Image description

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন ২০২৫-এর চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচন কমিশন। তবে এ তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন ৪৭ প্রার্থী। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন প্রার্থীরা। তাদের অভিযোগ, কোনো সুনির্দিষ্ট কারণ উল্লেখ না করেই চূড়ান্ত প্রার্থীর তালিকা থেকে তাদের বাদ দেওয়া হয়েছে।

শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) প্রকাশিত চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা বিশ্লেষণে দেখা যায়, সহসভাপতি পদপ্রার্থী (ভিপি) চন্দন কুমার দাস। সাধারণ সম্পাদক (জিএস) আরিফুজ্জামান টিংকু এবং মোসা. উম্মে মাবুদা। সহসাধারণ সম্পাদক (এজিএস) মো. শাহরিয়ার রহমান আবির, মো. ফাহিম ফয়সাল, গৌরাঙ্গঁ দাস, মো. জহিরুল ইসলাম সোহাগ, মো. শাহিন মিয়া ও মো. নাফিউ উদ্দিন জিসান প্রকাশ করা হয়নি।

এ ছাড়া শিক্ষা ও গবেষণা পদে ৪ জন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি পদে ৪ জন, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ পদে ১ জন, আইন ও মানবাধিকার পদে ১ জন, সাহিত্য ও সংস্কৃতি পদে ২ জন, ক্রীড়া পদে ১ জন, পরিবহন পদে ৩ জন, সমাজসেবা ও শিক্ষার্থী কল্যাণ পদে ৪ জন, পাঠাগার ও সেমিনার পদে ৩ জন এবং সদস্য পদে ১৫ প্রার্থীর নাম প্রকাশ করা হয়নি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের এমন হঠাৎ সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন প্রার্থীরা। তাদের অভিযোগ, কেন আগে থেকে প্রশাসন তাদের এসব অভিযোগের ব্যাপারে জানায়নি? এতে প্রার্থীদের সম্পর্কে ভোটারদের কাছে নেতিবাচক মনোভাবের শঙ্কাও করছেন প্রার্থীরা। ডোপ টেস্টসহ প্রার্থী হওয়ার সব যোগ্যতা থাকলেও একটি স্বার্থান্বেষী মহলের প্ররোচনা ও অভিযোগের কারণে প্রশাসনের এধরনের সিদ্ধান্ত দুর্বলতার পরিচয়ও বলছেন তারা।

অভিযোগ ও ক্ষোভ জানিয়ে স্বতন্ত্র সহসভাপতি পদপ্রার্থী চন্দন কুমার দাস বলেন, ‘আমার বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত কমিটি কাজ করছে। আমাদের রবিবার কারণ দর্শানোর জন্য বলবেন। কারণ দশানোর মাধ্যমে আমাদের প্রার্থীতা ফিরে পাবো। তবে প্রশাসনের উচিত ছিল চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশের আগেই অভিযোগ সম্পর্কে আমাদের জানানো। প্রশাসন যা করল, এটা নিশ্চয় প্রচাশাসনের দূর্বলতা। সংখ্যালঘু হিসেবে আমাকে সেই প্রথম থেকেই দমানোর চেষ্টা করছে একটি মহল। আমি মনে করি, তারই পরিপ্রেক্ষিতে এসব অভিযোগ করছে এবং প্রার্থিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে।’

এ বিষয়ে সতন্ত্র জিএস পদপ্রার্থী মোসা. উম্মে মাবুদা বলেন, ‘আমার বিষয়ে ছাত্রলীগের অভিযোগের কারণে চূড়ান্ত প্রার্থীতায় নাম আসেনি। এবিষয়ে আমি নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা জানিয়েছেন যে আমাদের সম্পর্কে তদন্ত চলছে। পরবর্তী সময়ে সুনির্দিষ্ট ব্যাখ্যার জন্য প্রশাসন থেকে ডাকবে।’

জাতীয় ছাত্রশক্তি সমর্থিত প্যানেলের এজিএস পদপ্রার্থী মো. শাহিন মিয়া বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশন কে বা কাদের অভিযোগে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আমাদের জানাননি। তবে প্রশাসন থেকে পরে যোগাযোগ করবে এমনটা বলছেন। আমাদের আগে জানাতে পারত। আগে প্রার্থিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে, এমন অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, যা নির্বাচন কমিশনের স্বচ্ছতার সাথে নির্বাচন সম্পন্ন করা নিয়েও প্রশ্ন থেকে যায়।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মোস্তফা হাসান বলেন, ‘প্রার্থীদের অনেকে ডোপ টেস্টে আসেনি। আবার অনেকের বিরুদ্ধে নানাধরনের অভিযোগ এসেছে। আমরা অভিযোগ গুলো তদন্ত করছি। প্রার্থীদের বিরুদ্ধে আসা অভিযোগের সুনির্দিষ্ট ব্যাখ্যা পেলে অভিযোগের নিষ্পত্তি হবে। তখন তাদের প্রার্থিতা ফিরে পাবেন।’