গৃহস্থালি কীট হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত ছারপোকা এবার অপরাধ তদন্তের ক্ষেত্রে অপ্রত্যাশিতভাবেই ‘গুপ্তচরের’ ভূমিকা রাখতে পারে বলে জানিয়েছেন মালয়েশিয়ার বিজ্ঞানীরা। দেশটির ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্সের (ইউএসএম) গবেষকরা আবিষ্কার করেছেন, এই রক্তচোষা পোকামাকড়গুলো মানুষের রক্ত পান করার পরেও ৪৫ দিন পর্যন্ত অপরাধীর ডিএনএ ধরে রাখতে সক্ষম।
আজ মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে এ খবর জানানো হয়।
এই গবেষণা অনুযায়ী, অপরাধস্থলে যদি ছারপোকা উপস্থিত থাকে, তবে তা পুলিশ তদন্তে গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ সরবরাহ করতে পারে। ছারপোকার পেট থেকে সামান্য রক্ত বিশ্লেষণ করে অপরাধীর লিঙ্গ, চোখের রং, চুল ও ত্বকের রংসহ অন্যান্য ‘ফেনোটাইপিক প্রোফাইলিং’ তথ্য বের করা সম্ভব।

দেশটির কীটতত্ত্ববিদ আব্দুল হাফিজ এবি মাজিদ জানান, এই পোকামাকড়গুলো সাধারণত বিছানার ভাঁজে বা ম্যাট্রেসে লুকিয়ে থাকে। এরা একবার রক্ত পান করার পর বেশি দূর যেতে পারে না, সর্বোচ্চ ২০ ফুটের (৬ মিটার) মধ্যে ঘোরাফেরা করে। তাদের এই বৈশিষ্ট্যই তাদের ফরেনসিক সরঞ্জাম হিসেবে নিখুঁত করে তোলে।
আব্দুল হাফিজ এবি মাজিদ বলেন, যেখানে অপরাধীরা প্রমাণ মুছে ফেলার চেষ্টা করে, সেখানেও লুকিয়ে থাকা ছারপোকা থেকে ডিএনএ সংগ্রহ করা সম্ভব।
গবেষকরা এসটিআর ও এসএনপি মার্কার ব্যবহার করে ডিএনএ বিশ্লেষণ করেন, যা অপরাধী ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যাওয়ার অনেক দিন পরও তার পরিচয় নির্ধারণে সহায়ক হতে পারে। এই গবেষণাটি ছিল ছারপোকা ব্যবহার করে ফরেনসিক অনুসন্ধানের প্রথম নথিভুক্ত ব্যবহার। যদিও এই পদ্ধতিটি কেবল ৪৫ দিনের সময়সীমার মধ্যে কার্যকর, তবুও এটি অপরাধ তদন্তের নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে।