
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের ভারতের উপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের কৃষিমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান বলেছেন, নয়াদিল্লি তার জাতীয় স্বার্থের সাথে কোনও আপস করবে না। কোনওভাবেই মাথা নত করবে না। বৃহস্পতিবার বিজেপি নেতা আরও বলেন, বর্তমান অস্থির ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে বাণিজ্য এবং শুল্ক ‘অস্ত্র’ হয়ে উঠেছে।
পিএইচডি চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির ১২০তম বার্ষিক সাধারণ সভায় বক্তব্য রাখার সময় চৌহান বলেন, প্রধানমন্ত্রী মোদি স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, ভারত বিশ্ব ভ্রাতৃত্বতে বিশ্বাস করলেও তার কাছে জাতীয় স্বার্থই সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, অস্থির ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে দেশগুলো একে অপরের সাথে লড়াই করছে। বাণিজ্য এবং শুল্ককে অস্ত্র হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে এবং দেশগুলো তাদের ইচ্ছামতো বিশ্ব শাসন করছে। এমন পরিস্থিতিতে ভারতকে তার পথ বেছে নিতে হবে। আমরা কারও চাপে পড়ব না। আমাদের দেশের স্বার্থ রক্ষা করা আমাদের কর্তব্য এবং বিশ্ব শান্তির জন্য এটি প্রয়োজনীয়। ভারতের মতো একটি দায়িত্বশীল দেশের উঠে দাঁড়ানো উচিত বলে তিনি ঘোষণা করেন।
শিবরাজ সিং চৌহান আরও বলেন, জনসংখ্যার ৪৬ শতাংশ তাদের জীবিকার জন্য কৃষির উপর নির্ভরশীল। যা এটিকে ভারতের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র করে তুলেছে। এই নির্ভরতা কমানোর জন্য চলমান প্রচেষ্টা সত্ত্বেও তিনি এই খাতকে শক্তিশালী করার জরুরি প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন।
তার মতে, বর্তমান পরিস্থিতিতে খাদ্যের জন্য বিশ্ব বাজারের উপর নির্ভর করা যায় না। অতএব, আমাদের স্বাবলম্বী হতে হবে। চৌহান মার্কিন খাদ্য সাহায্যের উপর নির্ভরতার কথা স্মরণ করে বলেন, এক সময় ভারতকে পিএল ৪৮০ কর্মসূচির অধীনে আমেরিকান খাদ্য সাহায্যের উপর নির্ভর করতে হতো। কিন্তু সেই অবস্থা থেকে ভারত অনেক দূর এগিয়েছে।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, এমন একটা সময় ছিল যখন একজন প্রধানমন্ত্রীকে সপ্তাহে একবার উপবাস রাখতে বলতে হত। কিন্তু এখন, ৮০ কোটি মানুষকে বিনামূল্যে রেশন দেওয়া হয়। কৃষিমন্ত্রীর বক্তব্য, কৃষিক্ষেত্র নিয়ে ভারত ও আমেরিকার মধ্যে যে বিরোধের সৃষ্টি হয়েছে, তারই ফলে নয়াদিল্লি ও ওয়াশিংটনের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তিতেও বিলম্ব হচ্ছে।
রাশিয়ার তেল কেনার জন্য আমেরিকার ভারতের উপর অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের পরপরই চৌহান কৃষকদের উদ্বিগ্ন না হতে বলেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, কৃষকরা, চিন্তা করবেন না। দেখা যাক কী হয়। আমরা ১৪০ কোটি মানুষের দেশ। একটু অসুবিধা হবে কিন্তু আমরা দেখব। আমরা নতুন বাজার অনুসন্ধান করব।