা দেশে সমন্বিত ও কার্যকর জাতীয় পরিবহণ ব্যবস্থা গড়ে তোলা।
পরিকল্পনা অনুযায়ী সড়ক, রেল ও নৌপথের সমন্বয়ে সময় ও অর্থ সাশ্রয়ী পরিবহণ ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে।
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী শেখ মঈনুদ্দিন জানিয়েছেন, পরিকল্পনার খসড়া তৈরির কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে।
তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করছি, আমাদের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই পরিবহণ পরিকল্পনার প্রায় ৭০ থেকে ৭৫ শতাংশ কাজ শেষ হবে।’
তিনি আরও বলেন, পরিকল্পনা প্রণয়নের নেতৃত্বে রয়েছে সড়ক পরিবহণ ও সেতু মন্ত্রণালয়। এতে বিদ্যমান রুটগুলোর মানচিত্র তৈরি, পণ্য ও যাত্রী চলাচলের তথ্য সংগ্রহসহ ব্যাপক ডাটা বিশ্লেষণ করা হচ্ছে।
এর মাধ্যমে অবকাঠামোগত ঘাটতি চিহ্নিত করা, বিনিয়োগের অগ্রাধিকার নির্ধারণ এবং সবচেয়ে কার্যকর পরিবহণ মাধ্যম বাছাই করা হবে।
শেখ মঈনুদ্দিন জানান, পরিকল্পনাকে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন করতে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ও বিশ্বব্যাংককে যুক্ত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো উন্নত দেশগুলোর পরিবহণ ব্যবস্থাপনার অভিজ্ঞতার আলোকে পরামর্শ দিতে পারবে।
তিনি আরও বলেন, পরিকল্পনার চলমান ধাপে সড়ক, রেল ও নৌপথের সমন্বয়কে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এছাড়া দেশের বন্দর, স্থানীয় বাণিজ্যকেন্দ্র, রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল ও পর্যটনের মত গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় এলাকাগুলোকে সংযুক্ত করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
তবে বিমান খাতকে এখনো পুরোপুরি এই পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি, বিশেষ করে পণ্য পরিবহণের ক্ষেত্রে। কারণ, খাতটিকে এখনো বিকাশমান পর্যায় হিসেবে ধরা হচ্ছে।
তিনি বলেন, পরিকল্পনার অন্যতম উদ্দেশ্য শক্তিশালী ও সমন্বিত কাঠামো গড়ে তোলা। যাতে ভবিষ্যতের সব অবকাঠামো প্রকল্প এই মাস্টারপ্লানের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বাস্তবায়িত হয়।
শেখ মঈনুদ্দিন বলেন, পরিবহণ খাতের সবচেয়ে বড় সমস্যা সমন্বয়ের অভাব।
এ সমস্যা দূর করতে নৌপরিবহণ, সড়ক ও জনপথ, বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ এবং বিমান পরিবহণসহ সংশ্লিষ্ট সব দপ্তরকে এক ছাতার নিচে এনে পরিচালনার প্রস্তাব দেন প্রধান উপদেষ্টার এই বিশেষ সহকারী।
অতীতে পরিকল্পনার ঘাটতির উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, ঢাকা বিমানবন্দরে অবতরণের পর যাত্রীদের জন্য কোনো সরকারি গণপরিবহণ নেই। ফলে যাত্রীদের অনেক দূর হেঁটে গিয়ে গাড়ি ভাড়া করতে হয়।
তিনি আরও জানান, ভবিষ্যতে এ সমস্যার সমাধানে মেট্রোরেল সম্প্রসারণ এবং বিমানবন্দর থেকে যাতে সহজে বাস ও ট্যাক্সি পাওয়া যায় তার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।