তুরস্কে ছুটি কাটাতে গিয়ে মা-বাবাসহ তাদের দুই শিশুসন্তানের মৃত্যু ঘিরে রহস্য আরও গভীর হয়েছে। প্রাথমিক পর্যায়ে ধারণা করা হয়েছিল খাদ্যে বিষক্রিয়া (ফুড পয়জনিং), কিন্তু তুর্কি গণমাধ্যমের প্রকাশিত নতুন তথ্যে হোটেলে প্রয়োগ করা কীটনাশকের বিষক্রিয়ার দিকে তদন্ত এগোচ্ছে।
তুর্কি-জার্মান বোজেক পরিবারটি জার্মানির হামবুর্গ থেকে ৯ নভেম্বর ইস্তানবুলে ছুটি উদযাপন করতে আসে। তারা ওর্তাকয় এলাকায় জনপ্রিয় স্ট্রীট ফুড (রাস্তার ধারে বেচা খাবার) মাশেল-রাইস, কুমপির, কোকোরেচ ও তুর্কিশ ডিলাইট-খেয়েছিল।
খাবার খাওয়ার পরপরই দুই শিশুর ( ৬ বছরের কাদির এবং ৩ বছরের মাসাল) বমি ও জ্বর দেখা দেয়, পরে তাদের বাবা-মায়েরও একই উপসর্গ দেখা যায়। ১২ নভেম্বর হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নিলেও অবস্থা খারাপ হলে আবার ভর্তি হন। বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) দুই শিশু আর পরদিন মা সিজদেম বোজেক মারা যান। সোমবার (১৭ নভেম্বর) নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বাবা সারভেত বোজেকও মারা যান। খরব এনডিটিভির।
তবে এ হৃদয়বিদারক ঘটনায় নতুন সন্দেহ জন্ম নিয়েছে হোটেলের কীটনাশকবিষয়ক বিষক্রিয়া ঘিরে। সিএনএন তুরক ও সিবিএস নিউজ জানিয়েছে, পরিবারটি যে হার্বর সুইটস ওল্ড সিটি নামের হোটেলে ছিল, সেখানে সম্প্রতি বেডবাগ নিধনে অতি শক্তিশালী কীটনাশক ব্যবহার করা হয়েছিল।
ধারণা করা হচ্ছে-অ্যালুমিনিয়াম ফসফাইড জাতীয় বিষাক্ত কীটনাশক নিচতলার এক কক্ষ থেকে বায়ুনালী দিয়ে উপরের কক্ষে পৌঁছে যেতে পারে।একই হোটেলে আরও দুই পর্যটক ১৫ নভেম্বর অসুস্থ হয়ে পড়েন। বেড বা শয্যার চাদর, বালিশ, কম্বল, পানির বোতলসহ বিভিন্ন জিনিস থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।হোটেল মালিক, কর্মী ও কীটনাশক কোম্পানির কর্মীদেরসহ মোট ১১ জন এখন তদন্তের আওতায়।
তুরস্কের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও প্রসিকিউটর অফিস যৌথভাবে তদন্ত করছে। ফরেনসিক মেডিসিন ইনস্টিটিউট পরিবারের চার সদস্যের মৃত্যুর চূড়ান্ত কারণ নির্ধারণ করবে। এই ঘটনায় তুরস্ক ও জার্মানিতে স্বজনহারা পরিবারের মধ্যে শোক ছড়িয়ে পড়েছে।