
অগ্রিম কর ও ‘সিগারেট পেপার’ আমদানিতে সম্পূরক শুল্ক বাড়ানোর প্রভাবে নতুন অর্থবছরে আরেক দফা বাড়বে সিগারেটের দাম।
সোমবার বাজেট বক্তৃতায় অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “সম্ভাব্য মুনাফার পরিমাণ বিবেচনায় সিগারেট প্রস্তুতকারকদের কাছ থেকে নিট বিক্রয়মূল্যের ওপর ৩ শতাংশের জায়গায় ৫ শতাংশ হারে অগ্রিম কর সংগ্রহের বিধান করা হয়েছে।”
এছাড়া সিগারেট পেপার আমদানির ক্ষেত্রে বাণিজ্যিক আমদানিকারকদের জন্য সম্পূরক শুল্ক হার ১৫০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৩০০ শতাংশ করার কথাও বলেন উপদেষ্টা।
অগ্রিম কর ও সিগারেট পেপার আমদানিতে সম্পূরক শুল্ক বাড়ানোর সিদ্ধান্তকে ‘ইতিবাচক পদক্ষেপ’ বলছে তামাক বিরোধী সংগঠন ‘প্রগতির জন্য জ্ঞান-প্রজ্ঞা’ ও তামাকবিরোধী জোট ‘অ্যান্টি টোব্যাকো মিডিয়া অ্যালায়েন্স- আত্মা’।
তবে এ উদ্যোগ তামাকপণ্যের দাম বৃদ্ধির জন্য যথেষ্ট নয় বলে মনে করছে তারা।
সোমবার এক যৌথ বিবৃতিতে তারা বলেছে, প্রস্তাবিত বাজেটে সব ধরনের সিগারেটের দাম ও করহার অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। এর ফলে সরকার ২০ হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হবে। এছাড়া তরুণ জনগোষ্ঠী সিগারেট ব্যবহারে বিশেষভাবে উৎসাহিত হবে।
প্রজ্ঞা ও আত্মা বলছে, “তামাকবিরোধীদের প্রস্তাব অনুযায়ী, সিগারেট বাজারের প্রায় ৮০ শতাংশ দখলে থাকা নিম্ন এবং মধ্যমস্তরের সিগারেটকে একত্রিত করে সর্বনিম্ন খুচরা মূল্য ৯০ টাকা নির্ধারণ করার পাশাপাশি অন্যান্য স্তরের সিগারেটের দাম বাড়ানো হলে রাজস্ব আয়ের এই সুযোগ হাতছাড়া হবে না এবং জনস্বাস্থ্যের ব্যাপক উন্নয়ন ঘটবে।”
প্রস্তাবিত বাজেটে ‘ষষ্ঠবারের মত’ বিড়ির মূল্য এবং ‘দশমবারের’ মত সম্পূরক শুল্ক অপরিবর্তিত রাখায় ‘হতাশা’ প্রকাশ করা হয় প্রজ্ঞা ও আত্মার পক্ষ থেকে।
বিবৃতিতে তারা বলছে, “জর্দা ও গুলের দামের পাশাপাশি করহার অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। তামাক ব্যবহারকারীদের ৫০ শতাংশের বেশি মানুষ ধোঁয়াবিহীন তামাক ব্যবহার করেন, যাদের অধিকাংশই দরিদ্র এবং নারী।
“মূল্যস্ফীতি এবং মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি বিবেচনায় নিলে এসব পণ্য আরও সস্তা ও সহজলভ্য হয়ে যাবে। দরিদ্র জনগোষ্ঠী বিশেষত নারীরা ধোঁয়াবিহীন তামাকপণ্য ব্যবহারে উৎসাহিত হবে এবং তাদের স্বাস্থ্যঝুঁকিও বেড়ে যাবে।”
প্রজ্ঞার নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের বলেন, “তামাকের কারণে দেশে প্রতিদিন ৪৪২ জন মানুষ মারা যান। তামাকবিরোধীদের কর সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়ন করা হলে তামাকের ব্যবহার ও তামাকজনিত মৃত্যু কমবে এবং সরকারের রাজস্ব আয় বাড়বে।”