Image description

প্রবাসীদের ভোটাধিকার বাস্তবায়নের দাবিতে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে বাংলাদেশ দূতাবাসের সামনে এক বিশাল সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশি নাগরিক পরিষদ, ফ্রান্সের আয়োজনে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সমাবেশে বক্তারা অভিযোগ করেন, গত ৫৪ বছরে কোনো সরকারই প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে আন্তরিক পদক্ষেপ নেয়নি। অথচ প্রবাসীরা রেমিট্যান্স পাঠিয়ে দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখছেন।

 
ভোটাধিকার তাদের মৌলিক ও সাংবিধানিক অধিকার যা অবিলম্বে বাস্তবায়ন করতে হবে।

 

ফ্রান্সের সবচেয়ে বড় বাংলাদেশি সামাজিক সংগঠন বাংলাদেশি নাগরিক পরিষদ, ফ্রান্স আয়োজিত এ সমাবেশে বিপুলসংখ্যক বাংলাদেশি নারী-পুরুষ উপস্থিত হয়ে নিজেদের সাংবিধানিক দাবির প্রতি দৃঢ় সংহতি জানান।

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি আবুল খায়ের লস্বর এবং সঞ্চালনায় ছিলেন সাধারণ সম্পাদক ইমরান আহমদ। প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন উপদেষ্টা ও কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম।

 
এ ছাড়া বক্তব্য দেন ভাইস চেয়ারম্যান গোলাম ফারুক ভূঁইয়া, আইসা পরিচালক ওবায়দুল্লাহ কয়েছ, অনলাইন একটিভিস্ট মীর জাহান, সাংবাদিক নেতা ও ইউরো বার্তা সম্পাদক মুহাম্মদ নূরুল ইসলাম, এটিএন বাংলার রিপোর্টার রাবেয়া আক্তার সুবর্ণা, সাংবাদিক নেতা নয়ন মামুন, লন্ডন ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী ইডনি মুসলিম উদ্দিন, প্যারিস বাংলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি এনায়েত হোসেন সুহেল, সেক্রেটারি মো. আব্দুল মালিক হিমু, কার্যনির্বাহী সদস্য ফারিয়া মাহবুবা আলম, বন্ধন পরিচালক শিউলি গিয়াস, পরিষদ ট্রেজারার আরিফুর রহমান, প্রবাসের আলো সম্পাদক ওমর ফারুক, কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব জিয়া উদ্দিন চৌধুরীসহ অনেকে।

 

বক্তারা স্মরণ করেন ফ্যাসিবাদবিরোধী গণ-অভ্যুত্থানে প্রবাসীদের অবদান এবং রেমিট্যান্স বন্ধ আন্দোলনের কথা, যা দেশে গণ-আন্দোলনে নতুন গতি সঞ্চার করেছিল। তারা বলেন, ফ্রান্সে প্লাস দো লা বাস্তিল, প্লাস দো লা নেশন এবং প্লাস দো লা রিপাবলিকসহ বিভিন্ন স্থানে প্রবাসীরা নেতৃত্ব দিয়েছিল যেখানে পাঁচ হাজারেরও বেশি মানুষ বাংলাদেশের আন্দোলনের প্রতি সংহতি প্রকাশ করেছিলেন।

বক্তারা আরো বলেন, প্রবাসীরা এমন এক বাংলাদেশ দেখতে চান যেখানে সমতা, আইনের শাসন ও সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হবে।

 
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনেই প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়ে তারা বলেন, এবার যদি ভোটের অধিকার দেওয়া না হয়, তবে আর কখনোই তা হবে না।

 

সমাবেশ শেষে সংগঠনের সভাপতি আবুল খায়ের লস্বরের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল রাষ্ট্রদূতের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেন। স্মারকলিপি গ্রহণ করেন দূতাবাসের ফার্স্ট মিনিস্টার ওয়ালিদ বিন কাশেম।

স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে অর্থনীতি, সংস্কৃতি ও সংকট মোকাবেলায় প্রবাসীদের অবদান অনস্বীকার্য হলেও তারা আজও মৌলিক ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত। এতে অবিলম্বে প্রবাসীদের ভোটাধিকার বাস্তবায়নের জন্য একটি স্পষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণা, সরকারের প্রতিনিধি ও প্রবাসী সংগঠনের সমন্বয়ে কার্যকরী দল গঠন, প্রবাসীদের ভোটার তালিকা প্রণয়ন, একযোগে ভোট প্রদানের ব্যবস্থা এবং প্যারিস দূতাবাসে একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে লিয়াজোঁ অফিসার হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার দাবি জানানো হয়।

 
একইসঙ্গে বলা হয় ভারত, তুরস্ক ও যুক্তরাষ্ট্রসহ বহু দেশ ইতিমধ্যেই তাদের প্রবাসীদের ভোটাধিকার দিয়েছে; বাংলাদেশও চাইলে সেই অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিতে পারে।