Image description
প্রবাসী মন্ত্রণালয়ে তড়িঘড়ি যোগদানপত্র গ্রহণ!

ফ্যাসিস্ট হাসিনার দোসর রিয়াদস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত পুলিশের সাবেক আই জি পি জাবেদ পাটোয়ারির পর এবার জেদ্দা থেকে পালিয়ে গেলেন কনস্যুলেটের লেবার কাউন্সেলর ফ্যাসিস্ট হাসিনার রাতের ভোটের কারিগর কাজী এমদাদুল ইসলাম। ২০১৮ সালের নির্বাচনের সময় তিনি সিলেটের ডিসি ছিলেন। এরপূর্বে তিনি গোপালগঞ্জের ইউ এ ও পদে দায়িত্ব পালন করেন। ছাত্রলীগের সাবেক নেতা ছিলেন বলে ফ্যাসিবাদের আমলে তার আলাদা প্রভাব ছিল। গত ৩০ জুন তারিখে বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল জেদ্দা থেকে তিনি রিলিজ অর্ডার নেন।

রিলিজ নেয়ার পর ছয়দিন মিশনের কর্মকর্তারা জয়েনিং টাইম কাটানোর পর সশরীরে দেশে এসে যোগদানের কথা। কিন্ত ফ্যাসিস্ট হাসিনার দোসর কাজী এমদাদুল ইসলাম ঢাকাতে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে শীর্ষ কর্মকর্তাদের সাথে আতাত করে যোগদানপত্রটি কারো মারফত পাঠিয়ে দেন। প্রবাসী মন্ত্রণালয়ের মিশন শাখার উপ-সচিব মাকসুদা খন্দকার অত্যন্ত গোপনীয়তার সাথে যোগদান পত্রটি গ্রহণ করেন এবং অসম্ভব দ্রুততার সাথে তাকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে ন্যাস্ত করেন। ইমিগ্রেশনে কথা বলে জানা যায়, গত একসপ্তাহের মধ্যে লেবার কাউন্সেলর কাজী এমদাদুল ইসলাম দেশে আসেননি। সাবেক লেবার কাউন্সেলর কাজী এমদাদুল ইসলামের খোঁজে জেদ্দার একটি সূত্র জানায়, তিনি বৃহস্পতিবার রাতে জেদ্দা থেকে ঊীরঃ নিয়েছেন এবং ঢাকায় না এসে সপরিবারে তিনি লন্ডন চলে গিয়েছেন। এর আগেও দুবাই থেকে এন এস আই থেকে নিযুক্ত কাউন্সেলর বদরুদ্দীন আহমেদ বিদ্যুৎ একই কায়দায় পলায়ন করেন। এছাড়াও রাষ্ট্রদূত হারুনুর রশীদ মেক্সিকো থেকে এবং সাঈদা মুনা তাসনীম লন্ডন থেকে পলাতক রয়েছেন।

জেদ্দা কনস্যুলেটে কথা বলে জানা যায়, জেদ্দা মিশনে কর্মরত কাউন্সেলর হজ জহিরুল ইসলাম পলায়নের জন্য নানা ফন্দিফিকির করছেন। তিনি বর্তমানে কারাগারে আটক সাবেক নির্বাচন কমিশন সচিব এবং স্বরাষ্ট্র সচিব জাহাঙ্গীর আলমের আপন ভাই। ২০২৪ সালের ডামি নির্বাচনের জন্য তাকে বাধ্যতামূলক অবসর দিয়ে কারাগারে প্রেরণ করা হয়। জানা গেছে, সাবেক রাষ্ট্রদূত জাবেদ পাটোয়ারীকে আমেরিকাতে পলাতে সাহায্য করেন জেদ্দার সাবেক কনসাল জেনারেল বর্তমানে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক নাজমূল হক। পলাতক লেবার কাউন্সেলর কাজী এমদাদকে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে উপস্থিত না হয়েই যোগদানপত্র জমা দিতে সহায়তা করেন উপ-সচিব মাকসুদা খন্দকার। এভাবে ফ্যাসিবাদী আমলে নিয়োগপ্রাপ্ত এক একজন কর্মকর্তা আরেকজন দুর্নীতিবাজকে পালিয়ে যেতে সুযোগ করে দিচ্ছেন।

কিছুদিন পূর্বে জেদ্দার সাবেক কনসালে জেনারেল এবং বর্তমানে বাংলাদেশ দূতাবাস মস্কোর ডেপুটি মিশন প্রধান ফয়সাল আহমেদও মস্কো থেকে পালিয়ে যান। এভাবে চলতে থাকলে ফ্যাসিবাদী আমলের ডামি নির্বাচনের কারিগরদের বিচার কখনোই সম্ভব হবে না। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে প্রবাসী মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব মাকসুদা খন্দকার গতকাল ইনকিলাবকে বলেন, আমি ছোট চাকরি করি। জেদ্দার পলাতক লেবার কাউন্সেলর কাজী এমদাদুলের ঢাকায় উপস্থিত না হয়ে মন্ত্রণালয়ে যোগদানপত্র গ্রহণের বিষয়টি সচিবসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সবাই জানেন। প্রবাসী মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেষেই পলাতক লেবার কাউন্সেলর কাজী এমদাদুলের যোগদানপত্রের ফাইল অ্যাপ্রুভালের ব্যবস্থা করেছি। এ ব্যাপারে তার কোনো দোষ নেই এবং যা’হয়েছে তা’ উপর মহলের নির্দেষেই হয়েছে বলে উপ-সচিব মাকসুদা আক্তার দাবি করেন।