একজন ইসরাইলি আইনজীবী অভিযোগ করেছেন যে তার ফিলিস্তিনি মক্কেলকে হেফাজতে নির্যাতন এবং যৌন নির্যাতন করা হচ্ছে। তিনি বলেছেন, প্রতিবার বন্দীর সাথে দেখা করার সময় নির্যাতন আরও তীব্র হয়।
সামিরা মোহিউদ্দিন নামে একজন সাংবাদিককে এক সাক্ষাৎকারে আইনজীবী বেন মারমারেলি বলেছেন, তার একমাত্র ফিলিস্তিনি রাজনৈতিক বন্দী মক্কেল ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ কর্তৃক গুরুতর নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন, যার মধ্যে বারবার যৌন সহিংসতাও রয়েছে।
“এটি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে তিনি আমাকে আর আসতে না বলেছেন, কারণ আমি যখনই আসি, তারা তাকে ধর্ষণ করে,” মারমারেলি বলেন।
তিনি আরও বলেন, যৌন নির্যাতন, যদিও উদ্বেগজনক, নির্যাতনের বৃহত্তর ধরনটির একটি অংশ মাত্র।
মারমারেলি বলেছেন যে তার মক্কেল তাকে “তার পিঠে বুটের দাগ, কব্জিতে শক্ত হাতকড়ার গভীর চিহ্ন এবং “তার সারা শরীরে আঘাতের চিহ্ন” দেখিয়েছেন। তার মতে, যৌন নির্যাতন “কয়েক সপ্তাহে একবার” ঘটে এবং তার সাক্ষাতের সময় ঘটে।
তিনি বলেন, “ফিলিস্তিনি রাজনৈতিক বন্দীরা বছরের পর বছর ধরে কোনও সাক্ষাৎ পায় না। বাইরের বিশ্বের সাথে তাদের একমাত্র সংযোগ হলো একজন আইনজীবীর সাক্ষাৎ।”
মারমারেলি দক্ষিণ ইসরায়েলের সদে তেইমান সামরিক ঘাঁটিতে নির্যাতনের কথাও উল্লেখ করেছেন, যেখানে তিনি দাবি করেছেন যে নির্যাতন এবং যৌন সহিংসতা ব্যাপক এবং অভ্যন্তরীণ নজরদারি ব্যবস্থা দ্বারা নথিভুক্ত।
তিনি বলেন, সদে তেইমানে সব বন্দিকেই ধর্ষণ করা হয়। সবার ওপর নির্যাতন চলে। যদি তারা সত্যিই এসব বন্ধ করতে চাইতেন, ফুটেজ থেকেই বহু বছর আগে ব্যবস্থা নেওয়া যেত। তারা তা করেনি।
২০২৪ সালের আগস্টে ফাঁস হওয়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, সৈন্যরা মাটিতে পড়ে থাকা এক ফিলিস্তিনি বন্দিকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে এবং পরে দাঙ্গা নিয়ন্ত্রণকারী ঢাল দিয়ে ঘিরে মারধর করছে। ওই বন্দিকে পরে গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়া হয়।
ওই ভিডিওটি প্রকাশের পর মানবাধিকার সংগঠনগুলো ব্যাপক ক্ষোভ প্রকাশ করে এবং কেন্দ্রে আটক রাখা ফিলিস্তিনিদের উপর নির্যাতন ও অমানবিক ব্যবহারের তদন্তের দাবি জানায়।
প্রকাশিত ফুটেজ বিতর্ক তীব্র হলে ৩১ অক্টোবর ইসরাইলি সামরিক প্রসিকিউটর ইফাত টোমার-ইয়েরুশালমি পদত্যাগ করেন। স্থানীয় গণমাধ্যম ইয়েদিওত আহরোনোতের প্রতিবেদনে বলা হয়, তিনি স্বীকার করেন যে তিনি ‘সামরিক আইন প্রয়োগকারী সংস্থার বিরুদ্ধে প্রচার রুখতে’ ভিডিও ফুটেজ গণমাধ্যমে ফাঁস করেছিলেন।
মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, এই অভিযোগগুলো ইসরাইলি আটক কেন্দ্রে ফিলিস্তিনিদের ওপর পদ্ধতিগত নির্যাতনের দীর্ঘদিনের অভিযোগকে আরও স্পষ্ট করে। বিশেষ করে গাজা থেকে আটক ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে নির্যাতন, নিখোঁজ হওয়া এবং অমানবিক আচরণের অভিযোগ বাড়ছে।
সূত্র: আনাদোলু