Image description
 

হঠাৎ করে স্লুইসগেটের পানি ছেড়ে দেওয়ায় তলিয়ে গেছে পাবনার সুজানগর উপজেলার গাজনার বিলের ২০০ বিঘা আমন ধানের ক্ষেত। কীভাবে এই ক্ষতি পোষাবেন তা ভেবে দিশাহারা হয়ে পড়েছেন কৃষক।

 

কৃষকদের অভিযোগ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কৃষকদের সঙ্গে আলোচনা না করে স্লুইসগেটের পানি ছাড়ায় এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দাবি, পাটচাষি ও মৎস্যসম্পদের কথা চিন্তা করে পানি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে কৃষকদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

 

স্থানীয় কৃষক বকুল শেখ জানান, এবার ১০ বিঘা জমিতে তিনি আমন ধান বপন করেছেন। তার মধ্যে তলিয়ে গেছে সাত বিঘা জমির ধান। কৃষির উপর নির্ভর করে জীবিকা নির্বাহ করায় ক্ষতিপূরণ না পেলে বিপদের মধ্যে পড়বেন বলে জানান তিনি।

শুধু বকুল শেখই নন, তার মতো আরো শতাধিক কৃষকের কপালে একই চিন্তার ভাঁজ। হঠাৎ করেই তালিমনগর স্লুইসগেটের পানি ছেড়ে দেওয়ার কারণে তলিয়ে গেছে ওই এলাকার বেশিরভাগ বোনা আমন ধানের ক্ষেত।

কৃষক রিজাই শেখ বলেন, আমাদের এখানে তালিমনগর স্লুইসগেট নিয়ন্ত্রণ করেন ইউএনও। কিন্তু তিনি আমাদের সঙ্গে কোনো আলোচনা বা পরামর্শ না করেই পানি ছেড়ে দিয়েছেন। এক রাতের মধ্যেই ধানের চারা সব ডুবে গেছে। এর আগে কখনো এমন হয়নি।

কৃষক মকবুল হোসেন বলেন, বিলের ৫০০ বিঘা জমির মধ্যে ২০০ বিঘার আমন ধানক্ষেত এখন পানির নিচে। যদি ধীরে ধীরে অল্প করে পানি ছাড়া হতো, তাহলে ক্ষতির মুখে পড়তে হতো না আমাদের।

এ বিষয়ে সুজানগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মীর রাশেদুজ্জামান রাশেদের দাবি, পাটচাষিদের চাহিদার প্রেক্ষিতে ও বিলে মৎস্যসম্পদের কথা চিন্তা করে জুলাইয়ের শুরুতে পানি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কারণ, পাট কাটার উপযুক্ত হয়ে গেছে। কিন্তু পানির সংকট রয়েছে। এছাড়া জোয়ারের পানির সঙ্গে রেণু পোনা বিলে আসে। এসব মিলিয়ে পানি ছাড়া হয়।

তবে যদি কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হন, আমাদের জানালে কৃষি বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় করে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের প্রণোদনার মাধ্যমে ক্ষতিপূরণের উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

সুজানগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফারুক হোসেন চৌধুরী বলেন, পানি ছাড়ার বিষয়ে কৃষকরা আমাদের জানিয়েছিলেন পানি যেন একবারে না ছেড়ে আস্তে আস্তে ছাড়া হয়।

বিষয়টি আমরা ইউএনও স্যারকে জানিয়েছিলাম; কিন্তু উঁচু এলাকার পাটচাষিদের চাপ ও দাবির প্রেক্ষিতে পানি ছাড়তে তিনি বাধ্য হন। এখানে আসলে সবার কথাই মাথায় রাখতে হয়। তবে পাম্প হাউসের মাধ্যমে পানি টেনে নিলে বেশিরভাগ জমির ধান রক্ষা পাবে।

কৃষি কর্মকর্তা জানান, সুজানগর উপজেলায় এ বছর ২ হাজার ৭৭০ হেক্টর জমিতে বোনা আমন ধান আবাদ হয়েছে। এর বিপরীতে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪ হাজার ৩৭৭ মেট্রিক টন চাল।