যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরের প্রথম মুসলিম ও দক্ষিণ এশীয় বংশোদ্ভূত মেয়র হিসেবে জোহরান মামদানির ঐতিহাসিক বিজয়ে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে আনন্দের ঢেউ উঠলেও, ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন ইসরায়েলের কট্টর ডানপন্থি নেতারা।
বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ড জানায়, ইসরায়েলের প্রবাসী বিষয়ক ও ইহুদি-বিরোধিতা দমন বিষয়ক মন্ত্রী আমিচাই চিকলি মামদানিকে ‘হামাস-সমর্থক মেয়র’ আখ্যা দিয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি নিউইয়র্কের ইহুদি সম্প্রদায়কে শহর ছেড়ে ইসরায়েলে চলে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) পোস্ট করে চিকলি লেখেন, “যে শহর একসময় স্বাধীনতার প্রতীক ছিল, সেটি এখন হামাস-সমর্থকের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। নিউইয়র্ক আর কখনও আগের মতো থাকবে না— বিশেষ করে এখানকার ইহুদি সম্প্রদায়ের জন্য। আমি ইহুদিদের আহ্বান জানাচ্ছি, ইসরায়েলে ফিরে এসে নতুন করে জীবন শুরু করুন।”
নিউইয়র্কের নবনির্বাচিত মেয়র জোহরান মামদানি দীর্ঘদিন ধরে ফিলিস্তিনের পক্ষে অবস্থান নিয়ে আসছেন। তিনি ইসরায়েলকে ‘বর্ণবাদী শাসনব্যবস্থা’ ও গাজায় চলমান হামলাকে ‘গণহত্যা’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। তার এসব বক্তব্যের কারণে ইসরায়েলি সরকার ও ইহুদি সম্প্রদায়ের একাংশের তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছেন তিনি।
ইসরায়েলের ডানপন্থি নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন-গভির চিকলির বক্তব্যের প্রতি সমর্থন জানিয়ে বলেন, “বুদ্ধিমত্তা নয়, ঘৃণাই জয় পেয়েছে। মামদানি হামাসের সমর্থক, ইসরায়েলের শত্রু এবং উন্মুক্তভাবে ইহুদি-বিরোধী।”
অন্যদিকে ইসরায়েলের কট্টর জাতীয়তাবাদী দল ‘ইসরায়েল বেইতেনু’-র নেতা অ্যাভিগডর লিবারম্যান এক্সে লিখেছেন, “নিউইয়র্ক এমন একজনকে মেয়র হিসেবে বেছে নিয়েছে, যিনি বর্ণবাদী, জনপ্রিয়তাবাদী এবং শিয়া ইসলামপন্থি।”
তবে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে মামদানির বিজয়কে ‘বহুত্ববাদ ও প্রগতিশীল রাজনীতির জয়’ হিসেবে দেখছেন অনেক বিশ্লেষক। ব্যবসায়ী মহল, রক্ষণশীল গণমাধ্যম এবং সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কঠোর সমালোচনা সত্ত্বেও ৩৪ বছর বয়সী মামদানি নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় পান।
নির্বাচনের আগের দিন ট্রাম্প তার ‘ট্রুথ সোশ্যাল’ প্ল্যাটফর্মে মামদানিকে ‘ইহুদিবিদ্বেষী ও ফিলিস্তিনি প্রোপাগান্ডার মুখপাত্র’ বলে আক্রমণ করেছিলেন।
ঢাকাটাইমস