দীর্ঘ ১৭ বছর প্রবাসে থাকার পর কন্যা ও স্ত্রীসহ দেশে ফিরেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) সকালে তাকে স্বাগত জানাতে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবস্থান নিয়েছেন দলের শীর্ষ নেতারা।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ ও স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়সহ দলের সিনিয়র নেতারা বিমানবন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জে তারেক রহমানের জন্য অপেক্ষা করছেন।
স্থানীয় সময় সকাল ১০টার দিকে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সিনিয়র নেতারা বিমানবন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জে প্রবেশ করেন। স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, বিএনপি মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক ডা. মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেলসহ দলটির সিনিয়র নেতারা সেখানে উপস্থিত রয়েছেন।
এদিকে, কন্যা ও স্ত্রীসহ তারেক রহমানকে বহনকারী বাংলাদেশ বিমান এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট সকাল ৯টা ৫৮ মিনিটে সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। সেখানে প্রায় এক ঘণ্টার গ্রাউন্ড টার্নঅ্যারাউন্ডের পর বিমানটি সকাল ১০টা ৫৫ মিনিটে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করবে।
স্থানীয় সময় বুধবার সন্ধ্যা ৬টা ৩৬ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার রাত ১২টা ৩৬ মিনিটে) লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে বাংলাদেশ বিমানে করে ঢাকার উদ্দেশে সপরিবারে যাত্রা করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
বিমান সূত্র জানিয়েছে, ফ্লাইট বিজি-২০২ বোয়িং ড্রিমলাইনার ৭৮৭-৯০০ উড়োজাহাজে আসেন তারেক রহমান। রুটটি লন্ডন হিথ্রো–সিলেট–ঢাকার। এতে উচ্চপদস্থ যাত্রী থাকার কারণে বিমান পরিচালনায় বিশেষ সমন্বয় ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে। ফ্লাইটে তারেক রহমানের বিশেষভাবে A1 সিট বরাদ্দ করা হয়েছে।
শিডিউল অনুযায়ী, ফ্লাইটটি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সকাল ১১টা ৪৫ মিনিটে অবতরণ করার কথা রয়েছে।
বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, তারেক রহমানের সঙ্গে ফ্লাইটে আরও আছেন তার স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমান, কন্যা ব্যারিস্টার জাইমা রহমান, তারেক রহমানের ব্যক্তিগত সচিব আব্দুর রহমান সানি, দলের প্রেস উইংয়ের সালেহ শিবলী ও জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের কামাল উদ্দীন। আরও আছেন সৈয়দ মইনউদ্দিন আহমেদ এবং তাবাসসুম ফারহানা।
তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে রাজধানীর পূর্বাচলের ৩৬ জুলাই এক্সপ্রেসওয়ে (৩০০ ফিট) এলাকায় গণসংবর্ধনার আয়োজন করেছে বিএনপি। কুড়িল মোড়সংলগ্ন সড়কের উত্তর পাশে দক্ষিণমুখী করে বাঁশ ও কাঠ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে ৪৮ ফুট বাই ৩৬ ফুটের বিশাল মঞ্চ।
শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামার পর ভিআইপি লাউঞ্জে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানাবেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ স্থায়ী কমিটির সদস্যরা। এরপর তিনি জুলাই এক্সপ্রেসওয়ের সংবর্ধনাস্থলে যাবেন। সেখানে অপেক্ষায় থাকা নেতাকর্মীদের ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে দেশবাসীর উদ্দেশে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেবেন তিনি। এরপর বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে দেখতে এভারকেয়ার হাসপাতালে যাবেন। সেখান থেকে বিমানবন্দর সড়ক হয়ে কাকলীর মোড় হয়ে গুলশান-২ নম্বরে বাসভবনে চলে আসবেন।
২০০৭ সালের জানুয়ারিতে সেনা-সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় আসার পর দুর্নীতির অভিযোগের মামলায় আটক হয়ে প্রায় ১৮ মাস কারাবন্দী ছিলেন তারেক রহমান। মুক্তি পাওয়ার পর ২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর চিকিৎসার জন্য সপরিবারে লন্ডনে চলে যান তারেক রহমান। সে বছরের ডিসেম্বরের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে দেশে আসার পথ অনেকটা বন্ধ হয়ে যায় তার। একের পর এক মামলায় জর্জরিত তারেক রহমানের দেশে ফেরা হয়নি আর। অবশেষে দীর্ঘ সেই অপেক্ষার অবসান ঘটল। প্রিয় মাতৃভূমিতে ফিরলেন তারেক রহমান।