
গাজায় যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তির বিষয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনার প্রথম পর্যায় বাস্তবায়নে রাজি হয়েছে হামাস ও ইসরাইল। তবে এই শান্তি পরিকল্পনার কঠোর সমালোচনা করেছেন মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মহাসচিব অ্যাগনেস ক্যালামার্ড । তার মতে, ট্রাম্পের এই পরিকল্পনা ফিলিস্তিনিদের জন্য ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় ব্যর্থ হয়েছে। খবর আল জাজিরার।
আজ বৃহস্পতিবার সামাজিকমাধ্যম এক্সে দেয়া পোস্টে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মহাসচিব ক্যালামার্ড যুদ্ধবিরতির এই চুক্তিকে ফিলিস্তিনিদের দুই বছরের দুর্ভোগের পর ‘বিলম্বিত পদক্ষেপ’ হিসেবে অভিহিত করেন।
তিনি বলেন, ‘অধিকৃত গাজা উপত্যকার ২০ লাখের বেশি ফিলিস্তিনি ইসরাইলের চলমান গণহত্যার যন্ত্রণাদায়ক যন্ত্রণা, অবিরাম বোমাবর্ষণ এবং নিয়মতান্ত্রিক অনাহার সহ্য করছে। ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর হাতে জিম্মি এবং ইসরাইলে নির্বিচারে আটক ফিলিস্তিনিদের ভয়াবহ দুর্ভোগ বন্ধ করতে পারে এমন একটি চুক্তি নিষ্ঠুরভাবে বিলম্বিত হয়েছে। ফিলিস্তিনিরা যা সহ্য করেছে তা মুছে ফেলা যাবে না।’
তিনি বলেন, যুদ্ধ সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করতে হবে এবং অবরোধ পুরোপুরি তুলে নিতে হবে। ইসরাইলকে অবশ্যই দখলকৃত গাজা উপত্যকার সকল অংশে খাদ্য, ওষুধ, জ্বালানি এবং পুনর্গঠন সরঞ্জামসহ মৌলিক সরবরাহের অবাধ প্রবাহের নিশ্চয়ত দিতে হবে।
পাশাপাশি প্রয়োজনীয় পরিষেবাগুলো পুনরায় চালু করার ওপর জোর দেন তিনি, যাতে বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের বেঁচে থাকা নিশ্চিত করা যায়। সেইসঙ্গে গাজা থেকে ইসরাইলি সেনাবাহিনী প্রত্যাহার এবং গাজা উপত্যকাজুড়ে গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো পুনর্নির্মাণ ও মেরামতের জন্য জরুরি পদক্ষেপ নেয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
অ্যামনেস্টি প্রধান আরো বলেন, হামাসের হাতে থাকা ইসরাইলি জিম্মিদের মুক্তি দিতে হবে। পাশাপাষি ইসরাইলকে অবশ্যই নির্বিচারে আটক সকল ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দিতে হবে।
তার মতে, যেকোনো স্থায়ী যুদ্ধবিরতি চুক্তি সফল হওয়ার জন্য অবশ্যই মানবাধিকার এবং আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকতে হবে। গাজায় ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইসরাইলের গণহত্যা অবিলম্বে বন্ধ করার পাশাপাশি চুক্তিতে অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের ওপর অবৈধ দখলদারিত্বের অবসান এবং বর্ণবাদ ব্যবস্থা ভেঙে ফেলার জন্য দৃঢ় পদক্ষেপ অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
অ্যামনেস্টি প্রধান আরো বলেন যে, ‘যেকোনো স্থায়ী যুদ্ধবিরতি চুক্তি সফল হওয়ার জন্য এতে অবশ্যই ইসরাইলের গণহত্যা অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। সেইসাথে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে তাদের দখলদারিত্বের অবসান এবং সেখানে বর্ণবাদ ব্যবস্থা ভেঙে ফেলার জন্য দৃঢ় পদক্ষেপ অন্তর্ভুক্ত থাকতে হবে।
ক্যালামার্ডের মতে, ‘বর্তমান পরিকল্পনা, তথাকথিত ‘ট্রাম্প শান্তি পরিকল্পনা’ এক্ষেত্রে ভয়াবহভাবে ব্যর্থ হয়েছে। এটি নৃশংস অপরাধের শিকারদের জন্য ন্যায়বিচার এবং ক্ষতিপূরণ বা অপরাধীদের জবাবদিহিতার আওতায় আনতে ব্যর্থ হয়েছে।’