Image description

সড়ক নির্মাণ না হওয়ায় দীর্ঘদিন ধরে ভুগছিলেন বাঁশখালী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। বারবার সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে তাগদা দিয়েও কাজ হয়নি। সেই সড়কটি রাতারাতি নির্মিত হয়েছে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক (ডিসি) ফরিদা খানমের আসা উপলক্ষে। সোমবার গভীর রাতে তীব্র বৃষ্টির মধ্যেই ইট বিছানো (সোলিং) সড়কটি নির্মিত হয়। এ সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে সামাজিক মাধ্যমে চলছে নানা আলোচনা। 

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, মঙ্গলবার বিকেলে বাঁশখালী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের জয়ন্তী কর্নার, স্যানিটারি নেপকিন ভেন্ডিং মেশিন উদ্বোধন ও আলোচনা সভায় যোগ দেন ডিসি ফরিদা খানম। উপজেলা সদরের প্রধান সড়কের সঙ্গেই বিদ্যালয়ের প্রধান ফটক। কিন্তু ডিসিকে বহনকারী গাড়িকে যাতে কাদা না মাড়াতে হয়, তাই সোমবার গভীর রাতে বৃষ্টির মধ্যেই সড়কটির নির্মাণকাজ শেষ করা হয়। মঙ্গলবার সকালে বিদ্যালয়ে এসে একদিন আগের কাদামাখা সড়কের জায়গায় ইট বিছোনা সড়ক দেখে চোখ কপালে ওঠে শিক্ষার্থী-শিক্ষকসহ সংশ্লিষ্টদের। এতে বিস্মিত হন স্থানীয় বাসিন্দারাও।

শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলা জানা গেছে, সড়কটি দীর্ঘদিন ধরেই বেহাল। অনেকবার এটি নির্মাণের দাবি উঠেছে। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছে। কিন্তু দীর্ঘদিনেও সেটি নির্মাণ হয়নি। অথচ জেলা প্রশাসকের আসার খবরে রাতারাতি সড়কটি নির্মিত হয়েছে। তাদের ভাষ্য, এ ঘটনায় প্রমাণিত হয়েছে, প্রশাসন চাইলে অনেক আগেই সড়কটি নির্মাণ করা যেত। কেন এতদিন শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের কাদামাখা সড়ক মাড়িয়ে যাতায়াত করতে হয়েছে? উপজেলার অন্য কাদামাখা সড়কে যদি ডিসি যান, তাহলে সেগুলোও হয়তো রাতারাতি নির্মিত হবে!

সড়কটি নির্মাণে প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে বলে জানা গেছে। কয়েকজন শ্রমিক বলেন, এখানে ২০ গাড়ি বালু ও ১৩ হাজারের মতো ইট ব্যবহার করা হয়েছে। কিন্তু ভারী বৃষ্টিতে ভিজে কাজে আগ্রহী ছিলেন না ৩৩ শ্রমিক। কিন্তু প্রশাসনের কর্মকর্তারা ইচ্ছার বিরুদ্ধে কাজ করিয়েছেন। 

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মনোতোষ দাশ সমকালকে বলেন, অনেক আগে থেকেই তারা মাঠের এক পাশে সড়ক নির্মাণের আবেদন করেছিলেন। সেটি না হওয়ায় জেলা প্রশাসকের আসা উপলক্ষে মাঠের মাঝখানে অস্থায়ী সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে। তবে সেটি উঠে যাবে। এই সড়ক নির্মাণে তাদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। এটি করেছে উপজেলা প্রশাসন। 

তবে বাঁশখালীর ইউএনও মোহাম্মদ জামশেদুল আলমের দাবি, সড়কটি শুধু জেলা প্রশাসকের জন্য নির্মাণ করা হয়নি। শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে অসুবিধা হচ্ছিল। এ কারণে প্রকল্পের মাধ্যমেই সড়কটি নির্মাণ করা হয়েছে।