
সিলেটে এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে ছাত্রলীগ ক্যাডারের হাতে ২০২০ সালে স্বামীকে আটকে রেখে নববধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের আলোচিত মামলায় বিচার কার্যক্রম অবশেষে শুরু হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে সব আসামির উপস্থিতিতে সুনামগঞ্জের হৃদয় পারভেজ নামে এক সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণের মাধ্যমে সিলেট বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে দীর্ঘ ৫ বছর পর আলোচিত এই মামলাটির বিচার কার্যক্রম শুরু হয়। একই সাথে চাঁদাবাজি ও ছিনতাইয়ের মামলারও বিচার চলবে।
শুরু হওয়া চাঞ্চল্যকর এই মামলার পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আগামী ১৯ মে পরবর্তী তারিখ ধার্য করেছেন আদালতের বিচারক স্বপন কুমার দাস। এর আগে উচ্চ আদালতের আদেশের পর মামলার নথিপত্র দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে আসলে মঙ্গলবার আদালতে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
সিলেট দ্রুত বিচার ট্রাইবুন্যালের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আবুল হোসেন এসব তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, সব আসামির উপস্থিতিতে হৃদয় নামের একজনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেছেন আদালত।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর রাতে টিলাগড় কেন্দ্রিক ছাত্রলীগ ক্যাডাররা সিলেটের এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে স্বামীকে আটকে রেখে এক তরুণীকে (২০) দল বেঁধে ধর্ষণ করে। এ ঘটনায় তার স্বামী থানায় মামলা করেন। এ নিয়ে সিলেটসহ দেশবিদেশে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। জঘন্য এই ঘটনার প্রতিবাদে ও আসামিদের গ্রেফতারের দাবিতে বিভিন্ন সংগঠন সক্রিয় হয়ে উঠে। ঘটনার পর আসামিরা পালিয়ে
গেলেও র্যাব ও পুলিশ অভিযানে তিন দিনের মধ্যে ছয় আসামি ও সন্দেহভাজন দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরবর্তী সময়ে আদালতে ছয়জন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
উল্লেখ, রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে এই আলোচিত মামলাটির বিচার কার্যক্রম দীর্ঘদিন স্থগিত ছিল। হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন প্রত্যাহার করে নেয়ায় গত ১৭ মার্চ সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ খারিজ করে দেন। ফলে সিলেটের এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে ২০২০ সালের তরুণী সংঘবদ্ধ ধর্ষণের চাঞ্চল্যকর মামলায় দু’অভিযোগের বিচার চলবে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে।
এদিকে, গ্রেপ্তার আসামিদের ডিএনএ নমুনা পরীক্ষায় আটজন আসামির মধ্যে ছয়জনের ডিএনএর মিল পাওয়া যায়। ২০২১ সালের ৩ ডিসেম্বর ৮ জনের বিরুদ্ধে মামলার অভিযোগপত্র আদালতে জমা দেন তদন্ত কর্মকর্তা ও মহানগর পুলিশের শাহপরান থানার তৎকালীন পরিদর্শক (তদন্ত) ইন্দ্রনীল ভট্টাচার্য।
আসামিরা হলেন, ছাত্রলীগ ক্যাডার সাইফুর রহমান, শাহ মাহবুবুর রহমান ওরফে রনি, তারেকুল ইসলাম ওরফে তারেক, অর্জুন লস্কর, আইনুদ্দিন ওরফে আইনুল, মিসবাউল ইসলাম ওরফে রাজন, রবিউল ও মাহফুজুর। আট আসামিই বর্তমানে কারাগারে। তারা সবাই ছাত্রলীগের টিলাগড় কেন্দ্রিক রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন।