জুলাই গণহত্যার মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে। এতে শেখ হাসিনাকে হত্যার নির্দেশদাতা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। অন্য আসামিরা হলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন।
রবিবার দুপুর ১২টার দিকে অভিযোগ দাখিলের শুনানি শুরু হয়। শুনানি টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচার করা হচ্ছে।
আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল প্রসঙ্গে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম গতকাল শনিবার এক আলোচনা সভায় শেখ হাসিনাকে ‘গুম ও আয়নাঘরের নিউক্লিয়াস’বলে উল্লেখ করে বলেন, “বিচারের ক্ষেত্রে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি দেখা যাবে। আমরা বিচার প্রক্রিয়া এগিয়ে নেওয়ার বিষয়ে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।”
বিচারের কাজ পুরোদমে এগোচ্ছে জানিয়ে চিফ প্রসিকিউটর বলেন, “তদন্ত শেষ করতে যুক্তিসঙ্গত সময় লাগবে।”
এ সময় ১০ থেকে ১৫টি উল্লেখযোগ্য গুমের ঘটনার তদন্ত সম্পন্ন হয়েছে বলেও জানান তিনি। চিফ প্রসিকিউটর আরও বলেন, “জুন মাসের মধ্যে প্রতিবেদনগুলো পাওয়া যাবে।”
চিফ প্রসিকিউটর জানান, বিচারের ক্ষেত্রে তারা খুবই সাবধানতা অবলম্বন করছেন। বিচারে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড রক্ষা করা, মানবাধিকার রক্ষা করা, বিচারের নামে অবিচার যাতে না হয়, যেগুলো অতীতে হয়েছে, সেগুলো যেন না হয়, সে বিষয়ে তারা সতর্ক রয়েছেন বলেও জানান।
গত ১২ মে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলার তদন্ত শেষ হয়। ওইদিন এক ব্রিফিংয়ে চিফ প্রসিকিউটর বলেছিলেন, “জুলাই আগস্টের আন্দোলনে নির্বিচারে ১৪শরও বেশি মানুষ হত্যার দায় শেখ হাসিনার। তার বিরুদ্ধে নির্বিচারে হত্যার নির্দেশনা, প্ররোচনা, উস্কানিসহ পাঁচ অভিযোগের প্রমাণ মিলেছে বলে জানিয়েছেন চিফ প্রসিকিউটর। একইসঙ্গে আসাদুজ্জামান খান কামাল ও চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধেও মিলেছে অপরাধের প্রমাণ।”
উল্লেখ্য, জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন নির্মূলে গুলি, হত্যার নির্দেশদাতা ও পরিকল্পনাকারী হিসেবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচারিক কার্যক্রম চলছে। প্রায় দেড় হাজার মানুষ প্রাণ হারায় এই আন্দোলনে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মধ্যে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের প্রায় ১৫ বছরের শাসনের অবসান হয়। পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে ভারতে চলে যান শেখ হাসিনা।
এরপর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গত বছরের ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নেন। জুলাই-আগস্টের আন্দোলন নির্মূলে পরিচালিত জাজ্বল্যমান মানবতাবিরোধী অপরাধে বিচার হচ্ছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে।
শীর্ষনিউজ
