
ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস জানিয়েছে, তারা গাজায় আটকে থাকা ইসরাইলি-আমেরিকান জিম্মি ইদেন আলেকজান্ডারকে মুক্তি দেবে। রোববার হামাসের এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমেরিকার নাগরিকত্ব থাকা ইসরাইলি সেনা ইদেন আলেকজান্ডারকে মুক্তি দেওয়া হবে যাতে করে যুদ্ধবিরতি স্থাপন, সীমান্ত ক্রসিং খুলে দেওয়া এবং গাজায় আমাদের জনগণের কাছে ত্রাণ সহায়তা পৌঁছানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়।’
তবে হামাসের বিবৃতিতে বলা হয়নি ২১ বছর বয়সি ইদেন আলেকজান্ডারকে কখন মুক্তি দেওয়া হবে।
আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য সফরে আসার আগেই হামাসের পক্ষ থেকে এ ঘোষণা এলো। গত ২ মার্চ থেকে ৭০ দিনের বেশি গাজায় ইসরাইলের সর্বাত্মক অবরোধে যুদ্ধবিধ্বস্ত উপত্যকাটিতে কোনো ধরনের খাবার, পানি ও প্রয়োজনীয় সামগ্রী প্রবেশ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
এদিকে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে বলা হয়েছে, ইদেন আলেকজান্ডারকে মুক্তি দেওয়া হলেও এর জন্য যুদ্ধবিরতি বা সামরিক অভিযানের মাত্রা কমানো হবে না। তবে ইদেন আলেকজান্ডারের নিরাপদ প্রত্যাবর্তনের জন্য একটি ‘সেফ করিডর’ দেওয়া হবে।
ইসরাইলি-আমেরিকান নাগরিক ইদেন আলেকজান্ডারের মুক্তিতে নিজের প্রতিষ্ঠিত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে এক বার্তায় আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘ইদেন আলেকজান্ডার, মৃত মনে করা আমেরিকান জিম্মিকে হামাস মুক্তি দিতে যাচ্ছে, অনেক খুশির খবর।’
ইদেন আলেকজান্ডারের মুক্তিতে ভূমিকার জন্য কাতার ও মিসরকে ধন্যবাদ জানান ট্রাম্প। তবে এ বিবৃতিতে ইসরাইলের কোনো ধরনের উল্লেখ করেননি তিনি। ইসরাইলি রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ ওরি গোল্ডবার্গ জানান, এটি নেতানিয়াহুর জন্য বড় ধরনের এক ধাক্কা।
আলজাজিরাকে তিনি বলেন, ‘এর মাধ্যমে নেতানিয়াহুকে ট্রাম্প বলে দিলেন, আমিই সব করছি, সব আমার দায়িত্ব, আপনার কাজ আপনি করুন।’
তিনি বলেন, জিম্মিদের পরিবার ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রীর ওপর কোনো প্রভাব বিস্তার করতে না পারলেও, ট্রাম্পের রাজনৈতিক চাপ এখানে গুরুত্বপূর্ণ।
গোল্ডবার্গ বলেন, ‘আমেরিকার স্বার্থ থেকে ইসরাইলি স্বার্থ বিচ্ছিন্ন হওয়া এক ভূমিকম্পের মতো। মূলত ট্রাম্পের মাধ্যমে বিশ্ববাসীকে সংকেত দিচ্ছেন, ইসরাইলকে পালের থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। ইসরাইল একাকী এবং তার কাজের দায়িত্ব তার।’
জিম্মি মুক্তির ঘোষণা হলেও গাজায় থেমে নেই মৃত্যুর মিছিল। সোমবার স্থানীয় সময় সকাল ১০টা পর্যন্ত ১৭ জন নিহতের তথ্য দিয়েছে আলজাজিরা।
সোমবার ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গাজায় ২৪ ঘণ্টায় ইসরাইলি হামলায় নতুন করে ২৯ জন নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া আগে নিহত হওয়া চারজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আহত হয়েছেন আরো ৯৪ জন। সবমিলিয়ে ১৯ মাসের আগ্রাসনে নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫২ হাজার ৮৬২ এবং আহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে এক লাখ ১৯ হাজার ৬৬৪।