Image description

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) চারুকলা ইনস্টিটিউটের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের এক শিক্ষার্থীকে বেধড়ক মারধরের ঘটনায় শাখা ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছে ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী। বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগপত্র দেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী মো. আলমাস রাফিদ।

এর আগে গতকাল বুধবার (১৯ নভেম্বর) মধ্যরাতে ২ নম্বর গেইট এলাকায় রাহমানিয়া হোটেলের সামনে তাকে মারধরের অভিযোগ উঠে।

এ ঘটনায় অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও চাকসু নির্বাচনের হল সংসদের ভিপি পদপ্রার্থী জামাদিউল আউয়াল সুজাত, মোহাম্মদ ফাহিম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইদ মোহাম্মদ রিদওয়ান ও আরিফসহ আরও কয়েকজন।

অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়, ১৮ নভেম্বর দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় স্টেশনে অবস্থানকালে চারুকলা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী আল মাসরুর ফাহিম, নূর সানি ও জমাদিউল আউয়াল সুজাত তাকে হুমকি দেয়। প্রক্টর অফিসের সামনে থাকা 'হাদিস মুছে চারুকলা ইনস্টিটিউটের নাম লেখায়' সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চারুকলার মানহানি হয়েছে—বিষয়টি নিয়ে চারুকলার মেসেঞ্জার গ্রুপে প্রতিবাদ করায় তাকে টার্গেট করা হয় বলে অভিযোগ করেন রাফিদ।

অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়, স্টেশন থেকে ভ্যানে করে ২ নম্বর গেইটে আসার পর রাত ১টা ২০ মিনিটের দিকে ফাহিম, সানি, সুজাতের সঙ্গে রেদোয়ান (১৭-১৮ সেশন), আরিফ (২০–২১ সেশন), মেহেদী (২০–২১ সেশন) এবং অজ্ঞাত আরও ২০–৩০ জন মিলে তার ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। হামলাকারীরা সবাই ছাত্রদলের মামুন (সদ্য বহিষ্কৃত নেতা) গ্রুপের কর্মী বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।

এই ঘটনায় অভিযুক্ত ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুজাত গণমাধ্যমকে বলেন, এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি। এটি চারুকলার অভ্যন্তরীণ একটি বিষয়। ঘটনার সময় আমরা অনেকে সেখানে উপস্থিত ছিলাম মাত্র। মারধরের অভিযোগটি মিথ্যা। তাদের নিজেদের বিভাগের মধ্যে ঝামেরায় হাতাহাতি হয়েছে।

জানতে চাইলে এই ঘটনায় অভিযুক্ত ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইদ মো. রিদওয়ান বলেন, চারুকলা ইনস্টিটিউটের কিছু অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে আলমাসের সঙ্গে তার বিভাগের সিনিয়রদের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয় এবং একপর্যায়ে মারধর শুরু হয়। আমি শেষ পর্যায়ে গিয়ে সেখানে উপস্থিত হই। শেষের যাওয়ার পর যখন দেখি মারামারি। এখানে চারুকলার যারা জড়িত নিউজে তাদের নাম না এসে সংগঠনের (ছাত্রদলের) নাম আসাটা বিব্রতকর হচ্ছে। এখানে সংগঠনের ব্যানারে কেউ যায়নি, সম্পূর্ণ চারুকলার বিষয় ছিল।

এ ঘটনায় অভিযুক্ত আল মাশরুল ফাহিম জানান, আলমাসের নামে পূর্বে অনেক অভিযোগ রয়েছে, ওর অভিযোগের বিষয়ে একটি তদন্ত চলছে। আলমাস ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের এক সিনিয়রকে নিষেধ করেছিল যাতে তদন্তে ওর বিপক্ষে কোন কথা না বলে। গতকাল ঐ সিনিয়রকে পেয়ে স্টেশনে এইসব বিষয়ে তর্কাতর্কি করে। পরে দুই নম্বর গেটে সিনিয়র এসব বিষয়ে আবার জিজ্ঞাসাবাদ করলে ও মারধর শুরু করে। পরবর্তীতে আমরা অবস্থানকারী যারা ছিলাম তারা ওর ব্যবহার দেখে ওকে গণপিটুনি দিই। ওর ব্যাপারে ডিপার্টমেন্ট এসব বিষয় আমরা অভিযোগ দিয়েছিলাম নানা অভিযোগ রয়েছে তার নামে।

এবিষয়ে সহকারী প্রক্টর সাইদ বিন কামাল বলেন, ‘আমরা এই সম্পর্কে একটা লিখিত অভিযোগপত্র পেয়েছি। অভিযোগ পত্রটি বোর্ড অফ রেসিডেন্স অব হেলথ্ এন্ড ডিসিপ্লিনারি কমিটিতে পাঠানো হবে। সেখান থেকে সব সিদ্ধান্ত দেওয়া হবে।’