
ফরিদপুরের নগরকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সফর আলীকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। শুক্রবার (৩০ মে) বিকেলে নগরকান্দা উপজেলার ডাঙ্গী ইউনিয়নের ভবুকদিয়া এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সংগঠক বৈশাখী ইসলাম বর্ষার ওপর হামলার পরিপ্রেক্ষিতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) মো. শামসুল আজম বলেন, ‘প্রশাসনিক কারণে নগরকান্দা থানার ওসি মো. সফর আলীকে থানা থেকে প্রত্যাহার করে ফরিদপুর পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে।’
তিনি আরও জানান, শনিবার ফরিদপুরের পুলিশ সুপার এই আদেশ জারি করেন।
এর আগে গত শুক্রবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সংগঠক বৈশাখী ইসলাম বর্ষা নগরকান্দা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেন। অভিযোগ দেওয়ার পর থানার পথ ধরে ভবুকদিয়া এলাকায় ফেরার পথে তিনি সন্ত্রাসী হামলার শিকার হন।
এই হামলার ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয়ভাবে ধারণা করা হচ্ছে, অভিযোগ দেওয়ার জের ধরেই এ হামলা হয়েছে।
ফরিদপুর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক শাহ্ মো. আরাফাত বলেন, ‘ভবুকদিয়ায় হামলার খবর পেয়ে আমরা ২০ থেকে ২৫ মিনিটের মধ্যে ঘটনাস্থলে পৌঁছে যাই। দুই থেকে তিন ঘণ্টা ধরে আমরা সেখানে আছি। কিন্তু প্রশাসনের কোনো সাড়া নেই। আমাদের ওপরও হামলা হয়, ধস্তাধস্তি হয়, তবু প্রশাসন নীরব ভূমিকা পালন করেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সেনাবাহিনীর ক্যান্টনমেন্টেও ফোন করা হয়েছিল। কিন্তু সেখান থেকেও কোনো সাড়া আসেনি। আমরা যারা ২০২৪ সালের আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছি, তাদের নিরাপত্তা আজ হুমকির মুখে।’
শাহ্ মো. আরাফাত ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নেতারা এসি গাড়ি ও পুলিশ প্রটেকশন নিয়ে চলাফেরা করেন, অথচ জেলা পর্যায়ে থাকা সংগঠকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করছেন না। এটি শহীদদের রক্তের সঙ্গে বেঈমানির শামিল।’
এর আগে বৈশাখী ইসলাম বর্ষা বলেন, ‘আমাকে রাস্তায় ফেলে বিএনপির লোকজন মেরেছে।’
এই সামগ্রিক ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করে নগরকান্দা থানার ওসি মো. সফর আলীকে তাৎক্ষণিকভাবে থানা থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করে।