
Julfiker Shahadat(জুলফিকার শাহাদাত)
ডাকসু নির্বাচন আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বর্তমান সরকারের জন্য একটা এসিড টেস্ট। এখানে কিছু কিছু দল নির্বাচন এড়ানোর চেস্টা করতে পারে। হল রাজনীতি নিয়ে সৃষ্ট মতবিরোধ আপাত মীমাংসা হয়েছে মনে করা হলেও তা যে কোন সময় বিস্ফোরিত হতে পারে। ছাত্রদল নির্বাচনী পরিবেশ নেই বা অন্য কোন অজুহাতে নির্বাচন থেকে পিছু হাঁটার পথ নেই।
কারণ বি এন পি দ্রুত সংসদ নির্বাচনের দাবীতে সোচ্চার আবার ডাকসু নির্বাচন পেছাতে চাইলে তারা সমালোচনার মুখে পড়বে। নির্বাচন পেছানোর আন্দোলনে বাম ছাত্রসংগঠনগুলোও খুব বেশি সুবিধা করতে পারবে না। তাই নিশ্চিত, যথাসময়ে ঢাকসু নির্বাচন হচ্ছে।
এবারের ডাকসু নির্বাচন খুবই চ্যালেঞ্জিং। এটি হবে স্মরণীয় ঢাকসু নির্বাচন। নির্বাচনের হিসাব খুবই জটিল। বিশেষ করে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ভোট কারা পাচ্ছে?
ছাত্রশিবির বিশাল ফ্যাক্টর এখানে। তারা দলীয় ব্যানারে নির্বাচন করছে না। তাদের প্রার্থী তালিকায় সংখ্যালঘু, জুলাই আহত যোদ্ধা, সাধারণ ছাত্রী সবাইকে স্থান দিয়েছে এবং তারা ঘোষণা দিয়েছে হল কমিটি তারা ঘোষণা দেবে না।
ছাত্রশিবিরের প্রার্থী তালিকা ও নির্বাচনী ঘোষণায় তারা বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিয়েছে নি:সন্দেহে।
যত দ্রুত তারা নির্বাচনী প্যানেল ঘোষণা করেছে অন্য দলের পক্ষে তা সম্ভব হয়নি। এর কারণ, দলীয় বিদ্রোহ। শিবির প্রার্থী তালিকা দেয়ার পরও যেভাবে নিরুত্তাপ থাকতে পেরেছে অন্য দলে সেটা সহজ হবে না। তাই ছাত্রদল ঘোষণা দিয়েছে, প্রার্থী ঘোষণা দেবেন তারেক রহমান।
এখন ভোটের হিসাব করতে গেলে দেখা যায়, নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ভোট কারা পাচ্ছে? আমার মনে হয় এখানে উমামার প্যানেল এগিয়ে থাকবে। উমামা ছাত্রলীগের একটা বড় অংশের ভোট পেলেও পাশ করে আসবে কি না সন্দেহ। ছাত্র দলে প্রার্থী ঘোষণার আন্তকোন্দল নিয়ে সন্দেহ থেকে যায়। আর মেঘমল্লার বসুও ছাত্রলীগের একটা অংশের ভোট পাবে। তার দলের নিজস্ব ভোটার কম। তাই তার দলেরও জয়লাভের সম্ভাবনা নেই। কারণ ইতোমধ্যে ঢাবিতে তার এবং আরও কয়েকজন ছাত্রনেতার দীর্ঘ ছাত্রত্ব নিয়ে প্রশ্ন ওঠেছে। ছাত্রলীগের ভোট বিভক্তির পর আসে সাধারণ ছাত্রদের ভোটের হিসাব। এক্ষেত্রে শিবিরের ভোট পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
তাদের সাম্প্রতিক বিভিন্ন ছাত্রবান্ধব কর্মকাণ্ডের কারণে সাধারণ ছাত্রদের একটা বড় অংশের ভোট তারা পেতে পারে। এন সি পি র ভোটও ছাত্রশিবিরের প্যানেল পাবে। এছাড়া তাদের মধ্যে নেই আভ্যন্তরীণ কোন্দল। এক্ষেত্রে ছাত্রশিবিরের জয়লাভের সম্ভাবনা বেশি। ছাত্রদলকে আগামীর ক্ষমতাসীন দল মনে করে সাধারণ ছাত্ররা বিভিন্ন গণরুম বা র্যাগীং এর আশংকায় নির্বাচনে এড়িয়ে যেতে পারে। ছাত্রলীগের পক্ষে যদি ছাত্রদল উদারও হয় দিনশেষে ছাত্রলীগের ভোট ছাত্রদল পাবে না। কারণ, ছাত্রলীগ আগামীতে ওঠে দাঁড়াতে একটা প্ল্যাটফর্ম খুঁজবে, এ প্ল্যাটফর্ম ছাত্রদল, ছাত্রশিবির নয়।
ছাত্রশিবির যদি ডাকসুতে জয়লাভ করে তাহলে সেটা হবে একটা ইতিহাস। এটি আগামী নির্বাচনেও প্রভাব ফেলতে পারে। তাই আগামী সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আমাদের অপেক্ষা করতে হবে।