Image description

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ভাষণে বলা ‘আই হ্যাভ আ প্ল্যান (আমার একটি পরিকল্পনা আছে)’ ও ‘উই হ্যাভ আ প্ল্যান (আমাদের একটি পরিকল্পনা আছে)’ বাক্য দুটি রাজনীতিতে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনের নেতা মার্টিন লুথার কিংয়ের বিখ্যাত ভাষণ ‘আই হ্যাভ আ ড্রিম (আমার একটি স্বপ্ন আছে)’ স্মরণ করিয়ে দিয়েই কথাগুলো বলেছেন। এতে বিশ্লেষণ ও আলোচনায় নতুন মাত্রা যুক্ত হয়েছে।

১৯৬৩ সালের ২৮ আগস্ট দেওয়া মার্টিনের ভাষণটি ১৬ মিনিটের কিছু বেশি। তারেক রহমানের ভাষণের দৈর্ঘ্যও ১৬ মিনিট। মার্টিন ভাষণে তাঁর স্বপ্নের কথা বলার মধ্য দিয়ে পরিকল্পনার কথাগুলো স্পষ্ট করেছিলেন। তারেক রহমানের ক্ষেত্রে তা অতটা স্পষ্ট নয় বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। 

তবে বিএনপি নেতারা বলছেন, তারেক রহমান তাঁর বক্তব্যের মধ্য দিয়ে দেশ পরিচালনায় নতুন মাত্রা আনার বিষয়কে প্রাধান্য দিয়েছেন। একটা দর্শনের কথা বলেছেন যে, বাংলাদেশ ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ আর ২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের চেতনার ভিত্তিতে এগিয়ে যাবে। একই সঙ্গে তিনি সব ক্ষেত্রে পরিবর্তন আনার কথা বলেছেন। প্রচলিত ধ্যান-ধারণা পরিবর্তন করে একটি আধুনিক রাষ্ট্র বিনির্মাণে যা যা প্রয়োজন, তার সবকিছুকেই বুঝিয়েছেন। এতে রাজনীতি, অর্থনীতি, পররাষ্ট্রনীতি আছে। দেশ পরিচালনায় সব জায়গায় কৈফিয়তের ধারা চালুর বিষয়ও রয়েছে। 

যুক্তরাজ্যের লন্ডনে ১৭ বছরের নির্বাসিত জীবন কাটিয়ে গত বৃহস্পতিবার দেশে ফিরে লাখ লাখ মানুষের সামনে ভাষণ দেন তারেক রহমান। এ সময় তিনি বলেন, ‘প্রিয় ভাইবোনেরা, মার্টিন লুথার কিং নাম শুনেছেন না আপনারা? নাম শুনেছেন তো আপনারা? মার্টিন লুথার কিং, তাঁর একটি বিখ্যাত ভাষণ আছে– আই হ্যাভ আ ড্রিম। আজ এই বাংলাদেশের মাটিতে দাঁড়িয়ে আপনাদের সবার সামনে আমি বলতে চাই, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের একজন সদস্য হিসেবে আপনাদের সামনে আমি বলতে চাই, আই হ্যাভ আ প্ল্যান ফর দ্য পিপল অব মাই কান্ট্রি, ফর মাই কান্ট্রি।’

ভাষণ শেষে চলে যাওয়ার সময় আবার মাইক্রোফোনের সামনে ফিরে গিয়ে তারেক রহমান আবার বলেন, ‘মনে রাখবেন, উই হ্যাভ আ প্ল্যান। উই হ্যাভ আ প্ল্যান ফর দ্য পিপল, ফর দ্য কান্ট্রি। ইনশাআল্লাহ, আমরা সেই প্ল্যান বাস্তবায়ন করব।’

সেই পরিকল্পনা কী তা ভাষণে সুনির্দিষ্ট করে বলেননি তারেক রহমান। তবে তিনি বলেন, ‘এই পরিকল্পনা দেশের মানুষের স্বার্থে, দেশের উন্নয়নের জন্য, দেশের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তনের জন্য।’ পাশাপাশি তিনি এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য ‘সারা বাংলাদেশে গণতন্ত্রের শক্তির যত মানুষ’ আছে, তাদের প্রত্যেকের সহযোগিতা চেয়েছেন।

গত বৃহস্পতিবার তাঁকে বরণ করতে বর্ণাঢ্য গণসংবর্ধনায় অংশ নিয়ে প্রথম বক্তৃতাতেই তারেক রহমান বলেছেন, ‘আই হ্যাভ অ্যা প্ল্যান, ফর দ্য পিপল অব মাই কান্ট্রি, ফর মাই কান্ট্রি (দেশের মানুষের জন্য, দেশের জন্য আমার একটি পরিকল্পনা আছে)। এই পরিকল্পনা দেশের মানুষের স্বার্থে, দেশের উন্নয়নের জন্য, দেশের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তনের জন্য।’

প্রসঙ্গত, মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক অধিকার আন্দোলনের নেতা। তিনি বর্ণবাদ ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে অহিংস আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছেন। আমেরিকায় যখন কৃষ্ণাঙ্গদের ওপর দমনপীড়ন চরমে উঠেছিল, তখন অধিকারহীন মানুষের কণ্ঠস্বর হয়ে উঠেছিলেন তিনি। মানুষের সমঅধিকার নিশ্চিত করার বিষয়ে তাঁর ‘আই হ্যাভ আ ড্রিম’ ভাষণটি বিশ্বের মুক্তিকামী মানুষকে গভীরভাবে নাড়া দেয়।

বিএনপির একজন জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, নির্বাচনী আচরণবিধির বিষয় মাথায় রেখে হয়তো তারেক রহমান তাঁর পরিকল্পনা বিস্তারিত উপস্থাপন করেননি। তবে পরিকল্পনাগুলো নিয়ে কাজ চলছে।

বিষয়গুলো সম্পর্কে খোঁজখবর রাখেন এমন কয়েকজন নেতা সমকালকে বলেন, তারেক রহমান নতুনভাবে দেশ গড়তে প্রতিটি খাত ধরে ধরে পরিকল্পনা করেছেন। এগুলো নিয়ে বেশকিছু টিম কাজও করছে। পাহাড়-সমতল, ধর্ম-লিঙ্গ-শ্রেণিপেশা নির্বিশেষে সবাইকে নিয়ে এগিয়ে যাওয়া, তরুণদের জন্য টেকসই ভবিষ্যত গড়া, শান্তি প্রতিষ্ঠা এবং সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা–এগুলো তাঁর পরিকল্পনার খুবই গুরুত্বপূর্ণ অংশ। 

একজন নেতা বলেন, তারেক রহমান গণতন্ত্রে বিশ্বাসী সব মানুষকে নিয়ে চলতে চেয়েছেন। এখানে তিনি বিদ্বেষহীন রাজনীতি গড়ে তোলার কথা বলেছেন। তিনি আলাদা করে প্রতিবন্ধীদের কথা বলেছেন, অর্থাৎ তিনি প্রান্তিক মানুষের বিষয়ে দায়িত্বের কথা বলেছেন। এসবও তাঁর স্বপ্ন ও পরিকল্পনার অংশ। 

জানতে চাইলে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জহিরউদ্দিন স্বপন সমকালকে বলেন, তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের ভাষণ জাতিকে আশান্বিত করেছে। গণঅভ্যুত্থানের দেড় বছরের মাথায় ‘মব’ আক্রমণসহ অপরাধমূলক নানা কর্মকাণ্ডে দেশের মানুষের মধ্যে যখন অনিশ্চয়তা, উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে, তখন তিনি আশার আলো দেখিয়েছেন। ভাষণে তিনি কাউকে প্রতিপক্ষ হিসেবে দাঁড় করাননি। কাউকে কথার বাণে আক্রমণ করেননি। তিনি দেশ গঠনে তাঁর পরিকল্পনার কথা বলেছেন। পুরোনো দিনের ধ্যান-ধারণাকে ফেলে দিয়ে উন্নত মানসিকতার কথা বলেছেন। সর্বক্ষেত্রে তিনি এটা চালু করার দিকটাকেই পরিকল্পনা হিসেবে বলেছেন। রাজনীতি, অর্থনীতি, পররাষ্ট্রনীতি, আইনশৃঙ্খলাসহ সবকিছুকেই উন্নত ধারায় নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনার কথা বলেছেন। 

জারতে চাইলে রাজনৈতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক ড. মাহবুব উল্লাহ সমকালকে বলেন, তারেক রহমান পরিকল্পনা আছে বলে জানিয়েছেন। এখন মানুষের প্রত্যাশা তৈরি হলো। তাঁর সামনে একটা চ্যালেঞ্জ তৈরি হলো। তিনি একটা দলের প্রধান থেকে জাতীয় নেতা হয়ে ওঠার ইঙ্গিত দিয়েছেন। এই রূপান্তরটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। 

বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতারা জানান, তারেক রহমানের পরিকল্পনার কিছু অংশ আগেই প্রকাশ করেছেন। তার মধ্যে মূল বিষয়গুলো আট পরিকল্পনা হিসেবে সারসংক্ষেপ আকারে আগেভাগে তুলে ধরা হয়েছে। যেমন– ফ্যামিলি কার্ড, হেলথ কার্ড, কৃষি কার্ড, কৃষকদের ডিজিটাল নেটওয়ার্কের মধ্যে নিয়ে এসে নাগরিক সেবা নিশ্চিত করা ইত্যাদি। আগামী নির্বাচনের ইশতেহারে আরও বিষদভাবে তুলে ধরা হবে। 
যদিও দলের কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতা সমকালকে বলেন, এগুলো তারেক রহমানের পরিকল্পনার একটি অংশ মাত্র। তাঁর পরিকল্পনায় আরও অনেক বিষয় রয়েছে। 

ফ্যামিলি কার্ড
আট পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে ফ্যামিলি কার্ড। সেখানে বলা হয়েছে, বিএনপি প্রতিটি পরিবারে প্রধান নারী সদস্যের নামে ফ্যামিলি কার্ড চালু করবে, যাতে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সাশ্রয়ী দামে পাওয়া যায়। প্রতিটি পরিবার মাসে দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা সমমূল্যের খাদ্য ও জরুরি পণ্য পাবে। এর ফলে পরিবারগুলোর কিছু টাকা সঞ্চয় হবে। সেই সঞ্চয়ের মাধ্যমে নারী সদস্যের নেতৃত্বে আয়ের ছোট উদ্যোগ শুরু করা সম্ভব হবে, যা হবে নারীর ক্ষমতায়ন ও সামাজিক সুরক্ষার একটি স্থায়ী পথ।

কৃষক কার্ড
কৃষক কার্ড চালু হলে চাষিরা স্বল্পমূল্যে সার, উন্নত বীজ ও কৃষিপ্রযুক্তি পাবেন। পাশাপাশি সহজে ঋণ এবং বাজারে প্রবেশাধিকার নিশ্চিত হবে। এতে কৃষি উৎপাদন বাড়বে, কৃষকের আয় বাড়বে এবং দেশের খাদ্য নিরাপত্তা আরও শক্তিশালী হবে।

সবার জন্য স্বাস্থ্যসেবা
বিএনপি প্রত্যেক মানুষের দোরগোড়ায় প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেবে। সারাদেশে শক্তিশালী প্রাইমারি হেলথ কেয়ার নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা হবে। দেশজুড়ে সব নাগরিকের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে নতুন করে প্রায় এক লাখ স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ, যার ৮০ শতাংশ হবেন নারী, যাতে নারী ও শিশুর সেবা আরও সহজে পাওয়া যায়। প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা হবে সবার অধিকার, আর তা পৌঁছে যাবে প্রতিটি গ্রাম, শহরের ওয়ার্ড ও মানুষের ঘরের খুব কাছে

আনন্দময় শিক্ষা, দক্ষ জনশক্তি ও আধুনিক বাংলাদেশ
প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের আধুনিক ও সময়োপযোগী প্রশিক্ষণ, দক্ষতা অর্জনসহ সার্বিক সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর লক্ষ্যে দেওয়া হবে ট্যাবলেট কম্পিউটার। ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে টিমওয়ার্ক, পার্সোনাল স্কিল ডেভেলপমেন্ট, পারিবারিক, সামাজিক ও নৈতিক শিক্ষার মাধ্যমে সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে শিক্ষাকে আনন্দময় করে তোলা। আত্মকর্মসংস্থান ও বহির্বিশ্বে চাকরির সুযোগ তৈরিতে শিক্ষার্থীদের দক্ষ এবং যোগ্য করে গড়ে তুলতে মাধ্যমিক পর্যায়ে সাধারণ শিক্ষার পাশাপাশি কারিগরি শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা।

শিক্ষক-শিক্ষিকা, ছাত্রছাত্রী সবার জন্য পরিচ্ছন্ন ও সুন্দর পরিবেশ নিশ্চিতকরণ, স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট নির্মাণ এবং সারাদেশে পর্যায়ক্রমে প্রান্তিক ও দুর্গম এলাকার শিক্ষার্থীর জন্য ‘মিড-ডে মিল’ চালুর উদ্যোগ নেওয়া। শিক্ষামূলক ছবি, ভিডিও, ডকুমেন্টারি ও অনলাইন কনটেন্টের মাধ্যমে কারিকুলাম ও নৈতিক শিক্ষার জন্য প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে মাল্টিমিডিয়া শ্রেণিকক্ষ স্থাপন। দেশে-বিদেশে কর্মসংস্থান ও উচ্চশিক্ষার সুযোগ তৈরিতে বাংলা, ইংরেজির পাশাপাশি আরবি, জাপানিজ, কোরিয়ান, ইতালিয়ান ইত্যাদি তৃতীয় ভাষা শিক্ষা মাধ্যমিক পর্যায় থেকে চালু করা।

ক্রীড়াজগতে তরুণদের আকর্ষণ
ক্রীড়াকে শুধু শখ নয়, পেশা হিসেবেও গ্রহণযোগ্য করতে বিএনপি সব স্তরে খেলাধুলার উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দেবে। এতে নতুন প্রতিভা তৈরি হবে, তরুণরা কর্মসংস্থানের নতুন ক্ষেত্র পাবে এবং সামাজিক ক্ষতি কমবে।

খেলাধুলাকে পেশা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে জাতীয় শিক্ষাক্রমে চতুর্থ শ্রেণি থেকে তা বাধ্যতামূলক করা হবে। ‘নতুন কুঁড়ি স্পোর্টস’ কর্মসূচির মাধ্যমে ১২-১৪ বছরের প্রতিভাবান ক্রীড়া শিক্ষার্থীদের বৃত্তি, ৬৪ জেলায় ইনডোর সুবিধাসম্পন্ন স্পোর্টস ভিলেজ নির্মাণ, দেশের সব উপজেলায় ক্রীড়া কর্মকর্তা ও ক্রীড়া শিক্ষক নিয়োগ করা হবে। এ ছাড়া প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পর্যায়ক্রমে বিষয়ভিত্তিক ক্রীড়া শিক্ষক নিয়োগ ও বিভাগীয় শহরে বিকেএসপির শাখা প্রতিষ্ঠা করবে।

পরিবেশ রক্ষা ও খাল খনন
বিএনপি নবায়নযোগ্য শক্তি, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও রিসাইক্লিং বাড়িয়ে প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষা করবে। পাশাপাশি কৃষি উৎপাদন বাড়াতে, মৌসুমি বন্যা থেকে মানুষকে রক্ষা করতে এবং নদী, খাল-বিল ও পরিবেশ রক্ষায় সারাদেশে অন্তত ২৫ হাজার কিলোমিটার খাল, নদী খনন ও পুনর্খনন করে পানিপ্রবাহ নিশ্চিত করা হবে। তিস্তা ব্যারাজ উন্নয়ন ও পদ্মা ব্যারাজের মতো প্রকল্প নেওয়া, যাতে প্রাণ ফিরে পাবে নদী ও খাল-বিল।

কর্মসংস্থান
প্রতি জেলার ঐতিহ্য ও বিখ্যাত পণ্যের ভিত্তিতে কুটির শিল্প ও এসএমই খাত বিকাশে স্বল্প সুদে ঋণ দেওয়া, অ্যামাজন-আলিবাবাসহ বৈশ্বিক ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মে পণ্য রপ্তানির লক্ষ্যে বেসরকারি শিল্প সম্প্রসারণ ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির সহায়ক উদ্যোগ নেওয়া এবং ব্যাংকিং ব্যবস্থা স্বচ্ছ, দলীয়করণমুক্ত ও ব্যবসাবান্ধব করা। বিসিএস এবং সব সরকারি নিয়োগে মেধা ও যোগ্যতার ন্যায্য মূল্যায়ন নিশ্চিত করা, যেন সব বৈষম্য ও দলীয় প্রভাবমুক্ত স্বচ্ছ নিয়োগ প্রক্রিয়া গড়ে ওঠে। সঙ্গে সমন্বয় রেখে সরকারি চাকরির সংখ্যা বাড়ানো। 

ফ্যামিলি কার্ড, কৃষক কার্ড, শিক্ষা, ক্রীড়া, সংস্কৃতি, শিল্পায়ন, আইটি, অবকাঠামো, পরিবেশ, জ্বালানিসহ সব খাতে বিএনপির পরিকল্পিত প্রোগ্রাম ও প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যে পেশাগত যোগ্যতার ভিত্তিতে সরকারি ও বেসরকারি খাতে লাখ লাখ কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা হবে। সাইবার নিরাপত্তা, আউটসোর্সিং, ইন্টেলিজেন্স, সেমিকন্ডাক্টরসহ আইটি সেক্টরে নতুন শিল্প গড়ে তুলে সরাসরি ড্যান্সিং, ক্রিয়েটিভ ইন্ডাস্ট্রি ও কনটেন্ট ক্রিয়েশনের মাধ্যমে পরোক্ষভাবে আট লাখ কর্মসংস্থান তৈরির লক্ষ্যে ব্যাপক প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনা। 

ধর্মীয় নেতাদের সম্মানী ভাতা
খতিব, ইমাম, মুয়াজ্জিন এবং অন্যান্য ধর্মের পুরোহিত, পাদরিসহ ধর্মীয় নেতাকে মাসিক সম্মানী দেওয়ার বিষয়ে বিএনপির পরিকল্পনা রয়েছে। ধর্মীয় উৎসব ও বিশেষ অনুষ্ঠানে আর্থিক সুবিধা ও সহায়তাও দেওয়া হবে।

জানতে চাইলে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হুমায়ুন কবির সমকালকে বলেন, দেড় যুগেরও বেশি সময় দেশের রাজনীতি শুধু প্রতিশ্রুতি আর স্লোগানে ভরা ছিল। সেই রাজনীতি মানুষের জীবনে তেমন কোনো সুখবর বয়ে আনেনি। এখন সময় এসেছে এমন রাজনীতির, যা কথার চেয়ে কাজে বিশ্বাস করবে। তারেক রহমান সেই প্রস্তুতি নিয়েই এগোচ্ছেন। কর্মপরিকল্পনা তৈরি করেছেন, যাতে ক্ষমতায় গেলে দ্রুত কাজ শুরু করা যায়।