আসন সমঝোতার ভিত্তিতে নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য জামায়াতে ইসলামীসহ আট দলের অঘোষিত জোট অক্ষুণ্ণ রাখার জোর চেষ্টা চলছে। একক প্রার্থী চূড়ান্ত করা নিয়ে সংশ্লিষ্টদের মাঝে জটিলতা সৃষ্টি হলেও তা সমাধানের প্রত্যাশা করছেন নেতারা। এছাড়া এই জোট-প্রক্রিয়ায় এনসিপিসহ আরো কিছু দলের যুক্ত হওয়া নিয়েও চলছে নানা আলোচনা।
বিষয়টি নিয়ে গতকাল শুক্রবার দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা একাধিক বৈঠক করেছেন। আজ শনিবারও এ ধরনের বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। আসন সমঝোতার বিষয়টি চূড়ান্ত হতে আরো দুই-একদিন লাগতে পারে বলে জানা গেছে।
এদিকে চাহিদামত আসন না পেলে আট দলের এই সমঝোতা প্রক্রিয়া থেকে ইসলামী আন্দোলন ও বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের বের হয়ে যাওয়ার গুঞ্জন নিয়েও সংশ্লিষ্টদের মাঝে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা চলছে। যদিও এ ধরনের আভাসকে ভিত্তিহীন বলছেন সংশ্লিষ্টরা।
সূত্র মতে, ইস্যুভিত্তিক আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম থেকে এক পর্যায়ে নির্বাচনি সমঝোতার ঘোষণা দিয়ে একক প্রার্থী বাছাইয়ের কাজ শুরু করে জামায়াতে ইসলামীসহ আটটি দল। সেগুলোর মধ্যে রয়েছেÑইসলামী আন্দোলন, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, খেলাফত মজলিস, খেলাফত আন্দোলন, নেজামে ইসলাম পার্টি, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) এবং বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি (বিডিপি)।
গত ৯ ডিসেম্বর থেকে আসনপ্রতি একক প্রার্থী বাছাইয়ের কাজ শুরু করে সংশ্লিষ্ট লিয়াজোঁ কমিটি। সেই কাজ এখন শেষ পর্যায়ে রয়েছে। তবে সব দলের কাঙ্ক্ষিতসংখ্যক আসন পাওয়া নিয়ে সৃষ্ট জটিলতায় তা চূড়ান্ত হতে বিলম্ব হচ্ছে বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক বলেন, আট দলের মধ্যে যে নির্বাচনি সমঝোতা চলছে তা সফল হবে আশা করছি। আরো কিছু দলের সঙ্গে আলোচনা পাইপলাইনে আছে, তাদের সবাইকে স্বাগত জানাই।
তিনি আরো বলেন, সবাই ন্যায্যতার ভিত্তিতে সমঝোতা প্রত্যাশা করেন। এককভাবে কেউ নিয়ন্ত্রণ করবেÑএমন কিছু চায় না। বড় পার্টনারকে বড় স্যাক্রিফাইস করতে হবে। এই সমঝোতা কাজে আরো দুই থেকে চারদিন সময় লাগতে পারে।
এক প্রশ্নের জবাবে মামুনুল হক বলেন, আট দলের আসন সমঝোতা না হলে আরো অনেক দল আছে, তাদের নিয়ে ভিন্ন প্ল্যাটফর্ম হতে পারে। তবে ধানের শীষ নিয়ে ভোট করার কোনো চিন্তা নেই। ইসলামী আন্দোলনের একজন নেতা জানান, আসন সমঝোতার কাজ এগোচ্ছে, কোনো সমস্যা নেই।
অন্যদিকে দেশ ও জাতির স্বার্থে সব ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকতে নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম।
গতকাল শুক্রবার দলীয় প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ৩০০ আসনেই আমাদের সর্বাত্মক দাওয়াতি কার্যক্রম চালিয়ে যেতে হবে। সমঝোতার স্বার্থে কোনো আসন ছাড়তে হলেও সেখানে কাজের স্পৃহা ও গতি পূর্ণমাত্রায় ধরে রাখতে হবে।
আসন সমঝোতার সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও আট দলের সমন্বয়ক ড. হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, আসন সমঝোতা নিয়ে শুক্রবার আলোচনা হয়েছে, শনিবারও আলোচনা হবে। নতুন দলসহ সবকিছু নিয়েই আলোচনা হচ্ছে। যে কোনো সময় এটা চূড়ান্ত হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।