Image description
 

ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের সময় ইসলামাবাদের সমরশক্তির সবচেয়ে বড় উৎস ছিল চীন। যুদ্ধবিরতির পর নতুন করে যুদ্ধ প্রস্তুতি নিচ্ছে পাকিস্তান। এবার দেশটি যেমন যুক্তরাষ্ট্রকে নতুন বন্ধুরূপে পেয়েছে, তেমনি চীনও দিচ্ছে শক্তিশালী সব সমরাস্ত্র।

 

পাকিস্তানের নৌশক্তি বাড়াতে ঘনিষ্ঠ মিত্র চীন ইসলামাবাদের হাতে তুলে দিয়েছে উন্নত সাবমেরিন। হ্যাঙ্গর শ্রেণীর আটটি সাবমেরিনের মধ্যে তৃতীয়টি বৃহস্পতিবার পাকিস্তানে পৌঁছায়। চীনের হুবেই প্রদেশের উহানে এটি আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করা হয় পাকিস্তান নৌবাহিনীর হাতে। চলতি বছরের মার্চেই দ্বিতীয় সাবমেরিন সরবরাহ করেছিল বেইজিং। গুঞ্জন উঠেছে—এই সাবমেরিনের মাধ্যমে ভারত মহাসাগরে আধিপত্য বিস্তার করতে চাইছে চীন।

চীনের নতুন সাবমেরিনের মূল বৈশিষ্ট্যের মধ্যে রয়েছে শক্তিশালী পানির নিচে যুদ্ধক্ষমতা, সর্বাঙ্গীন সেন্সর সিস্টেম, উৎকৃষ্ট স্টেলথ প্রযুক্তি, উচ্চ গতিশীলতা, দীর্ঘ সময় টিকে থাকার ক্ষমতা ও ভয়ঙ্কর অগ্নিশক্তি। পাকিস্তানের হাতে এ সাবমেরিন পৌঁছানোর ঘটনাকে ফলাও করে প্রচার করছে ভারতীয় গণমাধ্যম। এর মধ্যেই ভারত-পাকিস্তান কূটনৈতিক উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। পাকিস্তানের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠতাও মেনে নিতে পারছে না ভারত।

 

ভারতীয় গণমাধ্যম বলছে, চীনের সাবমেরিন হাতে পাওয়া পাকিস্তানের জন্য বড় কৌশলগত অর্জন। পাকিস্তান নৌবাহিনীর মতে, আধুনিক অস্ত্র ও উন্নত সেন্সর যুক্ত এসব সাবমেরিন ভারত মহাসাগরে শক্তির ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। পাকিস্তানের ডেপুটি চিফ অফ নেভাল স্টাফ ভাইস অ্যাডমিরাল আব্দুল সামাদ বলেন, হ্যাঙ্গর ক্লাস সাবমেরিন আঞ্চলিক শক্তি টিকিয়ে রাখতে সহায়ক হবে এবং সামুদ্রিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করবে।

 

এসব সাবমেরিনে এয়ার ইন্ডিপেন্ডেন্ট প্রপালশন (AIP) প্রযুক্তি থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এর আগে চীনের সহায়তায় পাকিস্তান চারটি আধুনিক যুদ্ধজাহাজ সংগ্রহ করেছে। পাশাপাশি নৌবাহিনীকে আরও শক্তিশালী করতে বেলুচিস্তানের গদরবন্দর ও ভারত মহাসাগরে বেইজিং-এর উপস্থিতি দ্রুত বাড়ছে।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পাকিস্তান চীনের কাছ থেকে ‘রিজওয়ান’ নামের প্রথম স্পাইশিপ, ৬০০-র বেশি ভিটিফোর ব্যাটল ট্যাংক এবং ৩৬টি জে-১০সি যুদ্ধবিমান কিনেছে। ২০২২ সালে পাকিস্তান প্রথম জে-১০সি যুদ্ধবিমান হাতে পায়। এর আগে যৌথভাবে জেএফ-১৭ যুদ্ধবিমান তৈরি করেছিল দুই দেশ। এসব যুদ্ধবিমান পাকিস্তান সাম্প্রতিক ভারত-পাকিস্তান সংঘাতে ব্যবহার করেছে।

বর্তমানে চীনা সাবমেরিন পাকিস্তানের হাতে পৌঁছানো ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে নয়া দিল্লির জন্য বড় কৌশলগত উদ্বেগ তৈরি করেছে। ভারতের প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের মতে, পাকিস্তানের নতুন নৌশক্তি আঞ্চলিক শক্তির ভারসাম্য পাল্টে দিতে পারে। কারণ ভারতের নৌবাহিনীর হাতে এখনো AIP প্রযুক্তি সম্পন্ন সাবমেরিন নেই, যদিও তাদের কাছে দুটি পরমাণু সাবমেরিন রয়েছে।