কারাগারে আটক থাকা অবস্থাতেই আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মাগুরা-১ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন মাগুরার শ্রীপুর উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি ও শ্রীকোল ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান কুতুবুল্লাহ হোসেন মিয়া কুটি। সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) দুপুরে শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে তার পক্ষে মনোনয়নপত্র দাখিল করা হয়।
জানা গেছে, গত ১৫ ডিসেম্বর মাগুরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করে বাড়ি ফেরার পথে কুতুবুল্লাহ হোসেন মিয়া কুটিকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। তার বিরুদ্ধে কোনো মামলার কথা জানানো হয়নি বলে পরিবারের দাবি। কুটি মুক্তিযোদ্ধা আকবর হোসেন মিঞার ছেলে।
কুটির ছোট ভাই শরিয়ত উল্লাহ রাজন অভিযোগ করে বলেন, বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে এ প্রত্যাশা থেকেই মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করা হয়েছিল। কিন্তু মনোনয়নপত্র কেনার পর বাড়ি ফেরার পথে কোনো মামলা ছাড়াই আমার ভাইকে গ্রেপ্তার করা হয়। ফলে সোমবার অত্যন্ত গোপনীয়তার সঙ্গে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করতে হয়েছে।
পরিবারের রাজনৈতিক অবস্থান ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, কুটি ২০০৮ সালের আগ পর্যন্ত যুবলীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করলেও প্রায় দেড় যুগ ধরে আওয়ামী লীগের সঙ্গে তাদের পরিবারের কোনো রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা নেই। বরং বিভিন্ন সময়ে আওয়ামী লীগের দ্বারা তিনি ব্যক্তিগতভাবে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বলেও অভিযোগ করেন।
তিনি আরও বলেন, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুতুবুল্লাহ হোসেন মিয়া কুটি মাগুরা-১ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী অধ্যাপক ডা. সিরাজুল আকবরের বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। সে সময় সাধারণ মানুষের সমর্থন তাদের পক্ষে থাকলেও নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর পক্ষে ফল ঘোষণা করা হয় বলে অভিযোগ করেন তিনি।
পারিবারিক জনপ্রিয়তার কথা তুলে ধরে শরিয়ত উল্লাহ রাজন বলেন, ওই জনপ্রিয়তার কারণেই তিনি নিজে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে সর্বশেষ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। একইভাবে তার বড় ভাইও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।
তিনি অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক না থাকলেও গত বছর পরিকল্পিতভাবে তাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দায়ের করা হয়। এসব মামলায় জামিন পেলেও অন্যায়ভাবে কুতুবুল্লাহ হোসেন মিয়া কুটিকে এখনও কারাগারে আটক রাখা হয়েছে।
নির্বাচন যদি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়, তাহলে অতীতের মতোই মাগুরা-১ আসনের ভোটাররা তাদের পাশে দাঁড়াবেন বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।